প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিধানসভা নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে, ততই রাজ্যে ঘনঘন পা রাখতে দেখা যাচ্ছে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের। নরেন্দ্র মোদীদি থেকে শুরু করে অমিত শাহ এখন রাজ্যে লাগাতার আসতে শুরু করেছেন। যা নিয়ে আপত্তি তৈরি হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অন্যান্য নেতারা প্রশ্ন তুলছেন, কেন ভোটের আগে এভাবে বাংলায় আসছে বিজেপি নেতারা! কেন এতদিন তাদের পাত্তা পাওয়া যায়নি?

আর এবার এই বিষয়টি নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তুলতে দেখা গেল তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কে। তবে সৌগতবাবু সেই প্রশ্ন তোলার সাথে সাথেই তাকে “দাদা” বলে সম্বোধন করে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে রীতিমত সৌগতবাবু এবং তার দলকে প্রবল চাপে ফেলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বুধবার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর বিতর্কের জবাবী ভাষণ দিচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেই সময় বিরোধী দলের সাংসদরা ব্যাপক হট্টগোল শুরু করেন। আর তখনই তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কে উদ্দেশ্য করে একটি মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “ভেবেছিলাম দাদা অনেক পড়াশুনা করে ভাষণ দেবেন। কিন্তু উনি বললেন, প্রধানমন্ত্রী সহ অন্যান্য মন্ত্রীরা কেন বাংলায় যাচ্ছেন? তার জ্ঞান থেকে বঞ্চিত থেকে গেলাম।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একদিকে যেমন সৌগত রায়ের মত বিরোধী সাংসদকে “দাদা” বলে সৌজন্যতার বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী, ঠিক তেমনই বাংলায় গেলে কেন তৃণমূলের এত অস্বস্তি হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিলেন তিনি।

এক্ষেত্রে সৌগত রায়ের মত প্রবীণ সাংসদকে যে এই ধরনের শ্লেষাত্মক বাক্য প্রয়োগের মধ্যে দিয়ে কার্যত চাপে ফেলে দিলেন নরেন্দ্র মোদী, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।এদিকে এদিন সংসদের তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়, বাংলা নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের এত ভাবনা কেন? আর তখনই প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দেন, পশ্চিমবঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য। তাই অগ্রাধিকার দিচ্ছি। আপনারা তো পিছিয়ে দিয়েছেন।

অর্থাৎ বিধানসভা নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে, ততই সংসদে বাংলার প্রসঙ্গ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে শুরু করেছে। প্রায় প্রতিনিয়ত বাংলার কথা তুলে ধরে একদিকে উন্নয়নের বার্তা এবং অন্যদিকে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করছেন প্রধানমন্ত্রী সহ বিজেপির অন্যান্য হেভিওয়েট মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাংসদরা। আর এই পরিস্থিতিতে এবার সৌগত রায়ের মত প্রবীণ তৃণমূল সাংসদকে আক্রমণ করে ঘাসফুল শিবিরের অস্বস্তি যেন আরও বাড়িয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী।

একাংশের মতে, নির্বাচনের সময় যতই এগিয়ে আসবে, ততই সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বাংলা নিয়ে আলোচনা বেশি করে বৃদ্ধি পাবে। কেননা বিজেপি স্থির করে নিয়েছে, এবার তাদের বাংলা দখল করতেই হবে। সেদিক থেকে সংসদে বারবার বাংলার কথা তুলে ধরে তৃণমূল সাংসদের আক্রমণের মধ্য দিয়ে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বাংলার চিত্র তুলে ধরতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে বিজেপির অন্যান্য নেতারা। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।