এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > দিল্লির কর্মসূচিতে প্রবল ভয় তৃনমূলের? মুখ রক্ষায় ড্যামেজ কন্ট্রোল মমতার!

দিল্লির কর্মসূচিতে প্রবল ভয় তৃনমূলের? মুখ রক্ষায় ড্যামেজ কন্ট্রোল মমতার!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-বাংলায় একশো দিনের কাজের বঞ্চনা সহ একাধিক অভিযোগ নিয়ে গত একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে দিল্লি অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী অক্টোবর মাসের 2 এবং 3 তারিখে তৃণমূলের এই কর্মসূচি। যদিও বা তৃণমূলের পক্ষ থেকে দিল্লি পুলিশের কাছে অনুমতি চাওয়া হলেও, এখনও পর্যন্ত সেই ব্যাপারে কোনো সবুজ সংকেত পাওয়া যায়নি। যার ফলে তৃণমূল গান্ধী জয়ন্তীর দিন রাজঘাটে গিয়ে গান্ধী মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেবে বলে খবর। আর তার মাঝেই বাংলা থেকে দিল্লিতে বেশি জনসমাগম হবে না বুঝেই কি মুখ রক্ষা করার চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?

কার্যত প্রেস্টিজ রক্ষার জন্যই এবার কি এই দিল্লী কর্মসূচি নিয়ে নয়াপন্থা অবলম্বন করতে চলেছে বাংলার শাসক দল? জানা গিয়েছে, বঞ্চনার অভিযোগে যখন দিল্লিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাসভবনে স্মারকলিপি জমা দেবে তৃণমূল নেতৃত্ব, ঠিক তখনই কলকাতা সহ রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে এই ধর্না কর্মসূচি চলবে। পাশাপাশি দিল্লির কর্মসূচি রাজ্যের প্রত্যেকটি ব্লকে লাইভ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেখানো হবে।প্রসঙ্গত, তৃণমূল এতদিন দাবি করেছিল যে, বাংলা থেকে তাদের প্রচুর জনসমাগম হবে দিল্লির কর্মসূচিতে। কিন্তু মুখেই তারা এত বড় বড় কথা বলেছিল। কারণ, তৃণমূলও খুব ভালো করে জানে, দিল্লির মাটিতে তাদের কত কর্মী যেতে পারে!

তাই এখন বাধ্য হয়েই কর্মীদের কথা ছেড়ে দিয়ে শুধুমাত্র সাংসদ, বিধায়ক, প্রত্যেকটি জেলার জেলা পরিষদের সভাধিপতি এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে দিল্লির সেই অনুষ্ঠানে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে যে, প্রত্যেকটি ব্লকে এই কর্মসূচি পালন করতে হবে। আর দিল্লির কর্মসূচি লাইভ আকারে দেখানো হবে। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝে গিয়েছেন যে, দিল্লিতে তৃণমূলের এই কর্মসূচি ফ্লপ হতে চলেছে? আর সেই কারণেই কি ড্যামেজ কন্ট্রোলের জন্য রাজ্যের প্রত্যেকটি ব্লকে কর্মসূচি পালন করা হবে বলে মুখ রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে?

বিজেপির ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, তৃণমূল এখন আঞ্চলিক দলে পরিণত হয়েছে। আগামী দিনে তারা আঞ্চলিক দলের মর্যাদাও রাখতে পারবে কিনা, তা প্রশ্নের বিষয়। ব্যাপক দুর্নীতির কারণে আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজের টাকা বন্ধ রয়েছে। আর সেই বিষয় নিয়ে আবার দিল্লির দরবারে আন্দোলন সংঘটিত করার কথা ভেবেছে তৃনমূল নেতৃত্ব। কিন্তু তাদের সেই আন্দোলন যে ভেস্তে যাবে, তা জানাই ছিল। তাই শেষ পর্যন্ত লোক হবে না বুঝে শুনেই রাজ্যে এই কর্মসূচি পালন করার নির্দেশ দেওয়া হলো। এদিকে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলকে বার্তা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, দিল্লী পুলিশ আর কলকাতা পুলিশ এক নয়। দিল্লী পুলিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অধীনে রয়েছে। তাই সেখানে কিছু করতে গেলে বুঝে শুনেই করা উচিত।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বাংলায় বিরোধীরা সামান্য কর্মসূচি করতে পারে না এই তৃণমূলের দলদাস পুলিশের জন্য। পুলিশকে কি করে নির্লজ্জভাবে ব্যবহার করতে হয়, তার শেষ সীমায় পৌঁছে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু তারপর তারা আবার দিল্লিতে নিজেদের মতো করে কর্মসূচি করার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু একটি রাজনৈতিক দল কর্মসূচি করতেই পারে। তবে তারা সেখানে এখনও পর্যন্ত অনুমতি পায়নি। আদৌ সেই কর্মসূচি হবে কিনা, সেটাই একটা বড় প্রশ্ন। পাশাপাশি দিল্লিতে যদিও বা কর্মসূচি হয়, তাহলে তৃণমূল কত জনসমাগম করতে পারবে! যারা মুখে বড় বড় কথা বলছিল যে, লক্ষ লক্ষ লোক দিয়ে দিল্লির রাস্তা আটকে দেওয়া হবে, তারা দশ শতাংশ লোক সেখানে নিয়ে যেতে পারবে তো?

এই প্রশ্ন হয়তো তৃণমূলের মনেও ভয়ের সঞ্চার তৈরি করেছে। যার কারণে দিল্লিতে কিছু কিছু নেতৃত্ব গেলেও সবাইকে না নিয়ে গিয়ে তৃণমূল বাংলার মাটি থেকেই এই আন্দোলনকে বড় করে দেখাতে চাইছে। অর্থাৎ কর্মী সমাগমের কথা বলা হলে দিল্লির কর্মসূচি যে ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে, তা বুঝতে পেরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই মুখ রক্ষার জন্য বাংলাতেও এই কর্মসূচি পালন করা হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। দিনের শেষে তেমনটাই দাবি সমালোচক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!