এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > করোনা চিকিৎসায় আশার আলো, নতুন মেডিসিনের দিকে নজর সকলের

করোনা চিকিৎসায় আশার আলো, নতুন মেডিসিনের দিকে নজর সকলের


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিশ্বজুড়ে করোনা পরিস্থিতির হাল ক্রমশ বেসামাল হয়ে পড়ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ইতিমধ্যেই করোনা পরিস্থিতির হাল রীতিমতো উদ্বেগজনক জায়গায় পৌঁছে গেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে ভারতেও করোনা পরিস্থিতির হাল রীতিমতো আশঙ্কাজনক বলে মনে করা হচ্ছে। মানুষের আতঙ্ক ইতিমধ্যেই কয়েক গুণ বেড়ে গেছে করোনা নিয়ে। করোনা সংক্রমণ আটকানোর জন্য অবশ্য লকডাউন চলছে দেশজুড়ে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির যে বিশেষ কোনো হেরফের হয়নি, তা এতদিনে প্রমাণিত।

অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, যেহেতু এখনো করোনার কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি, তাই মানবজাতি এখনো বেশ কয়েক কদম পিছিয়ে রয়েছে করনার থেকে। এই অবস্থায় এবার ভারতের বাজারে করোনার প্রতিষেধক হিসাবে জাপানের ফ্যাভিপিরাভির ব্র্যান্ডের ফ্যাবিফ্লু নামক একটি ওষুধ বাজারে আনলো মুম্বইয়ের গ্লেনমার্ক ফার্মাসিউটিক্যালস। সূত্রের খবর, এই প্রথম ভারতীয় কোন ওষুধ কোম্পানি করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বাণিজ্যিকভাবে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নিয়ে এলো বাজারে।

জানা গেছে, এই ওষুধটি নিয়ে ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলকভাবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করেছিলেন গ্লেনমার্ক ফার্মাসিউটিক্যালস যথাক্রমে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ এর উদ্যোগে। প্রথম দুইবার ট্রায়াল রিপোর্ট পজিটিভ হয় এবং তৃতীয় বার ট্রায়ালের প্রথম ভাগ সফল হওয়ার দিকে। সেই ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই এবার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু করেছে এই বায়োমেডিক্যাল ফার্ম। সেক্ষেত্রেও প্রাথমিক রিপোর্ট সন্তোষজনক বলে জানা গেছে।

আর তাই এই ওষুধ রোগীদের ওপর প্রয়োগে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সে ক্ষেত্রে সাবধানতা নেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, শুধুমাত্র যারা মৃদু ও মাঝারি করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন, শুধুমাত্র তাঁদের ওপরই জরুরী ভিত্তিতে এই ওষুধ প্রয়োগ করা যাবে। ফ্যাভিপিরাভির ওষুধের নির্মাতা সংস্থা জাপানি ফার্মাসিউটিক্যালস ফুজিফিল্ম। এই ওষুধটির ব্র্যান্ড নাম হচ্ছে ‘অ্যাভিগান’। অন্যদিকে জানা যাচ্ছে, ভারতে গ্লেনমার্ক ফার্মাসিউটিক্যালসের পক্ষ থেকে নিয়ে আসা এই ফ্যাবিফ্লু ব্র্যান্ড এর প্রতিটি ট্যাবলেটের দাম পড়বে 103 টাকা করে।

