বৈরিতা ভুলে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের জোট নিয়ে সরকারিভাবে আলোচনা শুরু জাতীয় বিশেষ খবর January 23, 2018 কিছুদিন আগেও জাতীয় রাজনীতিতে গুঞ্জন ছিল, বিজেপি বিরোধিতা তীব্রতর করতে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস কাছাকাছি আসছে। কিন্তু তারপরেই ছন্দপতন, গত বিধানসভা অধিবেশনে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছিলেন কংগ্রেসের হাত ধরতে তিনি অনিচ্ছুক। এমনকি লোকসভা বা রাজ্যসভাতেও কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব রাখার নির্দেশ গিয়েছিল দলীয় সাংসদদের কাছে। কিন্তু এবার ত্রিপুরাতে উলটপুরাণ হতে চলেছে। সেখানে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের জোট সম্ভাবনা নিয়ে সরকারিভাবে আলোচনা শুরু হল। এই ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে ত্রিপুরার দায়িত্ত্বপ্রাপ্ত সব্যসাচী দত্ত সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ত্রিপুরার কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা গোপাল রায় এ ব্যাপারে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন, দেখা যাক কী হয়। কিন্তু ত্রিপুরাতেও কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের জোট হওয়া সোজা নয় মেনে নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট মহল। কেননা এর আগের ২০১৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বড়দোয়ালি টাউন আসন থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের আশীষ কুমার সাহা একমাত্র বিধায়ক হিসাবে জয়ী হন, অন্যদিকে কংগ্রেসের ৮ বিধায়ক জয়ী হন। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে মুকুল রায় ত্রিপুরার দায়িত্ত্ব নিতেই সেই ৮ বিধায়কের ৬ জনই যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে এবং তার ভিত্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদার দাবি জানায়, যদিও ত্রিপুরা বিধানসভার নিয়মানুসারে বিরোধী দল হতে গেলে অন্তত ১০ জন বিধায়ক লাগবে, তাই তৃণমূল কংগ্রেসের সেই দাবি মান্যতা পায় না। কিন্তু মুকুল রায়ের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের দূরত্ত্ব তৈরি হতেই দলবদল করা সেই ৬ বিধায়ক যোগ দেন বিজেপিতে, দুর্মুখেরা দাবি করে থাকে বিজেপিতে যোগদানে প্রাক্কালে তা মুকুল রায়ের ‘উপহার’ ছিল অমিত শাহদের। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে যেমন অধীর চৌধুরী, ত্রিপুরাতেও তেমনই ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি বীরজিত্ সিংহ কিছুতেই রাজি নন তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতে। এমনকি এই নিয়ে নিজেদের অবস্থান তিনি ও তাঁর অনুগামীরা এআইসিসির পর্যবেক্ষক ও সহপর্যবেক্ষকদের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। সূত্রের খবর, দলত্যাগী কংগ্রেস বিধায়করা বিজেপিতে যাওয়ায় ত্রিপুরাতে সে অর্থে বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনো সংগঠনই নেই, তাই তারাই বেশি যান্ত্রিক এই জোট প্রক্রিয়ায়। অন্যদিকে ত্রিপুরায় বিজেপি ও বাম বিরোধী তৃতীয় ফ্রন্ট গড়তে তত্পর কংগ্রেস, এই নিয়ে ইতিমধ্যেই বিজয় রাঙ্খলের আইএনপিটি এবং আইপিএফটির বিক্ষুব্ধ একটি অংশ সহ পাঁচটি সংগঠনের সঙ্গে তারা আলোচনায় বসে পড়েছে। এই তৃতীয় ফ্রন্টকে আরো শক্তিশালী করতে ও বিরোধী ভোটকে সঙ্ঘবদ্ধ করতে তৃণমূল কংগ্রেসকেও সকল বৈরিতা ভুলে কংগ্রেস সেই জোটে শামিল করে কিনা সেদিকেই এখন তাকিয়ে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। আপনার মতামত জানান -