এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > চিকিৎসার অভাবে তরতাজা কিশোরের মৃত্যুর পরেই কড়া সিদ্ধান্ত রাজ্যের! জেনে নিন!

চিকিৎসার অভাবে তরতাজা কিশোরের মৃত্যুর পরেই কড়া সিদ্ধান্ত রাজ্যের! জেনে নিন!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রবিবার রাজ্যে ঘটে গেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। যেখানে এ হাসপাতাল থেকে ও হাসপাতাল দৌড়াদৌড়ি করেও, নিজেদের ছেলেকে বাঁচাতে পারেননি এক দম্পতি। শেষমেষ নিজের ছেলেকে বাঁচাতে যদি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভর্তি না নেয়, তাহলে তিনি আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকি দেওয়ার পরই চাপে পড়ে কলকাতা মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে ভর্তি নেওয়া হয় ছেলে তথা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে।

কিন্তু এর আগের অতীত অভিজ্ঞতা খুব একটা ভালো নয়। শহরের প্রায় চার চারটি হাসপাতাল ঘুরে অবশেষে নিজেদের ছেলেকে কলকাতা মেডিকেল কলেজে বহু চেষ্টার পর ভর্তি করান ইছাপুরের এই দম্পতি। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। শুধুমাত্র হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জন্যেই হাসপাতালে ছেলেকে ভর্তি না করতে পেরে চোখের সামনে ছেলের মৃত্যু দেখলেন মা। যে ঘটনা নিঃসন্দেহে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকে আঙ্গুল তুলে দিয়েছে। একটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কি করে এতটা অমানবিক হতে পারে, তা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।

ইতিমধ্যেই নিজের ছেলেকে হারিয়ে কার্যত হতাশ শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মা শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “হাসপাতালগুলি আমাদের সাহায্য করল না। ঘন্টার পর ঘন্টা আমার ছেলেকে বাইরে ফেলে রাখল। ঠিক সময় চিকিৎসা হলে আমার ছেলেটা বেঁচে যেত। ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে। ওর ময়না তদন্ত করা হোক।” জানা গেছে, নিজের ছেলের মৃত্যুতে রিপোর্টে করোনা পজিটিভ লেখা রয়েছে। আর এই ঘটনা নিয়েই শ্রাবণীদেবী বেলঘড়িয়া থানায় একটি মামলা করেছেন। তার প্রশ্ন, মিডল্যান্ড নার্সিংহোম কি করে তিন মিনিটে কোভিড পজেটিভ রিপোর্ট দিতে পারে?

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু এভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে রোগী নিতে না চেয়ে যে অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল গোটা রাজ্য, তাতে কি রাজ্য প্রশাসন হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকবে? কিছুই করবে না রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর? যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বারবার স্বাস্থ্য পরিষেবাকে ভালো করার উদ্যোগ নিয়েছেন, হাসপাতাল তৈরি করেছেন, বলেছেন, কোনো রোগীকে ফেরানো যাবে না, সেখানে কেন এই অব্যাবস্থা? কেন চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হতে হল উচ্ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে? সূত্রের খবর, এবার রোগী রেফারের প্রশ্নে আরও কঠোর হতে চলেছে রাজ্য সরকার।

জানা গেছে, শোকজ, সাসপেন্ডের পর ক্লিনিক্যাল এস্তব্লিশমেন্ট আইন প্রয়োগ করে অভিযুক্ত হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিলের মতো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে রাজ্য সরকার। সেক্ষেত্রে বেসরকারি হোক বা সরকারি হাসপাতাল, কেউই এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকলে ছাড় পাবে না বলে জানা যাচ্ছে। এদিন এই প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের এক শীর্ষকর্তা বলেন, “আমরা সব সময় চাই, বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল থাক। কিন্তু মাঝেমধ্যেই যা পরিস্থিতি হচ্ছে, ব্যবস্থা না নিলে সাধারন মানুষের ভোগান্তি বাড়বে।”

একাংশ বলছেন, অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা কসাইয়ের মত আচরণ করেন। অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি না নিয়ে তারা যে অমানবিক ব্যবহার করেন, তা সত্যিই চোখে দেখার মত নয়। এক্ষেত্রে শুভ্রজিত চট্টোপাধ্যায়ের মত কিশোরের ক্ষেত্রে তারা যে আচরণ করেছেন এবং যেভাবে হাসপাতলে সময়মতো ভর্তি না হওয়ার কারণে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মায়ের কোল ছেড়ে চলে গেলেন, তাতে হাসপাতাল কতৃপক্ষ কি সেই মায়ের সন্তান ফিরিয়ে দেবেন? সন্তান হারানোর ব্যথা যে মা হারিয়েছেন, সে বোঝেন। চিকিৎসকদের বাড়িতেও পরিবার রয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে যদি এই ঘটনা ঘটে, তাহলে তারা কী করবেন! এখন এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বাংলার সাধারন মানুষ।

তাই ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য সরকারের কাছে সকলেই আবেদন করছেন, এবার একটু কঠোর ব্যবস্থা নিক রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। এভাবেই যদি চলতে থাকে, তাহলে আরও নানা অমানবিক দৃশ্যের সাক্ষী থাকতে হবে গোটা বঙ্গবাসীকে। তাই এবার এই অমানবিক ঘটনা ঘটার পর যাতে আর তার পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য এবার কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। তবে সেই পদক্ষেপের পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষরা কতটা মানবিক হন, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!