প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – নির্বাচনের আগে এখন রীতিমত জমজমাট শ্লোগান হয়ে দাঁড়িয়েছে “খেলা হবে”। তৃণমূল থেকে শুরু করে বিজেপি, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা নিজেদের দলের পক্ষ অবলম্বন করে এই শ্লোগান দিতে শুরু করেছেন‌। আর এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও সেই খেলা হবে বলে শ্লোগান শোনা গেল। যা রীতিমতো চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। বলা বাহুল্য, বৃহস্পতিবার অমিত শাহ রাজ্যে এসে পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ আক্রমণ শানিয়েছেন।

আর এই পরিস্থিতিতে সেই অমিত শাহকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে রাজনীতির এবং গণতন্ত্রের খেলার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ তৃণমূল নেত্রী এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন যে, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক শক্তি কতটা, তা প্রমাণ করবার জন্য ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডকে বেছে নেওয়া হোক। অর্থাৎ এখানে সভার মধ্যে দিয়ে কাদের সাথে বেশি জনতার সমর্থন আছে, তা প্রমাণের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় এই ধরনের বক্তব্য শোনা গেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রসঙ্গত, এদিন রাজ্যে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ আক্রমণ করেন বিজেপির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দুর্নীতি থেকে শুরু করে রাজ্যের আইনশৃংখলা সহ একাধিক বিষয়ে অভিযোগ করতে দেখা যায় তাকে। আর তারপরই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে তার এই দাবিকে রীতিমত ভিত্তিহীন বলে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন তিনি বলেন, “খেলা অত সোজা নয়। হয়ে যাক একটা খেলা। গণতন্ত্রের খেলা, রাজনীতির খেলা। ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে করবেন? একদিকে আপনারা থাকবেন। কংগ্রেস, সিপিএমকেও দিয়ে দিলাম। জগাই, মাধাই, বিদাই থাকবে একসঙ্গে। আর একা তৃণমূল। আমি কিন্তু গোলরক্ষক। খালি দেখব, কে কটা গোল দিতে পারেন। খেলায় কে জেতে কে হারে।”

একাংশ বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার পাশাপাশি বিজেপি যে রাজ্যে সিপিএম এবং কংগ্রেসের সঙ্গে একসাথেই চলছে, তা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করলেন। স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচনের আগে কার সাথে বেশি জনসমর্থন আছে, তা প্রমাণের জন্য অমিত শাহের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই চ্যালেঞ্জ যে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

পর্যবেক্ষকদের মতে, ইতিমধ্যেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা রাজ্যে এসে দাবি করেছেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তারা রাজ্যের 200 আসনে জয়লাভ করবে। এমনকি রাজ্যস্তরের নানা নেতাদের গলাতেও শোনা যাচ্ছে এই ব্যাপারে আত্মপ্রত্যয়ের সুর। তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, বিজেপি দিবানিদ্রায় রয়েছে। এবারেও রাজ্যের ক্ষমতায় আসছে তৃণমূল কংগ্রেস।

আর এই পরিস্থিতিতে অমিত শাহ রাজ্যে এসে তৃণমূলের যখন কড়া ভাষায় আক্রমণ করছেন, তখন পাল্টা “খেলা হবে” বলে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডকে বেছে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ জনতার সমর্থন যে তাদের দিকেই আছে, তা প্রমাণ করবার জন্য নির্বাচনের আগে একটা সমাবেশ হোক বলে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন তিনি। তবে তৃণমূল নেত্রীর এই ওপেন চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে এবার বিজেপির পক্ষ থেকে কি প্রতিক্রিয়া আসে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।