এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > অনুব্রত মণ্ডলের সামনেই দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে, তৃণমূল নেতার হুশিয়ারিতে জোর জল্পনা

অনুব্রত মণ্ডলের সামনেই দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে, তৃণমূল নেতার হুশিয়ারিতে জোর জল্পনা

 

লোকসভা নির্বাচনের পর দলে শৃঙ্খলা আনা যে জরুরী, তা অনুধাবন করতে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস। আর তারপরেই জেলায় জেলায় দলীয় গোষ্ঠী কোন্দল রোধ করার কড়া বার্তা দেওয়া হয়। তবে বেশ কিছু জেলায় তৃণমূলের নেতারা একত্রিত হয়ে চললেও, যে জেলা তৃণমূলের শক্তঘাঁটি বলে পরিচিত, যেখানকার নেতা অনুব্রত মণ্ডল, সেখানেই এবার প্রকাশ্যে চলে এল তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল।

সূত্রের খবর, শনিবার বিকেলে মল্লারপুর শিববাড়ি মাঠে ময়ুরেশ্বর বিধানসভার কর্মী সম্মেলন আয়োজন করে তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, সাংসদ অসিত মাল, বিধায়ক অভিজিৎ রায়, রানা সিংহ এবং সৈয়দ সিরাজ জিম্মি। আর বৈঠকি শুরু হওয়ার পরেই দলের ফলাফল খারাপ নিয়ে একের পর এক নেতাদের কাছ থেকে জবাবদিহি চান অনুব্রত মণ্ডল।

প্রথমেই মল্লারপুর 1 অঞ্চল সভাপতি প্রিয়ব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে কেন এরুপ ফলাফল হল, তা জানতে চাওয়া হয়। পরবর্তীতে নানা অভাব অভিযোগ শোনার পর সেখানে ফাইভ ম্যান কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।

একইভাবে বেশ কিছু পদে রদবদল ঘটান জেলা তৃণমূল সভাপতি। এদিন ময়ূরেশ্বরের লালু শেখ, দক্ষিণগ্রামের দীনেশ কুন্ডুকে সরিয়ে সেখানেও 5 সদস্যের কমিটি গঠন করার কথা জানিয়ে দেন তিনি। এদিন দীর্ঘদিন ধরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলা ময়ূরেশ্বর অঞ্চলের ব্লক সভাপতি লালু শেখকে ডেকে তার কাছ থেকে সমস্ত কিছু জানতে চান অনুব্রত মণ্ডল। আর তখনই লালু শেখ বলেন, “ওখানে আমাদের দুজন নেতা। একজন ভোট করতে বলেছে তো অন্যজন ভাঙাতে বলেছে। তার জন্যেই আমাদের ফলাফল খারাপ হয়েছে।” আর এই কথা শুনেই কে ভাঙাতে বলেছে! তার প্রশ্ন করেন জেলা তৃণমূল সভাপতি।

তার উত্তরে লালু শেখ বলেন, “এর জন্য জটিল মন্ডল দায়ী।” তবে জটিল মন্ডল এরূপ কোনো কাজ করতে নির্দেশ দেননি বলে পাল্টা জানিয়ে দেন সেই অঞ্চলের বুথ সভাপতি সুকুমার মন্ডল। আর এতেই প্রকাশ্যে চলে আসে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। উপস্থিত অনেকেই সুকুমারবাবুর দিকে মারমুখী হয়ে আসতে শুরু করে। আর অবস্থা বেগতিক হয়ে যাওয়ায় রীতিমতো জোর হাত করে সাধারণ কর্মীদের শান্ত হওয়ার পরামর্শ দেন অনুব্রত মণ্ডল।

এদিকে ষাটপলসা গ্রাম পঞ্চায়েতের খারাপ ফল কেন হল, তা নিয়ে এদিন ব্লক সভাপতি নারায়ন চন্দ্রকে প্রশ্ন করেন জেলা তৃণমূল সভাপতি। তার উত্তরে ব্লক সভাপতি বলেন, “এই অঞ্চলের দায়িত্ব জটিল মন্ডলকে দেওয়া হয়েছিল। ফলে উনি যা করেছেন, তাই হয়েছে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এরপরই বুথ সভাপতি সুকুমার মন্ডল মন্ডল বলেন, “জটিল মন্ডল অসুস্থ ছিলেন। উনি ঠিকভাবে কাজ করতে পারেননি। ওনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, সেটা ঠিক নয়।” আর সুকুমারবাবু এই কথা বলার সাথে সাথেই রীতিমতো উত্তেজিত হয়ে ওঠেন তৃণমূলের কর্মীরা। প্রকাশ্যে চলে আসে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। মঞ্চে তখন বসে আছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কোনোক্রমে সকলকে শান্ত হওয়ার নিদান দেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি রানা সিংহ।

পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয়ে ওঠে যে, বিষয়টি নিয়ে সাধারন মানুষ তথা কর্মীদের কাছে হাতজোড় করতে দেখা যায় বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। এদিন মঞ্চ থেকে অনুব্রতবাবু বলেন, “আপনারা চিৎকার করবেন না। এখানে সংবাদমাধ্যমের লোকজন আছে। তারা আপনাদের দিকে ক্যামেরা তাক করে রয়েছে। আপনারা ঝগড়া করবেন না। কেউ বিরোধিতা করলে সরিয়ে দিন। দুষ্টু গরুর থেকে শূন্য গোয়াল ভালো।”

আর এদিনের বিধানসভা ভিত্তিক সম্মেলনে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল যেভাবে প্রকাশিত হল, তা নিয়ে নানা মহলে উঠতে শুরু করেছে নানা প্রশ্ন। অনেকে বলছেন, অনুব্রত মণ্ডলের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত বীরভূম। কিন্তু ফলাফল পর্যালোচনা করতে গিয়ে যেভাবে সেখানে এক নেতা অপর নেতার বিরুদ্ধে ভোট ভাঙ্গানোর অভিযোগ তুললেন এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে যেভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পরিস্থিতি, তাতে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিতেও যে তৃণমূল দ্বিধাবিভক্ত, তা প্রমাণিত হয়ে গেল বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!