এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > গুলি-বোমার লড়াইয়ে অগ্নিগর্ভ তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব! ভেরির কাঁচা টাকার ভাগই কি মূল কারণ?

গুলি-বোমার লড়াইয়ে অগ্নিগর্ভ তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব! ভেরির কাঁচা টাকার ভাগই কি মূল কারণ?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – আগামী বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বারবার তার দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন। শাসকদলের রাজনৈতিক উপদেষ্টা পিকেও বারবার ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্ব যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে তার রূপ দেখা যাচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাড়োয়ায়। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে কখনো কখনো বাড়ি, দোকান ভাঙচুর, কখনো বা ঘটছে অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, হাড়োয়া গ্রামে বেশ কয়েক হাজার বিঘা জুড়ে বৃহদাকৃতির মাছের ভেড়ি রয়েছে। এই ভেরি গুলির দখল নিয়ে বাম আমল থেকেই গন্ডগোল চলে আসছিল। তৃণমূলের সময়েও তা থামেনি। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মাঝে মাঝেই এ নিয়ে গন্ডগোল দেখা দেয়।

পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, হাড়োয়া এলাকার প্রায় ৭০০ বিঘা সরকারি খাস জমি ছিল। সরকারের তরফ থেকে কিছু দরিদ্র মানুষকে এগুলির পাট্টা দেওয়া হয়েছিল।পরবর্তীতে এই জমিতে মাছ চাষের ব্যবস্থা করা হয়। অভিযোগ পাট্টাধারীদের সামান্য অর্থ দিয়ে, বেশি অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা। আর এই অর্থের ভাগ নিয়ে চলছে সংঘর্ষ। ভেরি লিজ দিয়ে বছরে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করছে তৃণমূলের কিছু সদস্য। গ্রামবাসীদের অভিযোগ ক্ষমতাশালী তৃণমূল নেতাদের হাতে এই টাকা চলে যাচ্ছে। বিপুল পরিমাণ টাকা দলের ওপর মহলের ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। এজন্যই তারা সমস্ত কিছু দেখেও মুখ বুঝে সহ্য করছেন।খুব বড় মাপের গন্ডগোল হলে, তখন সামান্য কিছু একটা মিটিং বা কিছু আটক করা হয় কিছুদিনের জন্য। গ্রামবাসীদের অভিযোগ পুলিশ প্রশাসনের একটি অংশ এই কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন। এদিকে সাধারণ মানুষ বোমা ,গুলির দাপটে অনেক সময়ই গ্রামছাড়া হতে বাধ্য হচ্ছেন।

এভাবেই মৎস্য ভেরি থেকে কোটি কোটি টাকা শাসক দলের কিছু নেতার হাতে চলে যায়। পাট্টাধারীদের দের হাতে খুব সামান্যই আসে। পাট্টা ধারী স্বপন মুন্সি, বাদল আড়ৎদার, ভবেশ মুন্ডা, সুকান্ত মণ্ডল, ফজের আলি জানিয়েছেন পূর্বে প্রতি বছর বিঘা প্রতি তারা এগারো, বারো হাজার টাকা ভেরি মালিকদের কাছ থেকে পেতেন বর্তমানে তারা খুব সামান্যই পাচ্ছেন। পাট্টা ধারী ছিদাম মুন্ডা, পরিতোষ মণ্ডল, কাছেদ আলি, কমল পাত্র এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ” আগে বিঘা প্রতি বছরে ১১-১২ হাজার টাকা পেতাম। এখন তৃণমূলের তাণ্ডবের কারণে তা কমে চার-পাঁচশো টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। অনেক পাট্টা মালিক তো কিছুই পান না।’’

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

গত শনিবার হাড়োয়া বাজারে এই ভেরি দখল নিয়ে প্রচন্ড সংঘর্ষ দেখা দিল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর। বেশকিছু বাইক, দোকান ভাঙচুর করা হলো। তৃণমূলের পার্টি অফিস ভেঙে দেওয়া হলো। এই সংঘর্ষ সম্পর্কে হাড়োয়া পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সেইসঙ্গে প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা আব্দুল খালেক মোল্লা বলেছেন, ‘‘ হাড়োয়া ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল এবং তাঁর লোকজনেরা প্রায় সাতশো বিঘা জমির লিজের টাকা পুরোটাই আত্মসাৎ করছেন। গরিব মানুষকে তাঁদের প্রাপ্য লিজের টাকা না দিয়ে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছেন। প্রতিবাদ করতে গেলে দলেরই কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। বোমাবাজি করে গুলি ছুড়ে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে রাখা হয়েছে। ’’

তবে তাঁর প্রতি ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতা মৃত্যুঞ্জয়। মৃত্যুঞ্জয় মন্ডল হলেন মিনাখাঁর তৃণমূল বিধায়ক উষারানি মণ্ডলের স্বামী। এই ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ” আব্দুল খালেক মোল্লা এলাকার কিছু দুষ্কৃতীকে একত্রিত করে গরিব মানুষের লিজের টাকা আত্মসাৎ করছেন। গুলি-বোমা ওঁরাই মজুত করছেন। ওঁদের জন্যই হাড়োয়ায় মাঝে মধ্যেই গুলি-বোমা ছুড়ে আতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ এর প্রতিবাদে একত্রিত হয়েছেন।’’

দুই বিবাদী গোষ্ঠীর কথাই তৃণমূল দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কোর্ডিনেটর নারায়ণ গোস্বামী বলেছেন, ” হাড়োয়ায় গোলমালের পিছনে শুধু রাজনীতি নয়, ভেড়ির অর্থনীতিও জড়িয়ে আছে। এ বিষয়ে তৃণমূলের কেউ জড়িত থাকলে বরদাস্ত করা হবে না। ’’

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত পুলিশ ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে পুলিশের বসিরহাট জেলা সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো বলেছেন, ” ‘‘আমাদের কাছে কোনও পক্ষের কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে কেউ হাঙ্গামা বাধানোর চেষ্টা করলে তাকে ছাড়া হবে না।’’

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!