এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > ‘গোমূত্র পানে করোনা মুক্তি’র যুক্তি নিয়ে গেরুয়াধারীদের একহাত নিলেন বাবুল সুপ্রিয়

‘গোমূত্র পানে করোনা মুক্তি’র যুক্তি নিয়ে গেরুয়াধারীদের একহাত নিলেন বাবুল সুপ্রিয়


রাজনীতিতে পা দিয়ে হিন্দুত্ববাদের প্রচার চালাতে গিয়ে বেশ কিছু বিজেপি নেতা প্রায়শই বেফাঁস মন্তব্য করে ফেলেন। আজকের যুগে দাঁড়িয়ে যে কথাগুলিকে বড়ই বেমানান লাগে। উপরন্তু কথাগুলি বলার জন্য প্রায়ই তাঁরা হাসির খোরাক হন। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে। সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, বিশ্ব জুড়ে করোনা মহামারীর ভাইরাস আতঙ্ক বাড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিজ্ঞানীরা উঠেপড়ে লেগেছেন এই মারণ ব্যাধির প্রতিষেধক আবিষ্কার এর জন্য।

তার মধ্যেই সম্প্রতি করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য বিজেপির দলের বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ নেতা করোনার প্রতিষেধক হিসাবে গোমূত্রকে চালানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিজেপির পক্ষ থেকে তাঁরা বলছেন, প্রতিদিন নিয়ম করে যদি খাঁটি দেশি গোমূত্র পান করা যায়, তাহলে শরীরে করোনা ভাইরাস বাসা বাঁধবে না। এবং এরকম নিদান দিয়েছেন স্বয়ং রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আর তা নিয়েই বিজেপির অন্দরে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।

সম্প্রতি বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় এ প্রসঙ্গে যথেষ্ট বিরোধিতা করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। নাম না করে তিনি রাজ্য বিজেপি সভাপতির এ ধরনের মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের জেরে বিজেপি সংসদ বাবুল সুপ্রিয় সাধারণ মানুষকে সজাগ করতে একটি টুইট করেন। যেখানে নিজের গাওয়া একটি বলিউডি গানের সাথে তিনি বার্তা দেন, এইরকম কঠিন সময়ে সংক্রমণ এড়াতে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সেখানেই কমেন্ট বক্সে একজন বাবুল সুপ্রিয়কে গোমূত্র পান করার পরামর্শ দেন। সেই টুইটের পাল্টা বাবুল সুপ্রিয় বলেন, ‘ওটা আমি করি না। সমর্থনও করি না। ওটা যারা করে তাঁরা ব্যক্তিগত বিশ্বাস থেকে করেন।’ আর এর পরেই তিনি এ ধরনের টোটকার প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে একধাপ সুর চড়িয়ে বলেন, ‘এ কথা ঠিক যে, কেউ কেউ গেরুয়া পরে এটা করেছেন। কিন্তু গেরুয়া মানেই বিজেপি নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘বাস্তবসম্মত ভাবে এবং বিজ্ঞানসম্মত ভাবে’ করোনার মোকাবিলার চেষ্টা করছেন।’

তবে রাজ্য বিজেপি সভাপতি থেকে শুরু করে সম্প্রতি হিন্দু মহাসভা থেকেও গোমূত্র পানের উপকারিতা বোঝানো হয়। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় শুধুমাত্র রাজ্য বিজেপি সভাপতি নয়, এ ধরনের অবৈজ্ঞানিক ধারণার পরিপ্রেক্ষিতে যাঁরাই কিছু নিদান দিচ্ছেন, তাঁদেরকেই বাবুল তার মন্তব্যে বিঁধলেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। একুশ শতকের দরজায় দাঁড়িয়ে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারীর প্রতিষেধক রূপে গোমূত্রকে দাঁড় করানোর চেষ্টার ফলে কেন্দ্রীয় শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন অনেকেই।

এমনকি এই নিয়ে দলের অন্দরেও অনেক বিরোধি মনোভাবের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে চিকিৎসকদের কথায়, মারাত্মক করোনা ভাইরাস রুখতে যদি কেউ এ ধরনের প্রতিষেধক মানে গোমূত্র পান করেন, তাহলে তাঁর শরীরে আরও ক্ষতিকর রোগ বাসা বাঁধবে। এই অবস্থায় অনেক রাজনীতিবিদ্‌ থেকে বিশিষ্টজন প্রশ্ন তুলছেন, করোনা সংক্রমণে এমনিতেই মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তার ওপরে গোমূত্র পানের বিধি প্রচলন করে মানুষকে ভুল পথে চালিত করা হচ্ছে। এরপর যদি মানুষ আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাহলে তার দায় কে নেবে? আপাতত পুরো বিষয়টির ওপর নজর রাখছে ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!