প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-গণতান্ত্রিক রাজ্য হিসেবে পরিচিত পশ্চিমবঙ্গ। অথচ সেই রাজ্যে প্রতি মুহূর্তে গণতন্ত্রের টুটি কি করে চেপে ধরতে হয়, বিরোধীদের কি করে মিটিং মিছিলে বাধা দিতে হয়, তার সব ব্লু প্রিন্ট তৈরি করে রাখে রাজ্য সরকার। গ্রুপ ডি চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে হয়তো সেই রকমই কিছু করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আদালত বুঝিয়ে দিল, সব সময় রাজ্যের কৌশল এবং চালাকি খাটবে না। গ্রুপ ডি চাকরি প্রার্থীদের মিছিল নিয়ে আবার কলকাতা হাইকোর্টে সপাটে থাপ্পড় খেলো রাজ্য সরকার।

প্রসঙ্গত, এই গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের মিছিল নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল। তাদের পক্ষ থেকে মিছিলের জন্য অনুমতি চাওয়া হলেও, পুলিশ সেই অনুমতি দেয়নি। বরঞ্চ আইন-শৃঙ্খলা সহ যানজটের কথা তুলে ধরে বারবার সেই মিছিলের আবেদন নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় গ্রুপ ডি চাকরি প্রার্থীরা। এদিন আদালতের পক্ষ থেকে আগামী 27 সেপ্টেম্বর সেই মিছিল করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যার ফলে কার্যত চাপে পড়ে গেল রাজ্য প্রশাসন বলেই মনে করছেন একাংশ।

বিরোধীদের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে একাধিক বিষয়ে বারবার আদালতে মুখ পুড়ছে রাজ্য সরকারের। কিন্তু তারপরেও তাদের শিক্ষা নেই। গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীরা তাদের বঞ্চনা নিয়ে মিছিল করতে চাইছেন। তবে সেখানেও বাধা প্রদান করতে সচেষ্ট রাজ্য। তবে শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ সেই চাকরিপ্রার্থীদের দাবিকে আরও সামনে নিয়ে চলে এলো। আদালতে গিয়ে জয় পেলেন সেই সমস্ত চাকরি প্রার্থীরা। তবে এই সপাটে থাপ্পড় খাওয়ার পরেও যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের লজ্জা না হয়, তাহলে তাদের আর কিছু বলার নেই বলেই কটাক্ষ বিরোধীদের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, দীর্ঘদিন ধরেই এই গ্রুপ ডি চাকরি প্রার্থীরা রাস্তায় পড়ে রয়েছেন। কিন্তু তাদের দিকে সরকারের নজর নেই। মেলা, খেলা, উৎসব, মন্ত্রীদের বেতন বাড়াতেই সরকার ব্যাস্ত। আন্দোলনকারীদের দিকে তাদের কোনো নজর নেই। কারণ সেদিকে নজর দিলেই সরকারের অস্বস্তি বাড়বে। তবে একটি মিছিলের অনুমতি দিতে কেন এত বাহানা ছিল রাজ্যের? শেষ পর্যন্ত আদালত তো অনুমতি দিয়ে রাজ্যকে বুঝিয়ে দিল যে, সবসময় গা জোয়ারি চলে না। ফলে গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীরা হাইকোর্টের এই নির্দেশে বড় জয় পেয়ে গেলেন। প্রবল অস্বস্তিতে পড়ে গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। দিনের শেষে তেমনটাই দাবি রাজনৈতিক মহলের।