এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > কিছুদিন ধরেই কলেজের নজর-ক্যামেরার হার্ড ডিক্স খারাপ থাকায় রেকর্ডিং বন্ধ – বিদ্যাসাগর মূর্তি ভাঙা নিয়ে দাবি কলেজের

কিছুদিন ধরেই কলেজের নজর-ক্যামেরার হার্ড ডিক্স খারাপ থাকায় রেকর্ডিং বন্ধ – বিদ্যাসাগর মূর্তি ভাঙা নিয়ে দাবি কলেজের

গত মঙ্গলবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি রোড শোতে টিএমসিপি নেতা মণিশঙ্কর মণ্ডলের নেতৃত্বেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা অমিত শাহকে কালো পতাকা দেখান। তাতে বিজেপি সমর্থকেরাও মারমুখী হয়ে ওঠেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বনাম বিজেপির সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কলকাতা। আর এই গোটা ঘটনায় আশ্চর্যজনকভাবে ভেঙে যায় বিদ্যাসাগর কলেজের ভেতরে থাকা ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রাচীন মূর্তি। শাসক দল তৃণমূলের দাবি, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙ্গার পেছনে বিজেপিই জড়িত। অন্যদিকে গোটা ঘটনাটি অস্বীকার করে তৃণমূল নিজেরাই বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে বিজেপির নামে দোষ দিচ্ছে বলে দাবি জানিয়েছে গেরুয়া শিবির।

কিন্তু সত্য ঘটনা কি? কারা এই বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার পেছনে জড়িত? এখন তা নিয়েই উঠতে শুরু করেছে নানা প্রশ্ন। অনেকে বলছেন, বিদ্যাসাগর কলেজের ভিতরে থাকা সিসিটিভি দেখলেই সমস্ত কিছু প্রমাণ হয়ে যাবে। এমনকি বিরোধী দল বিজেপির পক্ষ থেকেও সেই সিসিটিভি খতিয়ে দেখার দাবি জানানো হয়েছে।

তবে আশ্চর্যজনকভাবে কিছুদিন ধরে সেই কলেজের সিসি ক্যামেরা অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে বলে জানা গেছে। এদিন এই গোটা বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন কলেজের শিক্ষকেরা। তাঁরা জানান, কিছু দিন ধরেই কলেজের নজর- ক্যামেরার হার্ড ডিস্ক খারাপ থাকায় রেকর্ডিং বন্ধ। ফলে মঙ্গলবারের ওই তাণ্ডবের ঘটনা সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েনি। ফলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে একে অপরকে এই ঘটনায় দায়ী করা হলেও কলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েই এবার প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিতে শুরু করেছে।সূত্রের খবর, এদিন বিকেলে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকেরা কলেজে এসে যেখানে যেখানে ভাঙচুর হয়েছিল সেই ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন এবং নমুনা সংগ্রহ করেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম কুন্ডু বলেন, “বিজেপির যে মিছিল থেকে আমাদের কলেজে হামলা হল তাতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ ছিলেন। ইতিমধ্যেই এক পড়ুয়া এই ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফেও অভিযোগ দায়ের করেছি।” তবে ভরসন্ধ্যায় এইভাবে কলেজের দরজা ভেঙে ঢুকে ভাঙচুর চালানোর ঘটনায় কলেজের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন অনেক শিক্ষক। সত্যিই তো তাই! কেন এভাবে কলেজে হামলা চালানো হল, আর যদিও বা কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে তা কারা করল তা নজরে আনতে কেন কোনরূপ ব্যবস্থা কলেজের ভেতর থাকবে না!

যে অফিস-ঘরে তাণ্ডব চালানো হয়েছিল ঘটনার সময়ে সেখানেই ছিলেন কলেজের কেয়ারটেকার শান্তিরঞ্জন মোহান্তি। তিনি বলেন, ‘‘সিসিটিভি ঠিক থাকলে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করতে সুবিধা হত। অফিস ঘরের বাইরে দাঁড়িয়েছিলাম। একটা আধলা ইট আমার গায়ে এসে পড়ে। এর পরেই কয়েকটা লোক দরজা ভেঙে লাঠি নিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ে। কাচ ভাঙতে থাকে, চেয়ারটেবিল উল্টে ফেলে। তার পরে বিদ্যাসাগরের মূর্তি তুলে বাইরে নিয়ে যায়।’’  শান্তিবাবু জানান, তাঁরা ভয়ে ওই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসে পাশের ঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ফলে দুষ্কৃতীদের ভাল করে দেখা সম্ভব হয়নি।

এদিকে এই নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। তাদের দাবি যে নিজেরাই মূর্তি ভেঙে বিজেপিকে দায়ী করছে আর তাই সিসিটিভি খারাপ বলে বাহানা করছে। যদি সিসিটিভি খারাপ থাকে তা দুদিন পর বলা হচ্ছে কেন? নিজেদের দোষ ঢাকতে খারাপ হলো না তো? তারও তদন্ত প্রয়োজন। তাদের আরো দাবি যদি এটা সত্যিই মেনে নেওয়া হয় যে সিসিটিভি খারাপ তাহলে সেটা জানবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। বিজেপির জানার কথা নয়। তাহলে এটাও প্রমাণিত যে এটা পূর্বপরিকল্পিত। কেননা বিদ্যাসাগর কলেজের সামনে  টিএমসিপি নেতা মণিশঙ্কর মণ্ডলের নেতৃত্বেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা অমিত শাহকে কালো পতাকা দেখান। তাতে বিজেপি সমর্থকেরাও মারমুখী হয়ে ওঠেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বনাম বিজেপির সংঘর্ষে জড়ায়।

ফলে তৃণমূল জানতো যে বিজেপিকে যে কনভাবে অশান্তিতে টেনে আনলেই এই মূর্তি ভাঙার দায় তাদের ঘরে চাপানো যাবে আর তাই আগে থেকে মূর্তি ভেঙে রেখে বিজেপির ঘরে দোষ চাপাচ্ছে। সব কিছু লাইভ সংবাদমাধ্যম দেখালো শুধুমাত্র মূর্তিভাঙ্গার সময়ই সেখানে সংবাদমাধ্যম কিছু দেখতে পারলো না কেন? কারণ তৃণমূল আগে থেকেই সেটা ভেঙে রেখে দিয়েছিলো। আর আমিত শাহের কনভয় সেখানে যেতেই নাটক শুরু করে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী। সবটাই পূর্ব পরিকল্পিত।

যদিও বিজেপির দাবি বাইরে থেকে অনেকে ভিডিও তুলেছে আর সেখানে তো সবটাই দেখা যাচ্ছে যে বিজেপিই এটা করেছে।  সেই নিয়ে এখন বিজেপি চুপ কেন?আর ওদের নেতাই তো কর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছে যে অশান্তি করতে হবে সেই ভিডিও সবাই দেখছে। শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চাইছে বিজেপি। প্রতিবাদ জানানোটা গণতান্ত্রিক অধিকার। আমরা তো শুধু প্রতিবাদ জানিয়েছি ব্জিকে মারধর তো করিনি। কেন এলো অশান্তি করতে। চুপচাপ চলে যেতে পারতো। আমাদের দিদিকে যা খুশি বলে ওরা। আমরা কাকে মারতে যাই। তবে এই অপমানের বদলা হবে। ২৩ তারিখের পর।

সব মিলিয়ে গোটা ঘটনায় একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙ্গুল তুললেও এখন সেই বিদ্যাসাগর কলেজের ভেতরে সিসিটিভির অকেজো হয়ে যাওয়া নিয়ে কলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করেই উঠতে শুরু করেছে নানা প্রশ্ন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!