অর্থাৎ 34 ট্যাবলেটের একটি প্যাকেটের দাম পড়বে সাড়ে তিন হাজার টাকা। অন্যদিকে গ্লেনমার্ক ফার্মাসিউটিক্যালসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে দেশের 11 টি জায়গায় ফ্যাভিপিরাভিরের ক্লিনিকাল ট্রায়াল হয়েছিল। সেই ট্রায়ালে অন্তত 80% সাফল্য মিলেছে বলে গ্লেনমার্ক দাবি করেছে। ওষুধের ডোজ হিসাবে প্রাথমিকভাবে যা ঠিক হয়েছে সেটি হল, প্রথমদিনই রোগীকে 200 মিলিগ্রামের নটি ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে। এরপর টানা 14 দিন প্রতিদিন 200 মিলিগ্রাম এর চারটি ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে, কোন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই ওষুধ খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তবে বলা হচ্ছে, ফ্যাবিফ্লু ওষুধ প্রয়োগের ফলে মানব শরীরে যে কোন রকম ভাইরাল ইনফেকশন কমে যাবে। সাধারণত আরএনএ ভাইরাস তাদের সংক্রামক ভাইরাল প্রোটিন মানুষের দেহকোষে ঢুকিয়ে দেয় এবং তার পরেই তা বিভাজিত হতে শুরু করে। সেই বিভাজন প্রক্রিয়াকেই অ্যান্টি-রেট্রোভিয়াল ওষুধ ফ্যাভিপিরাভির থামিয়ে দেবে বলে দাবি জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে খবর, চিন, জাপান, রাশিয়া, ইতালি, ব্রিটেন, ফ্রান্স, মিশরে এই ওষুধের ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে এই মুহূর্তে। শুধু তাই নয়, মিশর ও জর্ডনে এই ওষুধ অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায়। জাপানে দুই হাজারের বেশি করোনা রোগীর ওপর এই ওষুধের প্রয়োগ করা হয়েছে বলে খবর। বিভিন্ন জায়গায় এই ওষুধ প্রয়োগ করে সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে গ্লেনমার্ক ফার্মাসিউটিক্যালস এই ওষুধ প্রয়োগ করার জন্য ড্রাগ কন্ট্রোল এর অনুমোদন পাওয়ার পর দিল্লি ব্রিনটন ফার্মাসিউটিক্যালস, বেঙ্গালুরুর স্ট্রাইডস ফার্মা, মুম্বইয়ের লাসা সুপারজেনেরিকস এবং হায়দরাবাদের অপটিমাস ফার্মা এই ওষুধ বাজারে আনার জন্য ড্রাগ কন্ট্রোল এর কাছে আবেদন জানিয়েছে বলে খবর।

তবে এই ওষুধ সম্পর্কে শালিমার বাগের ফোর্টিস হাসপাতালের পালমোনোলজি বিভাগের ডিরেক্টর ডাক্তার বিকাশ মৌর্য জানিয়েছেন, ফ্যাভিপিরাভিরের ফ্যাবিফ্লু কোন ম্যাজিক নয়। তাই করোনা চিকিৎসার জন্য একে বানানো হয়নি। তবে অবশ্য মৃদু এবং মাঝারি ধরনের করোনা সংক্রমণ যাদের শরীরে হয়েছে, তাঁদের শরীরের এই ওষুধ কাজ করেছে বলে খবর। সংক্রমণ কমতে দেখা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে এই ওষুধের ওপর নির্ভর করে সার্বিক প্রয়োগের কথা ভাবা হচ্ছে।

তবে পুরোপুরি করোনার ক্ষেত্রে এই ওষুধ কার্যকরী কিনা, তা আগামী দিনে আরও বেশি সংখ্যক রোগীর ওপর থেরাপি করলে বোঝা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই মুহূর্তে যেভাবে বিশ্বজুড়ে করোনা ছড়িয়ে পড়ছে, খুব স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্ববাসী অত্যন্ত আতঙ্কিত। যদিও এই মুহূর্তে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার কোন অস্ত্র জানা নেই কারোর। আর সেই সুযোগে করোনা তার সংক্রমণ ঝড়ের গতিতে বাড়িয়ে চলেছে। আপাতত করনা সংক্রমণকে কিছুটা আটকানোর জন্য ফ্যাবিফ্লু ওষুধট কি রকম কাজ করছে, সেদিকে নজর থাকবে বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!