প্রাক্তন বনাম বর্তমানের দ্বন্দ্ব, উত্তপ্ত অনুব্রত গড়! বড়সড় অস্বস্তিতে শাসকদল! কলকাতা রাজ্য February 11, 2020 এতদিন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নানা রকম মন্তব্য সেখানকার রাজনীতিকে উত্তপ্ত করে রেখেছিল। আর এবার ফের উত্তপ্ত হতে দেখা গেল বীরভূম জেলাকে। তবে তা তৃণমূলের কারণে নয়, বিজেপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে। সূত্রের খবর, প্রাক্তন এবং বর্তমান বিজেপির মন্ডল সভাপতি দ্বন্দ্বের জেরে এবার ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল বীরভূমের ইলামবাজারের বিলাতি পঞ্চায়েতের নাচনসা গ্রামে। জানা গেছে, গত রবিবার রাতে এই গ্রামের ডোমপাড়া প্রাথমিক স্কুলের পাশে একটি খোলা জায়গায় বিজেপির প্রাক্তন মন্ডল সভাপতি অভিজিৎ খায়ের অনুগামীরা পিকনিক করছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় বর্তমান মন্ডল সভাপতি বিকাশ ঘোষের অনুগামীরা রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে তাদের গালিগালাজ করেন। আর এতেই দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। পরিস্থিতি এমন আকার নেয় যে, অভিজিতবাবুর অনুগামীদের তরফ থেকে বিকাশবাবুকে ছুড়ে মারা হয় বলেও গুরুতর অভিযোগ ওঠে। জানা যায়, রবিবার রাতে বচসা থেকে গোটা পরিস্থিতি শান্ত হয়ে গেলেও, সোমবার সকালে বিকাশবাবু নিজে সেই এলাকায় গিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। প্রাক্তন মন্ডল সভাপতি অভিজিৎ খাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি মহিলাদের উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করা হয় বলে খবর। আর এরপরই অভিজিতবাবুর অনুগামীদের তরফ থেকে বিকাশবাবুকে উদ্দেশ্য করে ইট ছোড়া হয় এবং তাতেই মাথা ফেটে যায় বর্তমান মন্ডল সভাপতি বিকাশ ঘোষের। জানা গেছে, বর্তমানে তিনি বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আর বিজেপির প্রাক্তন বনাম বর্তমান মন্ডল সভাপতির এই দ্বন্দ্ব এখন রীতিমত অস্বস্তিতে ফেলেছে ভারতীয় জনতা পার্টিকে। এদিন এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন মন্ডল সভাপতি অভিজিৎ খা বলেন, “বিজেপির সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু বিকাশবাবুর সঙ্গে আছে। উনি তো তৃণমূল থেকে এসে মন্ডল সভাপতি হয়েছেন। ওর ব্যবহার খুব খারাপ। নেশা করে গ্রামে ঢুকে মহিলাদের অসম্মান করে কথা বলেছেন। তার ফলেই কয়েকজন ওকে মারধর করেছে বলে শুনেছি।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - অন্যদিকে এই ব্যাপারে বর্তমান মন্ডল সভাপতি বিকাশ ঘোষ বলেন, “এসব কিছু হয়নি। গ্রাম্য বিবাদ থামাতে গিয়েই এই অবস্থা।” অন্যদিকে গোটা পরিস্থিতিকে ধামাচাপা দিতে এবং অস্বস্তি ঢাকতে একই কথা শোনা গেছে জেলা বিজেপির সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডলের গলায়। এদিন তিনি বলেন, “এটা একটা গ্রাম্য বিবাদ। এর সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই।” তবে বিজেপির বর্তমান এবং প্রাক্তন মন্ডল সভাপতি যেভাবে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়লেন, তাতে এই ঘটনাকে যে তৃণমূল অস্ত্র করবে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত একাংশ। এদিন এই ব্যাপারে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়ে ইলামবাজার ব্লক তৃণমূল সভাপতি ফজলুর রহমান বলেন, “বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে ঢাকতে এখন গ্রাম্য বিবাদ বলে প্রচার করা হচ্ছে। আমরা এই ব্যাপারে পুলিশকে নিরপেক্ষ তদন্ত করবার জন্য জানিয়েছি।” সব মিলিয়ে যেভাবে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ক্রমশ চরম আকার ধারণ করছে এবং যেভাবে বচসা থেকে হাতাহাতির রূপ নিচ্ছে, তা নিঃসন্দেহে যে বিজেপিকে ভাবাচ্ছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত অনেকেই। তবে দলের নেতাদের এই গন্ডগোল থামাতে এখন বিজেপি নেতৃত্ব কি পদক্ষেপ নেয়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -