প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – ডোমজুড় কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত শ্বেতা খানের সঙ্গে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতার ঘনিষ্ঠতার ছবি ও সম্পর্ক ঘিরে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। শ্বেতার সঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং হাওড়ার প্রভাবশালী নেতা অরূপ রায়ের একাধিক ছবি ভাইরাল হয়েছে। তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের মিছিলে তাঁকে সামনের সারিতে হাঁটতেও দেখা গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে অরূপ রায় বলেছেন, “কারও সঙ্গে ছবি থাকতেই পারে, তাতে কিছু যায় আসে না। অভিযোগ উঠলে দল ব্যবস্থা নেবে।” রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছেন, “এক সময় ডোমজুড়ের বিধায়ক ছিলাম, অনেক অনুষ্ঠানে গিয়েছি। কে কখন ছবি তুলেছে বলতে পারব না।”
শ্বেতা খানের বিলাসবহুল জীবনযাত্রা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে। ক্লাবিং, নাইট আউট, দামি গাড়ি—সব মিলিয়ে এক চাকচিক্যময় লাইফস্টাইল, যা সমাজের চোখে ধাঁধার মতো। অভিযোগ, এই বিলাসিতা মূলত ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের আড়ালে চালানো এক সফট পর্ন চক্রের মাধ্যমেই গড়ে ওঠে। ডোমজুড়ের মা-ছেলের সেই চক্রের সূত্রেই প্রকাশ্যে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তে উঠে এসেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেকে তৃণমূল কর্মী দাবি করা শ্বেতার প্রোফাইলজুড়ে রয়েছে তৃণমূলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে ছবি ও ভিডিও।
এই প্রেক্ষাপটে বিরোধী বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। বিজেপি রাজ্য সাধারণ সম্পাদক উমেশ রাই বলেন, “এই ধরনের নারীদের পিছনে যেসব নেতাদের আশীর্বাদ ও সংরক্ষণ রয়েছে, তাদের জবাব দিতে হবে। নারী কল্যাণের নামে ফুলটুসি সংস্কৃতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত।” তিনি আরও বলেন, “শাসকদলের নেতৃত্বে নারী সমাজকে ধ্বংস করা হচ্ছে।” যদিও এই অভিযোগ তৃণমূল কড়াভাবে অস্বীকার করেছে। অরূপ রায় বলেন, “হাজার হাজার লোকের সঙ্গে ছবি তোলা যায়। কেউ নিজেদের স্বার্থে সেই ছবি ব্যবহার করলে, দল তার দায় নেয় না। যদি কোনও নেতা এদের আশ্রয় দিয়ে থাকে, তাদের বিরুদ্ধে দল কঠোর ব্যবস্থা নেবে।”
সব মিলিয়ে ডোমজুড়কাণ্ড এখন রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের অন্যতম আলোচিত বিষয়। তৃণমূলের সঙ্গে অভিযুক্তের যোগসূত্র প্রশ্ন তুলে দিয়েছে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং দলীয় শৃঙ্খলা নিয়ে। যেখানে একদিকে শ্বেতার আর্থিক ও সামাজিক উত্থান ঘিরে সন্দেহ দানা বাঁধছে, অন্যদিকে তার সঙ্গে শাসকদলের সম্পর্ক সামনে আসায় রাজনৈতিক চাপ বাড়ছে। বিজেপি এই ইস্যুতে তৃণমূলকে কোণঠাসা করতে মরিয়া, আর তৃণমূলও নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করছে। তবে তদন্তের অগ্রগতি এবং দলের অভ্যন্তরীণ পদক্ষেপই এখন নির্ধারণ করবে—এই বিতর্ক কোন দিকে মোড় নেবে।