এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > অগ্নিগর্ভ বাংলা কি ক্রমশ রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে এগোচ্ছে? জল্পনা বাড়ালেন বিজেপি শীর্ষনেতা

অগ্নিগর্ভ বাংলা কি ক্রমশ রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে এগোচ্ছে? জল্পনা বাড়ালেন বিজেপি শীর্ষনেতা

 

রাজ্যের সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের রাষ্ট্রপতি শাসনের আবেদন করাটা নতুন কিছু নয়। তবে পশ্চিমবঙ্গে সম্প্রতি যে পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, তাতে করে কেন্দ্রের শাসকদল তথা রাজ্যের বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টির প্রভাবশালী নেতার রাষ্ট্রপতি শাসনের হুঁশিয়ারি দেওয়া যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।

বস্তুত, গতকাল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কার্যত হুশিয়ারি দিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা বলেন, “নতুন বছরের শুরুতেই বিদায় নিতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। নিজের বক্তব্যে ভারতীয় জনতা পার্টির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা বলেন, “আমরা নির্বাচিত সরকারকে ফেলতে চাই না। কিন্তু এই অগ্নিগর্ভ অবস্থা যদি আর কয়েকদিন চলে, তবে রাষ্ট্রপতি শাসন ছাড়া উপায় নেই। 2020 সালের শুরুতেই বিদায় নিতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।”

সাংবাদিক বৈঠক থেকে গতকাল এইভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাঁচাছোলা বক্তব্যে আক্রমণ করেন ভারতীয় জনতা পার্টির কেন্দ্রীয় সম্পাদক। যে বক্তব্যকে রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, সম্প্রতি ভারতবর্ষের সংসদের দুই কক্ষ থেকে পাস হওয়ার পরে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের স্বাক্ষরের পর সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল আইনে পরিণত হয়ে গেছে।

কিন্তু গত শুক্রবার থেকেই ভারতবর্ষের ত্রিপুরা, অসম এবং উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর মত পশ্চিমবঙ্গের বেশকিছু জেলাতে সিএবি বিরোধিতা করে রীতিমত সহিংস আন্দোলনে নামতে দেখা যায় আন্দোলনকারীদেরকে। মুর্শিদাবাদ, মালদা, উলুবেরিয়া, উত্তর 24 পরগনা, কলকাতা, হাওড়া একাধিক জায়গায় সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করে বাসে আগুন, রেল অবরোধ, এলোপাতাড়ি পাথর বৃষ্টি করে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দিয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা যায় সহিংস আন্দোলনকারী কর্মীদেরকে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, মুর্শিদাবাদের লালগোলা ও কৃষ্ণপুরে রীতিমত চারটি ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও গোটা ঘটনায় রীতিমত বিজ্ঞপ্তি জারি করে পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া বার্তা দিয়েছেন।

 

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আইন নিজের হাতে তুলে নিলে বা সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে কাউকে রেয়াত করা হবে না। পাশাপাশি রাজ্যবাসীকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী নিজের আবেদনে জানিয়েছেন, সরকারি সম্পত্তি অর্থাৎ জনগণের সম্পত্তি। তাই সেগুলোকে কোনভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। এছাড়াও কোনো রকমের ব্যক্তিগত সম্পত্তি ধ্বংস করা হলে রাজ্য সরকার তা বরদাস্ত করবে না। যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলাকে কঠোর হাতে দমন করা হবে।

রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান বলেন, “রাজ্য সরকার নাগরিকত্ব বিল এবং এনআরসি বিরুদ্ধে। পাশাপাশি সমস্ত রকম দাঙ্গা-হাঙ্গামা এবং শান্তি নষ্ট করার যাবতীয় প্রচেষ্টাও ঘোরবিরোধী। কাজেই যে কোনো রকম আন্দোলন হলে তা শান্তিপূর্ণভাবেই করতে হবে।” বিরোধীদের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ করে নিজের আবেদনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কিছু রাজনৈতিক দল ধর্মীয় গোঁড়ামি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে রাজ্যজুড়ে অশান্তির আবহাওয়া এবং দাঙ্গা তৈরি করার চেষ্টা করছে। আমি সকলকে অনুরোধ করছি, তাদের এই অসাধু উদ্দেশ্যে কর্ণপাত না করতে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন সমস্ত রাজ্যবাসীর কাছে শান্তি এবং সম্প্রীতি বজায় রাখার আবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী যাই বলুন না কেন, ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে বারবারই বলা হচ্ছে রাজ্যের যে কোনো রকমের প্রশাসনিক এবং আইনগত বিশৃংখলার পিছনে রাজ্য সরকারের নিষ্ক্রিয়তা। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে মিডিয়ার কাছে স্পষ্টভাবে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বদের বক্তব্য, শুধুমাত্র ভোটব্যাংকের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খলাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে রাজ্য প্রশাসন।

এছাড়াও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সিএবি না মানার কোনো অধিকার নেই রাজ্য সরকারের। রাজ্য সরকার কেন্দ্র তালিকাভুক্ত আইন মানতে বাধ্য। পশ্চিমবঙ্গ ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সহিংস আন্দোলনের পিছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের ব্যর্থতাকেই তুলে ধরা হচ্ছে।

রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে ট্যুইট করে বলা হয়, “পশ্চিমবঙ্গ জ্বলছে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাশ্মীর নিয়ে চিন্তিত। পশ্চিমবঙ্গের রাস্তায় যে তান্ডব চলছে, তাকে ছাড়া তার আর সব বিষয় নিয়ে টুইট করার সময় রয়েছে।” কিন্তু রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজ্যজুড়ে যদি জায়গায় জায়গায় সংঘটিত হওয়া বিশৃঙ্খলা পূর্ণ সহিংস আন্দোলন বন্ধ না হয়, তাহলে রাজ্য সরকারের ভূমিকা রীতিমতো প্রশ্নের মুখে পড়ে যেতে পারে।

এক্ষেত্রে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনষ্ট করে রাহুলবাবুর মন্তব্য বাস্তবের মাটিতে রূপান্তরিত হতে পারে। কারণ রীতিমত মনে রাখার বিষয়, ইতিমধ্যেই রাজ্যপালের তরফ থেকেও সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকাকে কটাক্ষ করা হয়েছে। কাজেই এখন সমগ্র পরিস্থিতি কোন দিকে এগোয়! সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে ওয়াকিবহাল মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!