‘সন্ত্রাস ও আলোচনা’ একসঙ্গে চলতে পারে না যুক্তিতে নরেন্দ্র মোদী আবেদন বাতিল করে ক্ষুব্ধ পাক-প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক December 9, 2018 পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পর প্রথমবার বিদেশি সংবাদমাধ্যমের সামনে বক্তব্য প্রকাশ করতে গিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন ইমরান খান। বললেন, ‘ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং তার নেতারা ‘মুসলিম বিরোধী, পাকিস্তান বিরোধী’। সঙ্গে আমেরিকার বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগড়ে বললেন, সন্ত্রাসবাদের খেতাব দিয়ে পাকিস্থানকে বিশ্ব মানচিত্রের গন্ডি থেকে দূর করতে চায় ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার। শুধুমাত্র পাকিস্থানকে ‘ভাড়া করা বন্দুক’- এর মতো ব্যবহার করার ইচ্ছা আমেরিকার। কিন্তু তাঁদের সেই প্রয়াস সফল হবে না, এমনটাই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন পাকিস্থানের নয়া প্রধানমন্ত্রী। ওয়াশিংটন পোস্ট-এর এক সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়েই একযোগে ভারত ও আমেরিকাকে আক্রমণ করেন পাক প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হয়, ‘ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য পাক আপনি অনেক চেষ্টা করলেও ভারত প্রত্যাখ্যান করেছে, এ ব্যাপারে কী বলবেন?’ উত্তরে ইমরান খান জানান, ভারত এখন লোকসভা নির্বাচনের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। সেখানকার শাসক অর্থাৎ বিজেপি মুসলমান বিরোধী এবং পাকিস্থান বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করে। আর সেজন্যেই পাকিস্থানের বন্ধুত্বের প্রস্তাব অস্বীকার করেছে। প্রসঙ্গত, মাস চারেক আগে পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রীর পদে অভিষেক হয়েছে ইমরান খানের। এরইমধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক ভালো করতে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, নিউইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার ফাঁকে পাকিস্তানের সঙ্গে বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে করার। ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে কিন্তু ‘সন্ত্রাস ও আলোচনা’ একসঙ্গে চলতে পারে না-এই যুক্তি দেখিয়ে প্রস্তাব বাতিল করে দেয় মোদী। এমনকি পাকিস্থানে অনুষ্ঠিত হতে চলা সার্ক সম্মেলনে শামিল হতেও আপত্তি জানায় বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। সাক্ষাৎকারে আমেরিকাকেও তোপ দাগতে ভোলেন না পাক প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের মুক্তাঞ্চল। একই সঙ্গে অনুদানও না দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে হোয়াইট হাউস। এই প্রেক্ষিতে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ইমরানের ভাবনা চিন্তার বিষয়টিও জানতে চাওয়া হয় ইন্টারভিউতে। স্পষ্ট কথায় পাক প্রধানমন্ত্রী জানান, ইতিহাস না জেনেই ভিত্তিহীন মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। আরো জানালেন, না এমন কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্কে যেতে রাজি নন তিনি, যে দেশ পাকিস্তানকে ‘ভাড়া করা বন্দুক’ ভাবে। পাকিস্থান সরকার কখনো দেশের মাটি ব্যবহার করে অন্য কারোর হয়ে যুদ্ধে লড়ার ইচ্ছা রাখে না, এমনটাই জানালেন তিনি। এদিন ইন্টারভিউতে ১৯৮০-র সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে যুদ্ধের প্রসঙ্গও টানেন। এই প্রেক্ষিতে আমেরিকার সঙ্গে পাকিস্থান কেমন সম্পর্ক চাইছে সেটাও জানতে চান সাংবাদিক। উত্তরে ইমরান জানান, বানিজ্যিক স্বার্থে পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের যে সম্পর্ক, পাকিস্থানের সঙ্গে আমেরিকারও তেমন সম্পর্ক থাকা উচিৎ বলেই মনে করেন তিনি। সন্ত্রাসবাদ দমনে প্রতিদিন কতো পাক সেনারা জীবন উৎসর্গ করছেন, অথচ আমেরিকা পাকিস্থানের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের তকমা এঁটে দিয়েছেন! আমেরিকার আধিকারিকরা মনে করেন পাকিস্থানে তালিবান জঙ্গিরা থাকে। এমনটাই এদিন বক্তব্যের প্রসঙ্গে জানালেন ইমরান। পাকিস্তান সরকার যে সন্ত্রাসবাদ রুখতে উদ্যোগী তার যুক্তি দিতেই তিনি বলেন, পাক সরকারের তৎপরতাতেই ‘তেহরিক-ই-লিবাইক’এর নেতা খাদিম হুসেন রিজভিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। তারপরও আমেরিকা পাকিস্থানকে সন্ত্রাসবাদী দেশ বলে ব্যাখ্যা করে।তিনি এদিনের ইন্টারভিউতে এটাও জানান, মার্কিন সরকারের দাবী মেনেই আফগানিস্তানের সঙ্গে শান্তি বৈঠকে বসতেও রাজি পাকিস্থান। আপনার মতামত জানান -