এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > এবার সম্মুখসমরে দুই তরুণ তুর্কি – তৃণমূলের মহুয়া বনাম বিজেপির শান্তনু

এবার সম্মুখসমরে দুই তরুণ তুর্কি – তৃণমূলের মহুয়া বনাম বিজেপির শান্তনু


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – দীর্ঘদিন ধরে মতুয়াদের নাগরিকত্ব পাওয়া নিয়ে জলঘোলা চলছে। 2019 এর লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে গেরুয়া শিবির থেকে মতুয়া মহলে গিয়ে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। আর এই প্রতিশ্রুতির ফলেই বনগাঁ অঞ্চলের মতুয়াদের একটা বড় অংশের ভোট গিয়ে পড়েছিল গেরুয়া ঝুলিতে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর না হওয়ায় মতুয়াদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। আর সেই ক্ষোভ প্রশমিত করার উদ্দেশ্যে এবার তড়িঘড়ি আসরে নামলেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। অন্যদিকে শান্তনু ঠাকুরকে জবাব দিতে প্রস্তুত নদীয়া জেলার সভাপতি মহুয়া মৈত্র। দুই তরুণ তুর্কীর লড়াইতে জমে উঠেছে বাংলার রাজনীতি।

শুক্রবার নদীয়ার বগুলায় মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বে এক বিশাল সমাবেশ হয়। যেখানে আওয়াজ ওঠে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এরাজ্যে দ্রুত বলবৎ করার জন্য। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে এদিন বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর জানান রাজ্যে বর্তমান তৃণমূল সরকারের পতন না হলে কোনোভাবেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এই রাজ্যে লাগু করা যাবেনা। আর তাই প্রয়োজন তৃণমূল সরকারের পতন। অন্যদিকে নদীয়া জেলা সভাপতি মহুয়া মৈত্র এদিন বিজেপিকে অশিক্ষিত বলে আক্রমণ করেছেন। এদিন তিনি বলেন, ‘অশিক্ষিত বিজেপির লোক, মিথ্যেবাদীগুলো কী বলল তার জবাব দেওয়ার প্রয়োজন নেই।’

পাশাপাশি তিনি এও জানান, এরাজ্যে তৃণমূল যতদিন থাকবে ততদিন সংশোধনী নাগরিকত্ব আইন কোনভাবেই বলবৎ করা যাবে না। অন্যদিকে মতুয়াদের প্রসঙ্গে তিনি মহুয়া মৈত্র বলে মতুয়ারা এখানকার নাগরিক। তাঁদেরকে ভোটের স্বার্থে ভুল বোঝাচ্ছে বিজেপি। প্রসঙ্গত, বাম জমানায় শেষ থেকেই মতুয়া ভোটব্যাঙ্কের পুরোটাই চলে আসে তৃণমূলের আওতায়। মতুয়াদের বড়মা বীণাপাণি দেবীর সঙ্গে যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বিভিন্ন সময় তাঁদের ঘনিষ্ঠতার ছবি চোখে পড়েছে। এই ঘনিষ্ঠতার সূত্রেই ঠাকুরবাড়ির কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর, মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর, মমতাবালা ঠাকুরদের মতন বিভিন্ন জনকে জনপ্রতিনিধি করেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু উনিশ এর লোকসভা নির্বাচনে কিন্তু সম্পূর্ণ অন্য ছবি দেখা যায়। বড়মা বীণাপাণি দেবী মারা যাওয়ায় মতুয়াদের নিজেদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় ব্যাপক গন্ডগোল এবং সেই গন্ডগোলের সুযোগ নিয়ে আসরে নামে গেরুয়া শিবির। মতুয়াদের মধ্যে থেকে শান্তনু ঠাকুরকে বিজেপি জনপ্রতিনিধি করে লোকসভা নির্বাচনে এবং দেখা যায় শান্তনু ঠাকুর ব্যাপক ভোটে জয়লাভ করেছে। আর এরপরে মতুয়াদের মধ্যে যে ভাঙ্গন ধরেছে তা আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। উল্টে তৃণমূলের হাত থেকে রাণাঘাট আসনটিও চলে যায় বিজেপির হাতে। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই যখন অমিত শাহ কলকাতায় এসেছিলেন তখনও তাঁকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন জারি করা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়।

আর এর জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, দেশে যখন আইন তৈরি হয়েছে তখন তা অবশ্যই বলবৎ হবে। কোন রাজ্যের এক্তিয়ার নেই সেই আইনকে আটকানোর। একমাত্র করোনার কারণে এই মুহূর্তে এই আইন কার্যকর হচ্ছে না। তবে এবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইঙ্গিতকেই একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আবহে কাজে লাগাতে চলেছে গেরুয়া শিবির। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এবার মতুয়াদের পাশে পেতে গেরুয়া শিবির শুরু করেছে নতুন প্রচার। তাঁরা প্রচার করছে কেন্দ্রে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাস হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এ রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের জন্য তা আটকে যাচ্ছে।

খুব স্বাভাবিকভাবেই বিজেপির লক্ষ্য, মতুয়াদের ক্ষোভ কেন্দ্রীয় সরকারের দিক থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া তৃণমূল সরকারের দিকে, আর তা যদি হয় তাহলে 2019 লোকসভা নির্বাচনের প্রতিচ্ছবি দেখা যাবে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বলেই মনে করা হচ্ছে। আর মতুয়াদের পাশে পেতে সেই যুক্তি ব্যাপকভাবে প্রচার করতে শুরু করেছে বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। শান্তনু ঠাকুরকে আটকাতে এবার লড়াইতে নামছেন নদীয়া জেলা সভাপতির মহুয়া মৈত্র। দুই তরুণ রাজনীতিবিদের লড়াইতে ভোট বাক্সে প্রভাব ফেলতে কে এগিয়ে থাকবে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে, সেদিকে নজর রাখবে ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!