এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > দিলীপে “হ্যাঁ”, শুভেন্দুতে “না”! দ্বিচারিতা নাকি রাজনৈতিক কৌশল? চর্চা শুরু!

দিলীপে “হ্যাঁ”, শুভেন্দুতে “না”! দ্বিচারিতা নাকি রাজনৈতিক কৌশল? চর্চা শুরু!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একসময়কার সতীর্থ শুভেন্দু অধিকারী এখন তার প্রধান প্রতিপক্ষ। ভারতীয় জনতা পার্টির টিকিটে নন্দীগ্রাম থেকে জয়লাভ করার পরেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হয়েছেন তিনি। আর বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্য সরকার এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নাস্তানাবুদ করে দিচ্ছেন শুভেন্দুবাবু। স্বভাবতই বিজেপির অন্যান্য নেতাদের থেকে তার এক সময়কার সতীর্থ তথা বর্তমানে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে যে সব থেকে বেশি অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেই ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত সকলে।

তাই বিজেপির অন্যান্য নেতাদের চোখে শুভেন্দু অধিকারীকে খারাপ করে দিতে তৃনমূলের পক্ষ থেকেও লাগাতার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি সমালোচক মহলের। আর এর মাঝেই জল্পনা বাড়িয়ে রাজভবনে শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলেও, শুধুমাত্র দিলীপ ঘোষের সঙ্গে কথা বলে তাকে নবান্নের চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানানোর পাশাপাশি নিজের বাড়িতে কালীপুজোর জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে ফেললেন তৃণমূল নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে দীর্ঘদিনের সতীর্থ শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তার একটি কথা না বলার কারণ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। অনেকে বলছেন, দিলীপ ঘোষকে দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে চাপে ফেলতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই কারণেই এটা তার রাজনৈতিক কৌশল।

তবে একাংশের দাবি, এই কৌশল প্রয়োগ করে দ্বিচারিতার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হল। শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষ দুজনেই বিজেপির অত্যন্ত শীর্ষ নেতা হিসেবে পরিচিত। পরিষদীয় রাজনীতিতে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ শুভেন্দু অধিকারী। সেদিক থেকে কেন তার সঙ্গে সৌজন্যমূলক একটি কথাও না বলে শুধুমাত্র বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে কথা বলে তাকে আমন্ত্রণ জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায? ইতিমধ্যেই এই বিষয়টিকে নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রবিবার রীতি অনুযায়ী স্বাধীনতা দিবসের পরে রাজভবনে চা চক্রে যোগ দিতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে কোনো কথা না বলে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরেই নবান্নে একদিন দিলীপ ঘোষকে চা চক্রে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান তিনি।

একাংশ বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুব ভালো করেই জানেন, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে কিছুটা হলেও বনিবনার অভাব রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর। আর সেই কারণে তাদের মধ্যে দূরত্ব বাড়িয়ে দিতে শুধুমাত্র দিলীপ ঘোষকে আমন্ত্রিত করে বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে দেওয়ার সুকৌশলী পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন তিনি। তবে অনেকে আবার এর পেছনে অন্য যুক্তি দিতে শুরু করেছেন। তাদের দাবি, বিজেপিতে এখন যত জন নেতা রয়েছেন, তার মধ্যে সবথেকে বেশি শাসকদলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী, এটা খুব ভালো করেই জানেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সেই কারণে তার সঙ্গে একটি কথাও না বলে দূরত্ব তৈরি করতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে পরিষদীয় রাজনীতিতে শুধুমাত্র বিজেপির পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ বা প্রধান হিসেবে পরিচিত শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু তার সঙ্গে কথা না বলাটা কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদৌ সৌজন্যতার পরিচয়, এখন তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন একাংশ।তবে গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহলের একাংশের মতে, এই সমস্ত কিছু করে লাভের লাভ কিছুই করতে পারবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি হয়ত বা দিলীপ ঘোষের সঙ্গে সুসম্পর্ক করার চেষ্টা করে শুভেন্দু অধিকারীকে একা করে দেওয়ার চেষ্টা করলেন।

কিন্তু বিজেপি গঠনতান্ত্রিক এবং শৃঙ্খলা পরায়ন দল। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সমস্ত চেষ্টা করে বিজেপিতে ফাটল ধরানোর কৌশল অবলম্বন করলেও, তা সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়ে যাবে। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে যে মহলের পক্ষ থেকে যে কথাই বলা হোক না কেন, একসময়কার সতীর্থ তথা বর্তমানে প্রতিপক্ষ শুভেন্দু অধিকারীকে চেপে রেখে তার দলের রাজ্য সভাপতির সাথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্য সাক্ষাৎ যে বাড়তি নজর কেড়েছে রাজনৈতিক মহলের, তা বলাই যায়। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!