গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে, তৃণমূলের সভাপতির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন দলের বিধায়ক কলকাতা রাজ্য January 9, 2020 লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের ভরাডুবির পেছনে প্রথম দায়ী, তাদের গোষ্ঠী কোন্দল। নেতায়-নেতায় গন্ডগোলের কারণেই অনেক জায়গায় দলের প্রার্থীকে হেরে যেতে হয়েছে, তা বুঝতে বাকি নেই তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের। আর তাইতো ফলাফল প্রকাশের পরই এই ব্যাপারে সকল নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে পথ চলার বার্তা দেন তাদের তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তারপরেও তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল কমছে না কিছুতেই। এবার উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকে ফের প্রকাশ্যে এল ঘাসফুল শিবিরের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। সূত্রের খবর, এদিন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের সভাপতি কৃষাণ কল্যাণীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে সরব হন ময়নাগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ময়নাগুড়িতে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি কিষাণ কুমার কল্যাণী একটি জনসংযোগ সভা করেন। আর এই সভাকে ঘিরে রীতিমতো গোষ্ঠী কোন্দলের চেহারা নেয় ময়নাগুড়ি বিধানসভা। এদিনের সভায় জেলা সভাপতি কেন তাকে ডাকেননি! সেই ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে দেন ময়নাগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী। পাশাপাশি ডালিম রায়ের দলে প্রবেশ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এই তৃণমূল বিধায়ক। আর তৃণমূল বিধায়কের জেলা তৃণমূল সভাপতির উদ্দেশ্যে এহেন প্রশ্ন এখন নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি করেছে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের অন্দরমহলে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত হয়ে ময়নাগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী বলেন, “মঙ্গলবার জেলা সভাপতি আমার এলাকায় সভা করেছেন। তাতে আমাদের ব্রাত্য রাখা হয়েছে। বাইরে থেকে লোক এনে সভা করা হয়। বিজেপি থেকে সদ্য দলে এসেছে, এমন গুরুত্বহীন লোকেদের নিয়ে জেলা সভাপতি সভা করছেন। গত লোকসভা ভোটের পর বিজেপির যে দুষ্কৃতী বাহিনী আমাদের কর্মীদের ওপর আক্রমণ করেছিল, তাদেরকে জেলা সভাপতি বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন। ময়নাগুড়িতে এতদিন কোনো গোষ্ঠী ছিল না। নতুন করে গোষ্ঠী করতে জেলা সভাপতি উদ্যোগী হয়েছেন।” অন্যদিকে ময়নাগুড়িতে মঙ্গলবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি কিষাণ কুমার কল্যাণী যে সভা করেছেন, তার মূল উদ্যোক্তা ডালিম রায়। এদিন তার সম্পর্কেও প্রশ্ন তুলে দেন অনন্তদেব অধিকারী। তিনি বলেন, “ডালিম রায় কিছুদিন আগেই বিজেপি থেকে আমাদের দলে এসেছেন। উনি আমাদের দলের নীতি আদর্শ কিছু বোঝেন না। সারের দোকানে বসে দল পরিচালনা করেন। আমি সবটাই দলের উপর মহলে জানাব।” কিন্তু দলের বিধায়ক তার বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ করছে কেন! এই প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি কিষাণ কুমার কল্যাণী বলেন, “অনন্তদেব অধিকারীর মুখে এসব মানায় না। তিনি নিজে অন্য দল থেকে তৃণমূলে এসেছেন। মঙ্গলবারে সভা কারও নিজস্ব সভা ছিল না। ওটা সংগঠনের সভা। ওই সভায় যারা আসেননি। ধরেই নেওয়া যায়, তারা তৃণমূল দলটা করে না। যাদের বিজেপি থেকে আমাদের দলে আসার কথা বিধায়ক বলছেন, তারা একসময় আমাদের দলেই ছিলেন। আগে যারা জেলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন, তারা এদের কাজ করতে দিত না। তাই তারা ঘরে বসে থেকে বাধ্য হয়ে অন্য দলে গিয়েছিলেন। আমাদের বিধায়ক নিজেকে বড় মাপের নেতা মনে করতেই পারেন। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে ময়নাগুড়িতে আমরা যে হারলাম, তার উত্তর উনি এবার দিন।” আর দলের বিধায়ক বনাম জেলা সভাপতির এই দ্বন্দ্ব দেখে এখন সকলেই বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার তার নেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কমানোর কথা বলছেন। কিন্তু যত দ্বন্দ্ব কমানোর কথা বলছেন তৃণমূলের নেত্রী, ততই একে অপরের সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হচ্ছেন। আর এতে আখেরে লাভ হচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টির। এখন তৃণমূল নেতৃত্ব নিজেদের দ্বন্দ্ব কমাবে, নাকি বিরোধীদের সুবিধা পাইয়ে দেবে! সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -