দাড়িভিটের দুই নিহত ছাত্রের পরিবারকে এবার ন্যায়বিচার দেওয়ানোর আশ্বাস দেবশ্রী চৌধুরীর রাজ্য June 10, 2019 বিগত বাম সরকারের আমলে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের প্রবল লড়াই ক্ষমতার অলিন্দে পৌঁছে দিয়েছিল রাজ্যের বর্তমান শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু শাসকের পরিবর্তন হলেও শাসন ব্যবস্থার যে কোনো পরিবর্তন হয়নি তা রাজ্যের বিভিন্ন ঘটনায় প্রমাণিত হতে শুরু করেছে। কিছুদিন আগেই উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিট গ্রামের দুই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার দিকে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল। প্রথম থেকেই এই গোটা ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার জন্য সিবিআইয়ের দাবি তুলেছিলেন সেই নিহত ছাত্র তাপস বর্মন এবং রাজেশ সরকারের পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু সেই কথায় কর্ণপাত না করে উল্টো পথে হেটে রাজ্যের শাসক দল এই গোটা ঘটনায় রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির ওপরই ভরসা করে। ঠিক যেমনটা করতেন বিগত বাম সরকারের আমলের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন ইস্যুতে সিবিআইয়ের দাবি চাইলেও তৎকালীন শাসক দল বামফ্রন্ট সিআইডির পক্ষেই সওয়াল করতেন। কিন্তু ক্ষমতার পরিবর্তন হলেই যে রাজ্যের শাসক দল সিআইডির পক্ষেই সমান করে, তা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই দাড়িভিট কাণ্ডের পর সিআইডি তদন্তের উপর আস্থা রাখাকে কেন্দ্র করেই। তবে লোকসভা নির্বাচনের পর এই দাড়িভিট কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত হওয়ার ব্যাপারে আশার আলো দেখতে শুরু করল সেই মৃত ছাত্র রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মনের পরিবারেরা। কারণ লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে শুরু করার আগে এই রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী সেই দাড়িভিট থেকেই তার নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। আর সেখানেই তিনি তার প্রচারপর্বে কথা দিয়েছিলেন যে, দাড়িভিট কাণ্ডে সুষ্ঠু বিচার পাবেন সাধারণ মানুষ। আর জয়লাভ করার পর সেই দেওয়া কথাকেই এবার বাস্তবে প্রতিষ্ঠা করার কথা শোনা গেল দেবশ্রী দেবীর গলায়। প্রসঙ্গত, ভোটে জয়লাভ করার পর শুক্রবারই প্রথম তিনি উত্তর দিনাজপুর জেলায় আসলে শনিবার সেই ইসলামপুরের দাড়িভিটে গিয়ে মৃত দুই ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। আর সেখানেই রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রের নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী বলেন, “নিহত দুই পরিবারের সঙ্গে আমরা সব সময় আছি। ওনারাই আমাকে লড়াই করার অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। ছেলেদের মৃত্যুর ন্যায় বিচার চেয়ে যেভাবে ওনারা লড়াই করে যাচ্ছে, তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকছে। আমি প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে দাড়িভিট কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের বিষয়ে কথা বলেছি। জেলাশাসকের সঙ্গেও কথা হয়েছে। যতক্ষণ এই দুই ছাত্রের মৃত্যুর বিষয়টির তদন্ত না হবে, ততক্ষণ লড়াই শেষ হবে না।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দীর্ঘদিন রাজনীতি করে আসা অভিজ্ঞ দেবশ্রী চৌধুরী বেশ ভালোমতোই বুঝেছেন যে, বিগত বাম আমলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রামের লড়াই যেমন তাকে মুখ্যমন্ত্রী করেছে, ঠিক তেমনই এই দাড়িভিট বিজেপিকে অনেকটা রাজ্যের বর্তমান শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ও সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে জয় এনে দিয়েছে। আর তাই এখন সেই সিবিআই তদন্তের দাবি করেই দাড়িভিট কান্ডের নিহত দুই ছাত্রের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। আর মন্ত্রীর কাছ থেকে এহেন কথা শুনে এখন কিছুটা হলেও মুখে হাসি ফুটেছে সেই নিহত ছাত্রের পরিবারদের। এদিকে শুধু দাড়িভিট কাণ্ডে সিবিআই তদন্তই নয়, সাংসদ হিসেবে উত্তর দিনাজপুর জেলার ব্যাপক উন্নয়ন করারও এদিন আশ্বাস দেন তিনি। পাশাপাশি রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজয় মিছিলের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা প্রসঙ্গেও এদিন মুখ খোলেন রায়গঞ্জের এই বিজেপি সাংসদ। তিনি বলেন, “কর্মীরা যেভাবে পারবেন সেভাবেই তারা তাদের উৎসাহ প্রকাশ করবেন। এটাকে কেউ কোনো নির্দেশ দিয়ে আটকাতে পারে না। তবে এটা ঠিক যেহেতু আমি কেন্দ্রীয় সরকারের একজন মন্ত্রী, তাই আমি মিছিলে থাকব না।” কিন্তু বালুরঘাটের মেয়ে হিসেবে কেন্দ্রের মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়ে রায়গঞ্জের সাংসদ হলেও বালুরঘাটবাসী যে তার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে! এদিন এই প্রসঙ্গে দেবশ্রী চৌধুরী বলেন, “বালুরঘাটে এখনই যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। কারণ আবার দিল্লি যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী কাজ বোঝেন, সংবর্ধনা বোঝেন না। তাই আগে কাজে জোর দিতে হবে।” এদিকে রাজ্য যেভাবে চলছে, তাতে আরও দু’বছর এই সরকার চলবে কিনা সেই ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেও জল্পনা উসকে দেন দেবশ্রী চৌধুরী। আপনার মতামত জানান -