এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > মুর্শিদাবাদে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে – জেলা কার্যালয়েই জেলা সহ-সভাপতিকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে গ্রেপ্তার কাউন্সিলার

মুর্শিদাবাদে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে – জেলা কার্যালয়েই জেলা সহ-সভাপতিকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে গ্রেপ্তার কাউন্সিলার

দলে গোষ্ঠী কোন্দল কমাতে এবং সঠিক কর্মীদের গুরুত্ব দিতে যখন বিভিন্ন জেলার নেতাদের কড়া বার্তা দিচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ঠিক তখনই সেই বিভিন্ন জেলার শাসকদলের বিভিন্ন সক্রিয় নেতারাই দলীয় গোষ্ঠী কোন্দলের শিকারে আহত হচ্ছেন। এবার বহরমপুরে তৃণমূলের জেলা কার্যালয়েই আক্রান্ত হলেন মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি অশোক দাস।

জানা যায়, মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের খাগড়া এলাকায় বাড়ি অশোক বাবুর। এলাকায় তিনি তৃণমূলের অত্যন্ত সক্রিয় কর্মী হিসেবেই পরিচিত। দিন থেকে রাত পর্যন্ত পার্টি অফিসে থেকে দলের নেতাকর্মী থেকে সাধারন মানুষের সাথে জনসংযোগ রক্ষা করেন তিনিই – বলছেন তাঁরই দলের সহকর্মীরা। এর পাশাপাশি জেলায় একজন সংস্কৃতি সম্পন্ন মানুষ হিসাবেও তাঁর যথেষ্ট সুনাম রয়েছে।

আর এহেন একজন মানুষের উপর আক্রমণ নেমে আসায়, রীতিমত হতবাক এই মুর্শিদাবাদ জেলার অনেক মানুষই। কেন এরকমটা হল? ঠিক কাদের দ্বারা এই আক্রমণের শিকার হলেন তিনি? সূত্রের খবর, এদিন বিকেলে দলের ১৯ শে জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশের প্রচার অভিযান নিয়ে বহরমপুর শহরে একটি বিশাল মিছিলের আয়োজন করে টাউন তৃণমূল কংগ্রেস। জানা গেছে, জর্জকোর্ট মোড় থেকে শুরু হওয়া এই মিছিলটি পথসভার মধ্য দিয়ে শেষ করা হয়।

আর এই দলীয় কর্মসূচি শেষ করেই এদিন জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি অশোক দাস সহ অন্যান্য নেতারা দলের জেলা কার্যালয়ে যান। এদিকে সাড়ে পাঁচটা নাগাদ অন্যান্য নেতাকর্মীরা সেই দলীয় অফিস থেকে চলে গেলেও সেই সময় অশোকবাবু, এক মহিলা তৃণমূল কর্মী ও কয়েকজন যুবক সেই পার্টি অফিসে ছিলেন। অভিযোগ, তখনই পার্টি অফিসে ঢুকে আচমকাই সশস্ত্র অবস্থায় কয়েকজন দুষ্কৃতী সেই পার্টি অফিসে তাণ্ডব চালানোর পাশাপাশি অশোক দাসকে চেয়ার থেকে মেঝেতে ফেলে দিয়ে বাঁশ ও চেয়ার দিয়ে বেধড়ক মারধর করে।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

এদিকে পার্টি অফিসের ভেতরে চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন সেখানে গেলে, দুষ্কৃতীরা সেই এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়। এদিকে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি অশোক দাসকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু কে বা কারা তাঁর উপরে এই আঘাত হানলেন? এদিন এই প্রসঙ্গে সেই বেসরকারি নার্সিংহোমের বেডে শুয়েই তৃণমূলের অশোক দাস বলেন, “আচমকা কয়েকজন দুষ্কৃতী পার্টি অফিসে ঢুকে আমার ওপর এই হামলা করেছে”।

এদিকে জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতির ওপর এহেন হামলার ঘটনায় নাম জড়িয়েছে বহরমপুর পুরসভার তৃণমূলেরই কাউন্সিলর কানাই রায়ের। ইতিমধ্যেই, কানাইবাবুকে আটকও করেছে পুলিশ। এদিকে অশোক দাসের উপর এহেন হামলার ঘটনায় জেলার অন্যান্য নেতাদের কাছে ফোন করে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়েছেন জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলে জানা গেছে। কিন্তু দলেরই কাউন্সিলার এইভাবে দলেরই জেলার সহ সভাপতির ওপর হামলার অভিযোগে আটক হওয়ায় এখন প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদলের জেলা নেতৃত্ব।

তবে এই ব্যাপারে গোষ্ঠীকোন্দলের কথা পুরোপুরি অস্বীকার করে মুর্শিদাবাদ জেলার সভাপতি সুব্রত সাহা এদিন বলেন, “আমি এই ঘটনায় মর্মাহত। আমি ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করুক”। অন্যদিকে অশোক দাসের উপর এহেন হামলার ঘটনায় সমালোচনায় সরব হয়েছেন তৃনমূলের বহরমপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান নীলরতন আঢ্য। এদিন তিনি বলেন, “অশোকদা নিষ্ঠার সঙ্গে পার্টি করেছেন। তার উপর হামলার ঘটনা কোনোভাবেই মানা যায় না”। কিন্তু, বিরোধীরা এই ঘটনার পিছনে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করছেন। সব মিলিয়ে এবার জেলায় তৃণমূল সহ সভাপতির ওপর হামলার ঘটনায় মুর্শিদাবাদে শাসকের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই ফের প্রকাশ্যে এল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!