এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মেদিনীপুর > তৃণমূল নেতা খুনে “ফেরার” প্রাক্তন সিপিএম নেতাকে মন্ডল সভাপতি করে পাল্টা বার্তা বিজেপির?

তৃণমূল নেতা খুনে “ফেরার” প্রাক্তন সিপিএম নেতাকে মন্ডল সভাপতি করে পাল্টা বার্তা বিজেপির?


বিজেপির সঙ্গে সিপিএমের একটা অবৈধ আতাত আছে বলে মাঝেমধ্যেই দাবি করতে দেখা যেত তৃণমূল কংগ্রেসকে। আর এবার তৃণমূলের নেতা খুনে অভিযুক্ত এবং ফেরার এক শিক্ষককে ময়না দক্ষিনে বিজেপির মন্ডল সভাপতি করায় প্রবল বিতর্ক তৈরি হল। জানা গেছে, অলোক বেরা নামে ওই ব্যক্তিকে বিজেপি তাদের মন্ডল সভাপতি পদে বসিয়ে দিয়েছে। বস্তুত, এতদিন ময়না দক্ষিণ মন্ডলের সভাপতি ছিলেন সহদেব মন্ডল।

তবে 2018 পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর আড়ংকিয়ারানা গ্রামের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক অলোক বেরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। জানা যায়, আগে তিনি সিপিএম করতেন। এমনকি অলোকবাবুর ট্র্যাক রেকর্ডও খুব একটা ভালো ছিল না। গত 14 ই অক্টোবর বাকচা গ্রাম পঞ্চায়েতের আধারিয়া গ্রামে তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য বসুদেববাবুকে খুন হতে হয়েছিল। যে ঘটনায় বিজেপির 19 জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছিল। যার মধ্যে নাম ছিল সেই অলোক বেরার।

এই ঘটনার পর থেকেই দীর্ঘদিন এলাকাছাড়া ছিলেন তিনি। কিন্তু এবার বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সেই অলোক বেরাই মন্ডল সভাপতি হয়ে যাওয়ায় তীব্র গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের কাছে মন্ডল সভাপতি নির্বাচনে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে একগুচ্ছ অভিযোগ জমা পড়েছে। আর সিপিএম থেকে আসা ফেরার নেতাকর্মীদের কেন এভাবে দলের পদ দেওয়া হচ্ছে! তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন একাংশ।

পাশাপাশি বিধানসভা উপনির্বাচনে যেখানে বিজেপি এতটা ধাক্কা খেল, সেখানে এই সমস্ত নেতাদের জায়গা দিলে দলের ভাবমূর্তি যে নষ্ট হবে, সেই ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করছে দলের একাংশ। আর এই পরিস্থিতিতে কেন দলের শুভবুদ্ধির উদয় হচ্ছে না! তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে দলের নেতা-নেত্রীরা। এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপির দক্ষিণ মন্ডলের প্রাক্তন সভাপতি সহদেব মন্ডল বলেন, “2018 সালে পঞ্চায়েত ভোটের পর এই অলোক বেরা সিপিএম ছেড়ে আমাদের দলে যোগ দিয়েছিল।”

তিনি আরও বলেন, “তখন জেলা সভাপতি অলোকবাবুকে মন্ডল কমিটির সহ-সভাপতি করবার জন্য আমাকে নির্দেশ দেন। সেই মত তাকে সহ-সভাপতি করা হয়। বছর ঘুরতেই সেই অলোক মন্ডল সভাপতি হয়ে গেলেন। অথচ তিনি এই মুহূর্তে পুলিশের খাতায় ফেরার।” সত্যিই তো তাই। সিপিএম থেকে আসা নেতাকর্মীদের জায়গা দেওয়া হবে, তা না হয় মেনে নেওয়া হল। কিন্তু যারা পুলিশের খাতায় ফেরার, তাদের যদি দলে জায়গা দেওয়া হয়, তাহলে তো সাধারণ মানুষের ওপর আস্থা হারাবে গেরুয়া শিবির!

এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা বিজেপি সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, “অলোক বেরা একজন সৎ ব্যক্তি। তিনি স্বচ্ছ ভাবমূর্তির শিক্ষক। তাকে তৃণমূল কংগ্রেস এবং পুলিশ ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে। আগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ কিছু পায়নি। এরকম অভিযোগ আমাদের বিরুদ্ধে অনেক হয়। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধেও এরকম অনেক অভিযোগ আছে।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, নবারুণবাবু এই কথা বলে যতই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করুক না কেন, বিরোধীরা যে এই ব্যাপারটিকে ইস্যু করবে, এবং তাতে যে বিজেপি কিছুটা হলেও চাপে পড়বে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত একাংশ। এখন গোটা ঘটনায় বিজেপি অলোক বেরাকেই সভাপতি রাখে, নাকি এক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন আনে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!