অনুদানপ্রাপ্ত পুজোকে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি টাঙানোর নির্দেশ জেলা পরিষদের! শুরু বিতর্ক মেদিনীপুর রাজ্য October 9, 2019 অতীতে নাকি একসময় বিনিময় প্রথার প্রচলন ছিল। ইতিহাসের বই পড়ার সুবাদে একথা প্রায় সকলেরই জানা। এবার কি সেই বিনিময় প্রথা চালু হল রাজ্যের শারদ উৎসবেও? প্রশ্নটা শুনতে আশ্চর্য মনে হলেও একটি ঘটনাকে ঘিরে সাম্প্রতিককালে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। বস্তুত ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যের ক্লাবগুলোকে আর্থিক অনুদান দেওয়া শুরু করেছে বর্তমান মা-মাটি-মানুষের সরকার। এবার সেই ক্লাবগুলির অনুদানের 10 হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে 25 হাজার টাকা করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বরাবরই মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পেছনে তোষণের রাজনীতি রয়েছে বলে অভিযোগ করতে দেখা যেত বিরোধী দলগুলিকে। তবুও তাতে কান না দিয়ে ক্লাবগুলোকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছে রাজ্যের বর্তমান সরকার। তবে সরকারের পক্ষ থেকে ক্লাবগুলোকে আর্থিক অনুদান দিয়ে শারদ উৎসবকে সুন্দর করবার জন্য যখন উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে, ঠিক তখনই আর্থিক অনুদানপ্রাপ্ত ক্লাবগুলোর মণ্ডপের ভেতরে এবার মুখ্যমন্ত্রী ছবি টাঙানোর নির্দেশ দিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। আর জেলা পরিষদের এহেন ফতোয়াতেই এবার শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই মহকুমা স্তরে অনুষ্ঠান করে পুজো কমিটিগুলোকে 25000 টাকা করে চেক বিলি করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় মোট 924 পুজো কমিটিকে সরকারি চেক দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু যেখানে সরকার স্বইচ্ছায় ক্লাবগুলোকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, সেখানে কেন সেই ক্লাবগুলোর উপর ফতোয়া জারি করে মুখ্যমন্ত্রী ছবি টাঙানোর নির্দেশিকা জারি করার সাহস দেখাল জেলা পরিষদ! তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি অজিত মাইতি বলেন, “আমাদের জেলায় এবার 924 টি পুজো কমিটিকে সরকারি চেক দেওয়া হচ্ছে। পুজো উদ্যোক্তাদের যে চেক দেওয়া হচ্ছে, সেই চেকের পাশে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দিয়ে ফেস্টুন তৈরি করে পুজো মণ্ডপের সামনে তা নিয়ে রাখার আবেদন দেখেছি। আশা করি, আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে সকলেই তা করবে।” একাংশ বলছেন, কিছুদিন আগেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেছিলেন, “সরকার ক্লাবগুলোকে টাকা দিয়ে তাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে। আগেরবার মুখ্যমন্ত্রীর ছবি জোর করে ক্লাবগুলোতে টাঙানোর জন্য বাধ্য করা হয়েছিল। এভাবে বলপূর্বক কিছু করা ঠিক নয়।” আর এখানেই পর্যবেক্ষকদের মত, দিলীপ ঘোষের এই কথা পুরোপুরি ঠিক না হলেও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি যেভাবে তার জেলায় অনুদানপ্রাপ্ত ক্লাবগুলোকে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি টাঙ্গানোর ফতোয়া দিলেন, তাতে বিরোধীদের অভিযোগ কিছুটা হলেও গ্রহণযোগ্য হতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষের মনে। তাহলে কি ক্লাবগুলোকে আর্থিক অনুদান দিয়ে তাদের কিনে নেওয়ার চেষ্টা করছে শাসক দল! নাকি শারদ উৎসবের নামে এই টাকা দিয়ে ক্লাবগুলোর কোমর ভেঙে দিতে চাইছে তারা! এখন এই প্রশ্নই করতে শুরু করেছে বিরোধীরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী জনমানসে নিজের ভাবমূর্তি আরও ভালো করার জন্য শারদ উৎসবের উপহার হিসেবে রাজ্যের ক্লাবগুলির জন্য 10 হাজার থেকে 25 হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু যেভাবে সেই ঘোষণার পর সেই অনুদানপ্রাপ্ত ক্লাবগুলির উদ্দেশ্যে সেই মুখ্যমন্ত্রীর ছবি রাখবার জন্য ফতোয়া জারি করতে দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতিকে, তাতে শাসকদলের অস্বস্তি যে ক্রমশ এই ঘটনায় বাড়তে শুরু করবে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত প্রায় সকলেই। আপনার মতামত জানান -