ঘোষনাই হল না পূর্নাঙ্গ কমিটি, দলীয় অন্তর্কোন্দল দায়ী! উঠছে প্রশ্ন! কলকাতা রাজ্য February 11, 2020 লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ভালো ফল করলেও, তাদের প্রধান টার্গেট বাংলার ক্ষমতা দখল করা। সেদিক থেকে 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিকে যে নিজেদের সংগঠনকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে, তা ভালোই জানে বিজেপি নেতৃত্বরা। ইতিমধ্যেই এই সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য মনোযোগী হয়েছে তারা। কিন্তু পদ পাওয়ার জন্য যেভাবে বিজেপির নেতা, কর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় দ্বন্দ্ব লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তাতে বিজেপির ভেতরকার শৃঙ্খলা যদি না থাকে, তাহলে তারা কিভাবে ক্ষমতা দখল করবে! তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তবে বরাবরই অবশ্য বিজেপি তাদের দলে কোনো গোষ্ঠীকোন্দল নেই বলে দাবি করে এসেছে। কিন্তু প্রকাশ্যে মুখে যে কথাই বলুন না কেন বিজেপি নেতারা, বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার চার সম্পাদকের নাম ঘোষণাকে বাদ রেখেই কেন কমিটি গঠন করা হল, এখন তা নিয়েই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। এছাড়াও নতুন জেলায় 30 শতাংশের বেশি মানুষ তপশিলি জাতির হলেও, তাদের কোনো প্রতিনিধিদের কেন কমিটিতে জায়গা দেওয়া হল না, তা নিয়েও বিজেপির একাংশ দাবি তুলতে শুরু করেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা বিভক্ত হওয়ার সময় এখানে বিজেপির মোট 26 টি মন্ডল ছিল। কিন্তু সেখানে বাঁকুড়া এবং ইন্দপুর দুটি নগর মন্ডলকে ভাগ করায় 28 টি মন্ডল হয়েছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - ইতিমধ্যেই প্রতিটি মন্ডলের সভাপতির নাম ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মন্ডল সভাপতির নাম ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথেই কিছুদিন আগে বাঁকুড়া, ছাতনা, সিমলাপাল সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বিজেপি কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছিলেন। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যে বাঁকুড়ার সাংসদের অফিসের সামনে ধর্নায় বসতে দেখা গিয়েছিল বিজেপির নিচুতলার নেতাকর্মীদের। যার ফলস্বরুপ ওই সমস্ত বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের শান্ত করতে পরিস্থিতি বিবেচনা করার আশ্বাস দেয় বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু এবার জেলা কোর কমিটি গঠিত হওয়ার পর, সেখানেও বিজেপির পুরনো নেতাকর্মীদের বঞ্চিত করা হয়েছে বলে দাবি করতে শুরু করল বিজেপি একাংশ। জানা গেছে, নিয়মমত বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলায় 119 জনের জেলা কমিটি হওয়ার কথা। যেখানে 28 জন মন্ডল সভাপতি এবং কোর কমিটির 21 জন বাদে বাকিরা জেলা কমিটির সাধারণ সদস্য হিসেবে থাকবেন। তবে সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরেই 21 জনের জেলা কমিটিতে কে কে থাকবেন, তা নিয়ে দলের অন্দরে তৈরি হয়েছিল গুঞ্জন। আর এবার সেই কমিটি ঘোষণা করলেও, সেখানে বেশ কিছু নেতাকে রাখা হয়নি বলে দাবি করতে শুরু করল বিজেপির একাংশ। শুধু তাই নয়, তপশিলি সম্প্রদায়ের এত মানুষ থাকলেও, এই কমিটিতে সেখানকার একটি প্রতিনিধিকেও রাখা হয়নি বলে অভিযোগ বিজেপি নেতা কর্মীদের। এদিন এই প্রসঙ্গে ছাতনার বিজেপি নেতা জীবন চক্রবর্তী বলেন, “এই জেলার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ তপশিলি জাতির। অথচ জেলা কমিটিতে তাদের কোনো প্রতিনিধি নেই। তাই বিষয়টি জেলা এবং রাজ্য নেতৃত্বকে ভাবার জন্য অনুরোধ করছি। অসম্পূর্ণ কমিটির তালিকা প্রকাশ না করে, আরও কিছুটা সময় নিয়ে সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করলেই তা দলের জন্য ভাল হত।” একাংশ বলছেন, সত্যিই তো তাই। কর্মীদের ক্ষোভকে মান্যতা দিয়ে একেবারে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করলেই তো ভালো হত। সেক্ষেত্রে এত তাড়াহুড়োর কি দরকার ছিল? এতে তো বরঞ্চ কর্মীদের বিক্ষোভে দলের বিড়ম্বনা আরও বৃদ্ধি পেল! এদিন এই প্রসঙ্গে ক্ষোভ-বিক্ষোভের কথা অস্বীকার করে বাঁকুড়া জেলা বিজেপি সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র বলেন, “জেলা কমিটি নিয়ে দলে কোনো ক্ষোভ-বিক্ষোভ নেই। বিগত জেলা কমিটির কাউকে দেওয়া হয়নি। কেউ মন্ডল, কেউ শাখা সংগঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন। সর্বসম্মতভাবে 17 জনের নাম প্রকাশ হয়েছে। বাকি চারজনের নাম শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিবেকানন্দবাবু যতই দলের অন্তর্কোন্দলের কথা অস্বীকার করুন না কেন, যেভাবে এই কমিটি প্রকাশের পর বিজেপি নেতৃত্বরা অসন্তোষ প্রকাশ করতে শুরু করেছেন, তাতে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। এখন নেতাকর্মীদের ক্ষোভকে সামাল দিতে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব কি পদক্ষেপ নেয় এবং তা কতটা কাজে দেয়! সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -