এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > করোনা যুদ্ধে বাংলার বুকে করুন ছবি! চিন্তা বাড়িয়ে একদিনে রাজ্যের ৩ প্রান্তে ৩ চিকিৎসক প্রয়াত

করোনা যুদ্ধে বাংলার বুকে করুন ছবি! চিন্তা বাড়িয়ে একদিনে রাজ্যের ৩ প্রান্তে ৩ চিকিৎসক প্রয়াত


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮৪৫৯ জন, তার মধ্যে করোনাতে মৃত্যু হয়েছে ২১৪১ জনের। গত সোমবার ৪১ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। তারমধ্যে রাজধানী কলকাতাতেই আছেন ১৪ জন । দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা হয়তো বা কিছুটা কমেছে কিন্তু দৈনিক নতুন করে আক্রান্তের যে দিন দিন বেড়েই চলেছে সেটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। গতকাল ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৯০৫ জন। আর এর সঙ্গেই আরেকটি বিশেষ অশনিসংকেত পশ্চিমবঙ্গের জন্য অপেক্ষা করে আছে।

গত সোমবার করোনাতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারালেন তিনজন চিকিৎসক। যারা হচ্ছেন ব্যারাকপুরের চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বিশ্বজিত মন্ডল, কোঠারি মেডিক্যাল সেন্টার এর বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তপন সিনহা এবং শ্যামনগরের জনৈক চিকিৎসক ডাক্তার প্রদীপ ভট্টাচার্য। জানা গেছে এই তিনজন ডাক্তার বেশ কিছুদিন ধরে করোনা আক্রান্ত ছিলেন তাদের চিকিৎসাও চলছিল। এই তিনজন ডাক্তার ছাড়াও গতকাল আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারালেন কলকাতার জনৈক কনসালট্যান্ট সার্জন হিমাদ্রি সেনগুপ্ত। সূত্রে জানানো হয়েছে, ডাক্তার হিমাদ্রি সেনগুপ্ত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু তাঁর চিকিৎসকের দাবি করেছেন করোনা পরিস্থিতির অতিরিক্ত চাপের ফলেই হূদযন্ত্র বিকল হয়ে যায় তাঁর। গতকাল এভাবে ৪ জন চিকিৎসকের পরপর মৃত্যুর সংবাদ সারা রাজ্য জুড়ে এক বিরাট আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে ।

একই দিনে যদি এভাবে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৪ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়, তবে সাধারণ মানুষের অবস্থা কি হতে চলেছে, তা ভাবেই ঘুম উড়তে চলেছে । একদিনে এত জন চিকিৎসকের মৃত্যু তে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন চিকিৎসকেরা ।পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসক সংগঠন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম’ অনুমান করছে, বর্তমানের উপসর্গহীন করোনা রোগীর অতিরিক্ত সংখ্যা বৃদ্ধিই ডাক্তারদের জন্য বিশাল বিপদ হয়ে দেখা দিচ্ছে । শুধু ডাক্তার নয় ডাক্তারের সঙ্গে বিপদে পড়ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরাও। ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম এর সম্পাদক ডাক্তার কৌশিক চাকি এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন ,“এমন একটা মুহূর্তে আরও বেশি সংখ্যক চিকিৎসকের প্রয়োজন। সেখানে একদিনে চার চিকিৎসকের মৃত্যু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শহরগুলিতে এরকম বহুসংখ্যক করোনা আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে যাদের শরীরে করোনার কোন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না। শরীরে কোন উপসর্গ না থাকার জন্য এদের সঠিকভাবে কোন টেস্ট করানো হচ্ছে না। শুধুমাত্র থার্মাল স্ক্যানিং করে তাদের ডাক্তার বাবুর চেম্বারে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে ।আর এই উপসর্গহীন রোগীরাই ডাক্তারদের কাছে মৃত্যুর বার্তা বহন করছেন । একেই তো বহু চিকিৎসক হাই প্রেসার, হাই ব্লাড সুগারের মত ক মরবিডিটি নিয়ে আছেন । তার উপরে তাদের শরীরে কখন এই মারণ ভাইরাস ঢুকে পড়ছে তারা নিজেরাও জানতে পারছেন না।

অন্যদিকে রাজ্যের চিকিৎসকদের মধ্যে করোনা ও নন করোনা এই ধরনের বিভাজন করতে ইচ্ছুক নন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম। এই ফোরামের সম্পাদক ডাক্তার জানিয়েছেন, করোনা চিকিৎসক বা করোনা চিকিৎসক নন এই ব্যাপারটি আপেক্ষিক।কারণ, অনেক ডাক্তারই আছেন যারা করোনার চিকিৎসা করছেন না, কিন্তু তারাও আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন করণাতে। করোনা সংক্রমণের এই ভয়াবহ অবস্থায় চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পূর্ব ভারতের স্বনামধন্য কার্ডিয়াক সার্জন দেবী শেঠি। দুটি বেসরকারি সংস্থার প্রযোজনায় কোভিড হেলথকেয়ার প্রফেশনাল বা সিএইচপি-র প্রফেশনাল এইচপি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপস্থিত ছিলেন কার্ডিয়াক সার্জন ডাক্তার দেবি শেঠি সেখানে তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “ অনেক সময়েই দেখা যাচ্ছে চেম্বারে আসছেন রোগীরা। চটজলদি রোগীকে দেখার জন্য দৌড়ে যাচ্ছেন চিকিৎসক।

কিন্তু মনে রাখতে হবে ওই রোগীর উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত হলে চিকিৎসক ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে চলে যাবেন। এমনিতেই চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। এরপর যদি অগুনতি চিকিৎসক কোয়ারান্টাইনে চলে যান কী হতে পারে সেটা সাধারণ মানুষকে ভাবতে হবে ।” অন্যদিকে করোনা মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যথেষ্ট প্রশংসা করেছেন ডাক্তার দেবি শেঠি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “মনে রাখবেন অসুখটা মাত্র ছ’মাসের পুরনো। প্রথম রাউন্ডে সরকারি হাসপাতাল যথেষ্ট ভাল কাজ করেছে। এবার দায়িত্ব নিতে হবে বেসরকারি হাসপাতালকে।”অন্যদিকে, রাজ্যের করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রে হাসপাতালের বেডের অপ্রতুলতা কে তিনি তেমন একটা গুরুত্ব দেননি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “বেড চিকিৎসা করে না। চিকিৎসা করতে গেলে দক্ষ চিকিৎসকের প্রয়োজন।

অনেক বেড আছে। কিন্তু ৫০ হাজার ডাক্তারের অভাব আছে। সওয়া এক লক্ষ নার্সের অভাব আছে।” রাজ্যে চিকিৎসকের অভাব দূর করতে তিনি পিজিটি ফাইনাল ইয়ারে পাঠরত হবু চিকিৎসকদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি রাজ্য সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আর্জি জানিয়েছেন। হবু চিকিৎসকদের প্রতি তাঁর আবেদন, “পরীক্ষা দিয়ে তাঁরা কী শিখবে? তার চেয়ে এই বছরটা তাঁরা করোনা রোগীদের চিকিৎসায় কাজ করুক। যে সমস্ত নার্স বিএসসি ফাইনাল ইয়ার পড়ছে তাঁরাও কাজে নেমে পড়ুক। পরীক্ষা স্রেফ একটা সার্টিফিকেট দেবে। কাজ শেখাবে এই প্র‍্যাকটিকাল অভিজ্ঞতাই।”

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!