এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > স্বামী-স্ত্রী দুজনেই প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা-নেত্রী! তুবুও ঠাঁই ‘দরিদ্র’ তালিকায়! ক্ষোভ দলেই

স্বামী-স্ত্রী দুজনেই প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা-নেত্রী! তুবুও ঠাঁই ‘দরিদ্র’ তালিকায়! ক্ষোভ দলেই


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –ভয়াবহ দুর্যোগের পর থেকেই তৃণমূলের অনেক নীচুতলার জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ। বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের অনেক পঞ্চায়েত পদাধিকারীর ঘনিষ্ঠদের ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, অনেক তৃণমূল নেতা নিজের স্ত্রী এবং পুত্রের নাম করে সেই ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও নানা জায়গায় গ্রামবাসীর তরফে অভিযোগ উঠতে দেখা গেছে। স্বাভাবিক ভাবেই গোটা পরিস্থিতিতে অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পরিস্থিতি সামাল দিতে দলের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কড়া ব্যবস্থা। কিন্তু তারপরেও বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।

অভিযোগ, তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য কল্যাণ ঢালী এবং তার স্ত্রী রত্না ঢালী বাংলা আবাস যোজনায় দরিদ্র গৃহহীন হিসেবে নিজেদের নাম তুলে নিয়েছেন। স্বভাবতই গোটা ঘটনায় তৈরি হয়েছে বিতর্ক। তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি হয়ে কেন তিনি এই ভাবে দরিদ্র বলে নিজেদের নাম সেই তালিকায় তুলে নিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এলাকায়। জানা গেছে, 2012 সালের socio-economic কাস্ট সেন্সাস তৈরি হয়। আর তার ভিত্তিতেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্ট তৈরি হয়েছিল। যেখানে প্রায় 2 লক্ষ 66 হাজার পরিবারের নাম ওঠে। গত 2014-15 সালে সেই তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর নানা ক্ষেত্রে অভিযোগ ওঠে যে, ঘর পাওয়ার যোগ্য নয়, এমন বহু মানুষের হাতে সেই ঘর তুলে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে এই ঘটনার পরই অযোগ্যদের নাম বাদ দিয়ে সেখানে মোট 1 লক্ষ 75 হাজার পরিবারের নাম নথিভুক্ত হয়। কিন্তু সেই তালিকা নিয়েও তৈরি হয় বিতর্ক। পরবর্তীতে 2016 17 সালে আবার নতুন করে তালিকা তৈরি করা হয়। যেখানে নাম থাকে প্রায় 2 লক্ষ 98 হাজার 226 জনের। কিন্তু এই তালিকা নিয়েও এবার তৈরি হয়েছে বিতর্ক। তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য কল্যাণ ঢালি এবং তার স্ত্রী রত্না ঢালীর নামে কেন বাড়ি রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন অনেকেই। একাংশ বলছেন, এতেই তৃণমূলের দুর্নীতি ক্রমশ প্রকাশ্য চলে এল। মুখে যতই তৃণমূল স্বচ্ছতার কথা বলুক না কেন, নিজেদের দলের জনপ্রতিনিধিদের পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি করে শাসকদল ব্যাপক দুর্নীতি করছে বলে সরব হয়েছে বিরোধীরা।

এদিন এই প্রসঙ্গে রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, “তৃণমূলের নেতা জনপ্রতিনিধিরা নিশ্চিত হয়ে গেছেন যে কোনভাবেই তাদের দল আর রাজ্যে ক্ষমতায় আসছে না। তাই হাতের সামনে যা পাচ্ছেন, লুটে নিচ্ছে। সেটা আমপানের ক্ষতিপূরণের টাকা হোক, কিংবা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা।” সত্যিই তো তাই! এভাবে যদি তৃনমূলের নেতাকর্মীরাই নিজেদের জন্য সমস্ত কিছু নিতে থাকেন, তাহলে সাধারণ মানুষ সুবিধা পাবেন কোথায়?

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বিরোধীরা যে অভিযোগ করতে শুরু করেছে, তাতে এই ঘটনায় তৃণমূল যে আরও চাপে পড়বে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। কেন তিনি নিজের নাম এই বাড়ি তৈরীর তালিকায় ঢুকিয়ে দিলেন? এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের কল্যান ঢালী বলেন, “আমিতো গৃহহীন। আমি যে পৈতৃক বাড়িতে থাকি, সেটা ভাগবাটোয়ারার সময় মেজদার ভাগে চলে গিয়েছে। আমি সেই বাড়িতে আশ্রিত। যদিও 2018 সালে আমি বিষয়টা জানতে পারার পর প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছিলাম যে, ঘর আমরা নেব না। তারপরও কোনো কারণে তালিকা থেকে আমার নাম বাদ যায়নি। এবার আমরা এই কথা লিখিতভাবে জানিয়ে দেব। কোনভাবেই এই টাকা আমি নেব না।” তবে এখন চাপে পড়েই ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে তৃণমূল নেতা এই ধরনের কথা বলছেন বলে অভিযোগ করছেন সমালোচক মহলের একাংশ।

যদিও বা এই প্রসঙ্গে নদীয়া জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায় বলেন, “আমার সময় এই তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু হয়েছিল। নাম থাকলেও যারা যোগ্য নন, তারা কোনোভাবেই ঘরের টাকা পাবেন না।” তবে তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে যে কথাই বলা হোক না কেন, যেভাবে দুর্নীতির ঘটনায় নাম জড়াতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের, তাতে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল।

আর তার মধ্যে গোদের ওপর বিষফোঁড়া হিসেবে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় যেভাবে তৃণমূল নেতা এবং তার স্ত্রীর নাম দেখা গেল, তাতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে সরব হতে শুরু করেছে বিরোধীরা। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এভাবে যদি তৃণমূলের বিরুদ্ধে এই রকম বীভৎস অভিযোগ তুলে ময়দানে নামতে শুরু করে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো, তাহলে শাসকদল অনেকটাই চাপে পড়বে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলে। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!