এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > আজ 3 আসনের উপনির্বাচন – জমজমাট বঙ্গ রাজনীতি! কোন পথে দিশা দেবে ফলাফল?

আজ 3 আসনের উপনির্বাচন – জমজমাট বঙ্গ রাজনীতি! কোন পথে দিশা দেবে ফলাফল?

 

অবশেষে অপেক্ষার অবসান। আজ সোমবার রাজ্যের বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের অনুষ্ঠিত হবে। লাগাতার প্রচার, সাধারণের সঙ্গে জনসংযোগ, প্রতিশ্রুতিতে এতদিন মজে উঠেছিল করিমপুর, খড়গপুর এবং কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র। কিন্তু এবার শাসক-বিরোধী সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদেরই জনগণের করা পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে। নিঃসন্দেহে 3 বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন রাজ্যের শাসন ব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন ঘটাবে না।

কিন্তু আগামী 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের চালচিত্র সম্পর্কে একটু হলেও আভাস পাওয়া যাবে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। তাই সেদিক থেকে সকলেরই নজর করিমপুর, খড়গপুর এবং কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনের দিকে। কি হবে 3 কেন্দ্রে? তা জানা যাবে আগামী 28 শে নভেম্বর ভোটবাক্স খোলার পরই। তবে তার আগে বিশেষজ্ঞ থেকে বিশ্লেষক, সবার মতামত অনুযায়ী যা উঠে এসেছে, তা নিয়ে আলোচনা করা যেতেই পারে।

প্রথমেই আসা যাক, উত্তরবঙ্গের কংগ্রেসিদের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে। প্রায় প্রতিবারই এই বিধানসভা কেন্দ্রটি কংগ্রেস নিজেদের দখলে রাখতে সক্ষম হয়েছিল। তবে কোনোবারই তা তৃণমূল ও বিজেপির দখলে যায়নি। কিন্তু সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে এই বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীর উত্থান এবং রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির জয়লাভ এই নির্বাচনে অনেকটাই প্রভাব ফেলবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

জানা গেছে, এখানে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন কমল চন্দ্র সরকার। অন্যদিকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন তপন দেব সিংহ। আর বাম-কংগ্রেসের জোট প্রার্থী হয়েছেন 2016 সালে বিধায়ক থাকা সদ্য প্রয়াত প্রমথনাথ রায়ের মেয়ে ধীতশ্রী রায়। জোট হওয়ায় এবং তার বাবা বিধায়ক থাকায় তিনি কিছুটা হলেও সিমপ্যাথি ভোট এখানে পেতে পারেন বলে দাবি করছে বাম এবং কংগ্রেসের একাংশ। তবে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে এখানকার লড়াই জমে উঠতে চলেছে।

অনেকের দাবি, লোকসভায় বিজেপি রায়গঞ্জ কেন্দ্রের জয়লাভ করায় উত্তর দিনাজপুরে তাদের দ্রুত উত্থান ঘটছে। তাই সেদিক থেকে এই কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে তারা অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। তবে সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের দিকে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কেননা এনআরসি নিয়ে এবার বিজেপির বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচার করেছে ঘাসফুল শিবির। ফলে শেষ মুহূর্তে প্রচারে ঝড় তোলা 3 রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের মধ্যে বিজেপি প্রার্থী কিছুটা হলেও এগিয়ে রয়েছে বলে ধারণা করছেন অনেকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কে এখানে শেষ হাসি হাসে, তা ভোটবাক্স খোলার পরই প্রমাণিত হয়ে যাবে। কালিয়াগঞ্জের পাশাপাশি হেভিওয়েট কেন্দ্র বলে পরিচিত করিমপুরেও এবার উপনির্বাচন হচ্ছে। অনেক বছর পর গত 2016 সালের তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে প্রথমবার এই কেন্দ্র জয়লাভ করেন মহুয়া মৈত্র। বামেদের শক্ত ঘাঁটি এই কেন্দ্রে তিনি জয়লাভ করে দ্রুত সংগঠনকে শক্তিশালী করতে শুরু করেন।

তবে সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তিনি সাংসদ হওয়ায় তার ছেড়ে যাওয়া এই কেন্দ্রে এবার উপনির্বাচন হচ্ছে। যেখানে তৃণমূল প্রার্থী বিমলেন্দু সিংহ রায়কে সাথে করে জয় নিশ্চিত করতে উঠে-পড়ে লেগেছেন মহুয়াদেবী। নিজের ব্যক্তিগত ক্যারিশমায় বিভিন্ন সমীক্ষক সংস্থার মাধ্যমে বিমলেন্দুবাবুর জয় নিশ্চিত করতে এখানে সেনাপতির ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে সেই মহুয়া মৈত্রকে।

অন্যদিকে বিজেপির হেভিওয়েট নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার এখানে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন। ফলে তিনিও তৃণমূলের দখলে থাকা এই কেন্দ্র নিজেদের দখলে আনতে উদ্যোগী হয়েছেন। তবে বাম-কংগ্রেসের তরফে তরুণ এবং সংখ্যালঘু মুখ গোলাম রাব্বিকে প্রার্থী করায় সংখ্যালঘুদের সমর্থন কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা। কিন্তু এত সব জল্পনার মাঝেও তৃণমূল এই কেন্দ্রকে তাদের সেফ সিট বলেই ধরে এগোতে শুরু করেছে।

তবে কার ক্ষেত্রে করিমপুর সেফ হয়, তা ভোটের ফলাফলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। আর সর্বশেষ যে কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে, তা হল এককথায় হেভিওয়েট কেন্দ্র বলেই পরিচিত খড়গপুর। 2016 সালে এই কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেছিলেন বিজেপির দিলীপ ঘোষ। দীর্ঘদিন কংগ্রেসের দখলে থাকা এই কেন্দ্রে পদ্ম ফুটিয়ে দীলিপবাবু শাসকদল তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তবে এবার দিলীপ ঘোষ সাংসদ হয়ে যাওয়ায় এই কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন প্রেমচাঁদ ঝা।যাকে নিয়ে দলের অন্দরে প্রবল অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।

এমনকি প্রেমচাঁদবাবু প্রার্থী হওয়াতে বিজেপির প্রবীণ নেতা প্রদীপ পট্টনায়েক নির্দল প্রার্থী হিসেবে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে পড়েছেন। ফলে বিজেপি এখানে যদি জয়লাভ করতে না পারে, তাহলে তাদের গোষ্ঠীকোন্দলই প্রধান ভাবে দায়ী থাকবে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। অপরদিকে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলে ফায়দা তুলতে ময়দানে নেমে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই আসন নিজেদের দখলে নিয়ে আসতে খড়গপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারকে দাঁড় করিয়ে উন্নয়নের বার্তা দিচ্ছেন তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে ফিরহাদ হাকিম।

একইভাবে দীর্ঘদিন কংগ্রেসের দখলে থাকা এই কেন্দ্রে স্বচ্ছ মুখ, মাস্টারমশাই চিত্তরঞ্জন মন্ডলকে প্রার্থী করেছে বাম-কংগ্রেস জোট। ফলে সেদিক থেকে এই কেন্দ্রে বিজেপির দখলেই থাকে, নাকি “ঘাসফুল” অথবা “কাস্তে-হাতুড়ি-হাত” ছাপ রাখতে সক্ষম হয়, সেদিকেই নজর থাকবে সকল বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!