জিয়াগঞ্জ কান্ডে বিজেপিকে রুখতে এবার ময়দানে নামলেন স্বয়ং শুভেন্দু অধিকারী কলকাতা মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজ্য October 20, 2019 ইতিমধ্যেই রাজ্যে এক বীভৎস নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটে গেছে। একই পরিবারের শিক্ষক, তার সন্তান সম্ভবা স্ত্রী এবং তার এক ছোট্ট নাবালক শিশুকে কুপিয়ে খুন করার ঘটনায় আলোড়িত হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। আর এই খুনের ঘটনার পর থেকেই শাসক হোক বা বিরোধী, প্রায় প্রতিটা রাজনৈতিক দলই একে অপরের বিরুদ্ধে খুনের ঘটনায় অভিযোগ তুলতে শুরু করে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা অবনতির কথা তুলে ধরে টুইট করে বলেন, নিহত শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল সঙ্ঘ পরিবারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যদিও বা মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথম থেকেই জানিয়ে দেওয়া হয় যে, নিহত এই শিক্ষক কোনো সংগঠন করতেন না। ইতিমধ্যেই সেই নিহত পরিবারের সদস্যরা নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন বলে জানা গেছে। আর এই পরিস্থিতিতে এবার জিয়াগঞ্জের এই ঘটনায় বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুললেন মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সূত্রের খবর, শনিবার শুভেন্দুবাবু লালবাগে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি এবং নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি বিজয়া সম্মিলনী করেন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি আবু তাহের, তৃণমূল নেতা অরিৎ মজুমদার, জাকির হোসেন সহ অন্যান্যরা। তবে আশ্চর্যজনকভাবে এই সভায় যুব তৃণমূলের নেতা সৌমিক হোসেনের অনুপস্থিতি নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়। কিন্তু দলের সেই চর্চাকে বন্ধ করে জিয়াগঞ্জের ঘটনা নিয়ে এদিনের বিজয়া সম্মেলনী থেকে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে তোপ দেগে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “জিয়াগঞ্জে অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা হয়েছে। বিজেপি সাম্প্রদায়িক রং দিয়েছিল। ওরা বাংলার পুলিশকে বদনাম করেছিল। সিবিআই এতদিন পরেও বিশ্বভারতী থেকে চুরি যাওয়া নোবেলের খোঁজ পায়নি। আমাদের পুলিশ কিন্তু সাত দিনের মধ্যে এই খুনের ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।” অর্থাৎ শুভেন্দু অধিকারী জিয়াগঞ্জের ঘটনা নিয়ে বহরমপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে একদিকে যেমন সরব হলেন, ঠিক তেমনই রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নিচ্ছে বলেও জানিয়ে দিলেন তিনি। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিকে এদিনের এই বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে এনআরসির বিরুদ্ধে অধীর রঞ্জন চৌধুরী সম্প্রতি যে সভা করেছেন, তার কথা তুলে ধরে অধীরবাবুকেও একহাত নেন মুর্শিদাবাদ জেলা তৃনমূলের পর্যবেক্ষক। তিনি বলেন, “টেক্সটাইল মোড়ে আমাদের সভা করার দরকার নেই। একটি ব্লকের লোক গেলেই ওই এলাকা ভরে যাবে। আমরা এনআরসির বিরুদ্ধে বড় মাঠে সভা করব।” পাশাপাশি এদিন দলের সমস্ত নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকার নির্দেশ দেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “কেউ যদি ভাবেন, দলের নীতি আদর্শের বাইরে গিয়ে কাজ করব, তাহলে ভুল ভাবছেন। মুখ্যমন্ত্রী সব খবর রাখছেন। কোন পঞ্চায়েতে কি হচ্ছে, সেটা তিনি জানতে পারছেন। 2019 সালে পৌরসভা নির্বাচন। তার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সরকারের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।” রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এদিনের বিজয়া সম্মিলনী থেকে শুভেন্দু অধিকারী এক ঢিলে তিন পাখি মারলেন। একদিকে জিয়াগঞ্জের খুনের ঘটনা তুলে ধরে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক রং লাগানোর অভিযোগ করলেন তিনি। অপরদিকে অধীরবাবুর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার এবং দলের কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখার কথা বলে আগামী পৌরসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিলেন মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক বলে মত রাজনৈতিক মহলের। আপনার মতামত জানান -