এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ৭ মৃত্যু ও ৪০০ দোরগোড়ায় আক্রান্ত! ভারতে করোনার থাবা ক্রমশ প্রকট হওয়ার ইঙ্গিত?

৭ মৃত্যু ও ৪০০ দোরগোড়ায় আক্রান্ত! ভারতে করোনার থাবা ক্রমশ প্রকট হওয়ার ইঙ্গিত?


করোনা ভাইরাসের থাবায় দেশজুড়ে এখনও পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যু খবর পাওয়া গিয়েছে। এরমধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪০০ জন বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে, করোনার থাবা থেকে বাঁচতে রাজ্যে রাজ্যে শুরু হয়েছে লকডাউন। সজাগ রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে শুরু করে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই এ রাজ্যেও শুরু হয়েছে লকডাউন। তবুও এই মারণ ভাইরাস কি মহামারীর আকার নেবে? ইতিমধ্যেই প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

কেননা, শনিবার পর্যন্ত ভারতে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যাটা ছিল ৩১৫ জন। শুধু রবিবারেই আরও ৮১ জন নতুন রোগীর খবর আসার পরে একলাফে সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৯৬! ভারতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর এই সংখ্যাটা মোটেই স্বস্তিদায়ক নয় আর। তবে এই ভাইরাসকে যে আর কোনও ভাবেই ছড়াতে দেওয়া যাবে না, তা সমস্ত প্রশাসনিক মহলের তত্‍পরতা দেখলেই বোঝা যায়।

রাজ্যে রাজ্যে ইতিমধ্যেই লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে চলাফেরাও নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমস্ত রকমের যাত্রীবাহী রেল পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে রেলের তরফে। উল্লেখ্য, রবিবারই সারা দেশজুড়ে ১৪ ঘণ্টার ‘জনতা কার্ফু’র ডাক দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কার্ফু পালিতও হয় দিনভর।

এরাজ্যেও প্রধানমন্ত্রীর ডাকা জনতা কারফিউতে সাড়া দেন রাজ্যবাসী। প্রধানমন্ত্রীর কথা মতো বিকেল পাঁচটায় দেশবাসী ঘরের বাইরে বেরিয়ে এসে জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিত কর্মীদের উদ্দেশে হাততালি দেন, ঘণ্টা বাজান। কিন্তু, সাধারণ মানুষ আরও বেশি করে সচেতন না হলে পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞই। কেননা এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে সাত জনের।

তবে, একই সঙ্গে কিছুটা স্বস্তির খবর – ইতিমধ্যেই পুরোপুরি সুস্থও হয়ে উঠেছেন ২২ জন। এদিকে, রবিবার বিহারে মারা গেছেন ৩৮ বছরের এক ব্যক্তি। করোনা ভাইরাসে মৃতদের মধ্যে তাঁর বয়সই সবচেয়ে কম বলে জানা গেছে। সূত্রের খবর, তিনি কাতার থেকে ফিরেছিলেন। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। কিন্তু পরীক্ষা করে তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অনুমান করা হচ্ছে, ক্যানসারের কারণে তাঁর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় সংক্রামিত হয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি মুম্বইয়েও এক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে রবিবার। ৬৩ বছরের ওই ব্যক্তি শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যার কারণে মারা গিয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত, এখনও পর্যন্ত দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত মহারাষ্ট্রে, সেখানে সংখ্যাটা ৭৪।

তার পরেই রয়েছে কেরল। কেরলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ জন। এর মধ্যে অবশ্য ৭ জন বিদেশি নাগরিক। এদিকে দিল্লিতেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নেহাত কম নয়, দিল্লিতে করোনা আক্রান্ত প্রায় ২৭ জন, এরমধ্যে একজন বিদেশি নাগরিক রয়েছেন বলে জানা গেছে। দিল্লিতেও জমায়েত বা ভিড় এড়াতে সোমবার কয়েক ঘণ্টা ছাড়া বাকি সময়ের জন্য বন্ধ থাকবে মেট্রো পরিষেবা। সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে দিল্লির অন্যতম ব্যস্ত এলাকা কনট প্লেস।

পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৪ জন, তারমধ্যে একজন বিদেশি রয়েছেন। তেলেঙ্গানায় করোনা আক্রান্ত ২১ জন, এরমধ্যে ১১ জন বিদেশি নাগরিক। তেলেঙ্গানাতেই বিদেশি আক্রান্তের সংখ্যাটা সবচেয়ে বেশি। রাজস্থান ও হরিয়ানায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা মোট ১৭ জন। কর্নাটকে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫। পঞ্জাব এবং লাদাখে ১৩ জন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর মিলেছে।

করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখনো পর্যন্ত কম রয়েছে কাশ্মীর ও গুজরাতে। গুজরাতে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৭ জন এবং কাশ্মীরে ৪ জন। গুজরাতের আমেদাবাদ, সুরাত, রাজকোট এবং ভদোদরা বুধবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানান হয়েছে। অন্যদিকে, তামিলনাড়ু, অন্ধপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডে তিনজন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। ওড়িশায় দুজন, পদুচেরি, ছত্তিশগড়, এবং চণ্ডীগড়ে একজন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে। মৃতের সংখ্যা পেরিয়েছে ১৩ হাজার। এই পরিস্থিতিতে সমস্ত মানুষকেই সামাজিক ভাবে বিচ্ছিন্ন থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ সামাজিক ভাবে ছড়িয়ে পড়াতে শুরু করার মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে করোনাভাইরাস। ইতিমধ্যেই এমন কয়েক জন আক্রান্ত হয়েছেন, যাঁরা সরাসরি বিদেশ থেকে ফেরেননি, অন্যের মাধ্যমে সংক্রামিত হন। অর্থাত্‍ অনুমান করা হচ্ছে, কমিউনিটি ট্রান্সমিশন প্রায় শুরু হতে চলেছে এই ভাইরাসের।

দেশের প্রতিটি রাজ্যই সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জিম, মিউজিয়াম, হোটেল, সামাজিক জমায়েতের বিভিন্ন কেন্দ্র, সুইমিং পুল, সিনেমা হল বন্ধ রাখা হয়েছে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। বাস পরিষেবাও বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছে একাধিক রাজ্য। ৩১ মার্চ পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছে পঞ্জাব এবং রাজস্থান সরকার। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২৭ মার্চ পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছে। সমস্ত গণপরিবহন ব্যবস্থাও বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে শপিং মল ও দোকানপাট। সব মিলিয়ে ভারতে করোনার থাবা ক্রমশ প্রকট হওয়ার ইঙ্গিত – তবে সহজে হাল ছাড়তে রাজি নয় কেন্দ্র-রাজ্য সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!