এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > রাজ্য-রাজনীতির সব প্রতিবাদী মুখকে এক ছাতার তলায় এনে ঝড় তুলতে চাইছেন মুকুল রায়?

রাজ্য-রাজনীতির সব প্রতিবাদী মুখকে এক ছাতার তলায় এনে ঝড় তুলতে চাইছেন মুকুল রায়?


রাজ্য-রাজনীতিতে ২০০৬ থেকে ২০১১ সাল খুবই গুরুত্ত্বপূর্ন – বিশেষ করে যাঁরা সমাজবিজ্ঞান বা রাজনীতি নিয়ে চর্চা করেন তাঁদের কাছে তো বটেই! ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রবল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাওয়া – অতি বড় বামপন্থীও নিশ্চিত নন যে ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন হচ্ছেই! কিন্তু, ব্যালট বাক্স খুলতেই সবার চক্ষু চড়কগাছ! তৃণমূল কংগ্রেস শুধু পরাজিতই হয় নি – কোনরমকে বিরোধী দলের মর্যাদাটা রক্ষা করতে পেরেছে। আর তারপরেই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সেই বিখ্যাত (নাকি কুখ্যাত?) লাইন – আমরা ২৩৫, ওরা ৩০ – কি করবে ওরা?

হ্যাঁ – ২০০৬ এর সেই নির্বাচনের পরে কার্যত হাল ছেড়ে দেওয়ার অবস্থা হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের! যে বামদলকে হারিয়ে দেব বলে আগাম হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখা হয়েছিল – জয়ের পর দিকে দিকে সেই বামেদেরই তীব্র আক্রমন নেমে আসছে। প্রাণ বাঁচাতে – মান বাঁচাতে, তৃণমূল-কর্মীরা তখন ঘর ছাড়া! সেই অবস্থা থেকে যে বামফ্রন্ট নামক মহীরূহকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে সরানো যেতে পারে – সেদিন সত্যিই অতি বড় তৃণমূল সমর্থকেরও ভাবনার বাইরে ছিল।

কিন্তু, সেই সময় এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটল রাজ্য-রাজনীতিতে – বিদ্বজন, বুদ্ধিজীবী, সুশীলসমাজ – যে নামেই ডাকুন না কেন, সেই সমাজটা একেবারে পাশে দাঁড়িয়ে গেলেন তৎকালীন বিরোধীনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যেসব মানুষগুলিকে টিভির পর্দায় বা দূর থেকেই দেখতে অভ্যস্ত ছিল আমজনতা – তাঁরাই একেবারে সশরীরে রাস্তায় নেমে পড়লেন। রাজ্যের যেখানেই কোন ‘ঘটনা’ ঘটছে – এই বুদ্ধিজীবীরা ‘প্রতিবাদী’ মুখ হয়ে ছুটে যাচ্ছেন – আর তাঁদের সম্মিলিত প্রতিবাদের সামনে কার্যত অসহায় পুলিশ-প্রশাসন।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

আর তারফলে, যে ঘটনা সবথেকে গুরুত্ত্বপূর্ন ভাবে ঘটে গেল – তা হল পরিবর্তনকামী সাধারণ মানুষ বা তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরা আবার মনে বল পেলেন – তাঁরাও রাস্তায় নেমে আন্দোলনের প্রখরতা বাড়াতে থাকলেন। নিন্দুকেরা বলে থাকেন – এই বুদ্ধিজীবীরা যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিলেন, তেমনই এঁদের সঙ্গে কথা বলে ‘প্রতিবাদী’ করে তুলতে কম ঘাম ঝড়াননি তৎকালীন তৃণমূল কংগ্রেসের অঘোষিত ‘দুনম্বর’ নেতা মুকুল রায়। যদিও, সত্যিই কোন রাজনীতির মারপ্যাঁচে বা সমীকরণে সেই বিদ্বজনদের প্রতিবাদী মুখ হয়ে ওঠা হয়েছিল – তা স্পষ্ট করে বলতে পারবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা মুকুল রায়ই।

যাইহোক, এতবড় ভূমিকার আসল কারণ – রাজ্যের প্রতিবাদী মুখেদের সম্মিলিত তীব্রতর আন্দোলন রাজ্য-রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে – এটি পরীক্ষিত সত্য। আর সেই ফর্মুলাই কি আবার নতুন করে প্রয়োগ করতে চলেছেন অধুনা বিজেপি শিবিরের অন্যতম মুখ হয়ে ওঠা মুকুল রায়? প্রশ্নটা উঠছে কারণ, সূত্রের খবর – মুকুল রায়ের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে বা ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে – বর্তমানে রাজ্যের বেশ কিছু এই ‘প্রতিবাদী’ মুখের। এঁদের মধ্যে রয়েছেন – বালির নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রী প্রতিমা দত্ত, কামদুনির প্রতিবাদী শিক্ষক প্রদীপ মুখার্জী বা কামদুনি কাণ্ডেরই আরেক পরিচিত মুখ টুম্পা ঘোড়ুই।

উপরে যাঁদের নাম লিখলাম – তাঁরা এতদিন ‘বাম-ঘনিষ্ঠ’ বলেই পরিচিত ছিলেন। এমনকি, এঁদের মধ্যে কেউ কেউ বিগত বিধানসভা নির্বাচনে বাম সমর্থন নিয়ে নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটেও লড়েছেন! কিন্তু, এঁদের ভরসার স্থান কি বদলে ক্রমশ মুকুল রায় হয়ে যাচ্ছে? প্রশ্নটা উঠছে – কেননা, বিশ্বস্ত সূত্রের খবর – একাধিকবার মুকুলবাবুর সঙ্গে এঁদের আলোচনা হয়েছে। কখনো তা বিজেপির রাজ্য সদর দপ্তরে তো কখনো দুর্গাপুজোর আবহে স্বয়ং মুকুল রায়ের বাসভবনে।

তবে, এই প্রতিবাদী মুখের সরাসরি গেরুয়া শিবিরে আসবেন নাকি মুকুলবাবু এঁদের আন্দোলনে ‘অরাজনৈতিক-সমর্থন’ দেবেন সেকথা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু যেটা, স্পষ্ট তা হল – প্রতিবাদী মুখেদের সামনে কয়েক বছর আগেই একটা যাস্ট রাজ্য সরকার বদলে গিয়েছে – মুকুলবাবু আবার কি সেই পরীক্ষিত পদক্ষেপই পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নতুন করে ফুটিয়ে তুলতে চাইছেন? উত্তরটা জানার জন্য হয়ত আরো কিছুদিন অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!