এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডে নয়া মোড়, দফায় দফায় তল্লাশির পর ৪ জনকে আটক পুলিশের

জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডে নয়া মোড়, দফায় দফায় তল্লাশির পর ৪ জনকে আটক পুলিশের


জিয়াগঞ্জে ঘটে গেছে এক চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ড। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটে চলেছে। আর সেই ঘটনাকে অনুসরণ করে এবার শারদ উৎসবের আবহে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে এক নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে গেছে। দশমীর দিন একই বাড়ির তিন জন মানুষের প্রাণ গেল দুষ্কৃতীর হাতে। অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীরা বাড়িতে ঢুকে একের পর এক হত্যা করে চলে গেলেও কেউ কিছু টের পেলেন না। কিভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে প্রত্যেকেই ধন্দে। দশমীর দিন সকালে মৃত স্কুল শিক্ষকের বাড়ি থেকে কোনো আওয়াজ না পেয়ে তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করেন প্রতিবেশীরা এবং সেখানেই বাড়ির 3 জন সদস্যকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। নৃশংস ভাবে তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

পুলিশি তদন্তে এবার চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। রহস্য ক্রমশ জটিল হচ্ছে। এদিন তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে সৌভিক বণিক নামে এক ব্যক্তির নাম আসে। শুক্রবার বিকেলে রামপুরহাটের 9 নম্বর ওয়ার্ডে সৌভিকের বাড়িতে পুলিশ বিশাল বাহিনী নিয়ে পৌঁছায়। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ বেশ কিছু কাগজপত্র উদ্ধার করে। নিহত শিক্ষক বন্ধু প্রকাশ পালের বন্ধু হলেন সৌভিক বণিক। নিহত বন্ধু প্রকাশের শাশুড়ি দাবি করেছেন, চড়া সুদে 7-8 লাখ টাকা ধার করে সৌভিককে দিয়েছিলেন প্রকাশ। তাই অনুমান, আর্থিক লেনদেনের বিবাদের জেরেই বন্ধু প্রকাশ পাল ও তার পরিবারকে খুন হতে হয়েছে। এদিন রাতে দ্বিতীয়বার পুলিশ বাহিনী পৌঁছায় সৌভিকের বাড়িতে। এবং রাতেই চারজনকে আটক করা হয়।

এদিন সৌভিকের বাড়িতে দফায় দফায় তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। দীর্ঘ জেরার পর দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো দুজনকে পুলিশি হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা চলছে। যদিও দীর্ঘক্ষণ কেটে যাবার পরেও সৌভিক এখনও বেপাত্তা হয়ে রয়েছে। অভিযুক্তের হদিশ পেতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু সন্দেহজনকভাবে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে অন্য আরেক যুবকের নাম উঠে এসছে। কে সেই যুবক? বছরে 6 মাস বাড়ির বাইরে ওই যুবক থাকতো বলে জানা গেছে। দশমীর দিন নিহত শিক্ষকের বাড়ি থেকে এক যুবককে বেরিয়ে যেতে দেখেন স্থানীয়রা। পুলিশের মনে প্রশ্ন উঠেছে এই যুবকের কি ভূমিকা আছে ওই শিক্ষক দম্পতি হত্যাকাণ্ডের পেছনে।

অন্যদিকে জিয়াগঞ্জের খুনে এবার উঠে এসেছে পরকীয়া প্রসঙ্গ। পুলিশি তদন্তে যেসব তথ্য উঠে আসছে, তাতে পরকীয়া ধারণার পেছনে স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করছে। মৃত পরিবারের বাড়ি থেকে নিহতের স্ত্রী বিউটি মন্ডল এর লেখা একটি চিঠি থেকে থেকে সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং তাদের গর্ভস্থ সন্তানকে নিয়ে যে অশান্তি ছিল তা পরিষ্কার। তবে ব্যবসায়িক শত্রুতা নাকি সম্পর্কের টানাপোড়েন ? কি কারণে এই চারটি প্রাণের বলি হলো তা নিয়ে ধন্দ এখনো কাটেনি।

জিয়াগঞ্জে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইতিমধ্যে রাজ্যপাল তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এরাজ্যের নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে তিনি দাবি করেছেন এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত এবং নিরপেক্ষ তদন্তের। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতীয় মহিলা কমিশন হস্তক্ষেপ করেছেন। বিরোধীরা ইতিমধ্যে দাবি তুলেছেন, নিহত বন্ধু প্রকাশ মণ্ডল আরএসএসের কর্মী। সেই সূত্রে তাঁদের দাবি এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে তৃণমূল নিযুক্ত দুষ্কৃতীরা আছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখনো কিছু বলা যাবে না। এই ঘটনার ওপর কড়া নজর রেখেছে পুলিশ প্রশাসন। রাজনৈতিক মহল নজর রেখেছে ঘটনার রেশ কোনদিকে যায় তার দিকে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!