ধ্বংসের মুখে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা? কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দিলো মমতা সরকার?

 

 

 

 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এমনিতেই তো শিক্ষা দপ্তর নিয়ে অভিযোগের অভাব নেই। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে অনিয়ম, পঠন-পাঠন নিয়ে বিভিন্ন সময় এই রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে সবথেকে বেশি প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। আর তার মধ্যেই সম্প্রতি কসবার ল কলেজে যে ঘটনা ঘটে গিয়েছে, যেভাবে রক্ষক ভক্ষকের আকার ধারণ করেছে, তার ফলে শিক্ষাঙ্গনের ভেতরেই নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। গোটা রাজ্যে কসবার গণধর্ষণ কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে পথে নেমেছে বিরোধীরা। অত্যন্ত চাপে রয়েছে রাজ্যের শাসক দল। আর তার মধ্যেই সেই কসবার ল কলেজের পরিচালক সমিতির পক্ষ থেকে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো, তার ফলে প্রশ্ন উঠছে, এবার কি কফিনের শেষ পেরেকটা পুঁতে দিলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার? কিন্তু কেন এমন কথা বলা হচ্ছে? কি ঘটনা ঘটেছে?

বলা বাহুল্য, গত ২৫ মে সন্ধ্যায় কসবার ল কলেজের মধ্যে এক ছাত্রীর ওপরে যেভাবে নির্যাতন করা হয়, যেভাবে তাকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা রাজ্য। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের প্রাক্তন নেতা বলে পরিচিত মনোজিৎ মিশ্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে বিরোধীরা অবশ্য ছেড়ে কথা বলছে না। আরজিকরের পর ফের শিক্ষাঙ্গনের মধ্যে এই ধরনের ঘটনা ব্যাপকভাবে চাপে ফেলে দিয়েছে শাসক শিবিরকে। আর সব থেকে বড় কথা, এই ঘটনায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একজন প্রাক্তন নেতা জড়িয়ে থাকার কারণে আরও চাপে পড়ে গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। আর এই পরিস্থিতিতে এবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে আপাতত পঠন পাঠন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েও পরিচালন সমিতি। আর তাদের এই সিদ্ধান্ত ঘিরেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে।

জানা গিয়েছে, কলেজের গভর্নিং বডির পক্ষ থেকে কলেজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে একটি তথ্য দেওয়া হয়েছে। যেখানে জানানো হয়েছে যে, গোটা ঘটনার জন্য কলেজে প্রয়োজনীয় তদন্তমূলক পরীক্ষা হতে পারে। সেই কারণেই ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আপাতত সেখানে পঠন পাঠন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এখানেই বিরোধীদের প্রশ্ন যে, এমনিতেই তো রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনগুলিতে এখন তৃণমূল নেতাদের দাদাগিরি চলে। কসবার এই ঘটনার পর আরও তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এতদিন এখানে পঠন পাঠন বলতে কিছুই হত না্ শুধুমাত্র নোংরামি এবং গুন্ডাগিরির আতুড়ঘরে পরিণত হয়েছিল এই সমস্ত কলেজ, তা দিনের আলোর মত পরিষ্কার। আর তার মধ্যে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষা না দিয়ে একটি ঘটনার পর যেভাবে সেই কলেজেই পঠন-পাঠন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলো পরিচালন কমিটি, তাতে তাদের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিরোধীদের মধ্যে।

বিরোধীদের বক্তব্য, এই পরিচালন সমিতির কারণেই তো মনোজিৎ মিশ্রের মত চুনোপুটিদের এত দাদাগিরি বেড়েছে। সে কলেজে অস্থায়ী চাকরি করার পাশাপাশি ছাত্রীদের ওপর ক্রমাগত নির্যাতন চালাত। কিন্তু তারপরেও গভর্নিং বডি নীরবতা পালন করেছে। কারণ সবাই তৃণমূলের দলদাসের মত কাজ করেছেন। আজকে এই ঘটনা ঘটতই না, যদি কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রথম থেকেই কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করত। সবকিছু জানার পরেও মনোজিৎ মিশ্রের মত ব্যক্তিকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। আর আজকে একটি ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর কলেজের পঠন-পাঠন বন্ধ রাখার যে সিদ্ধান্ত কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং গভর্নিং বডি নিচ্ছে, তাতে যারা শুধুমাত্র পড়াশোনা করতে এই কলেজে ভর্তি হয়েছে, তাদের ভবিষ্যতের কি হবে! তাদের যে দিনগুলো চলে যাচ্ছে, সেই দিনগুলো কি ফিরিয়ে দিতে পারবে কলেজ কর্তৃপক্ষ? এক্ষেত্রে গভর্নিং বডির যে সিদ্ধান্ত, তা কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেওয়ার সমতুল্য বলেই দাবি করছে বিরোধীরা।