জ্যোতি বসুকেই ঘুরে দাঁড়াতে শেষ ভরসা করছে সিপিআইএম রাজ্য July 10, 2018 রাজ্যে বামেদের ক্ষমতা ক্রমশ কমছে। দফায় দফায় হওয়া নির্বাচন উপনির্বাচন সেই নজিরই রেখে যাচ্ছে। ৩৪ বছর ধরে যে রাজনৈতিক দল দাপিয়ে বেরিয়েছে গোটা বাংলায়,সেটাই এখন একটা ক্ষয়িষ্ণু শক্তিতে পরিনত হয়েছে। তাই লোকসভা ভোটকে টার্গেট করে ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন পন্থা বের করেছে রাজ্যের বামপন্থী শিবির। আর এক্ষেত্রে তাঁরা হাতিয়ার করেছে বামেদের বিশিষ্ট নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতিবসুর ভাবমূর্তিকে। জানা গেছে, এই বাম নেতার ১০৫ তম জন্মদিনে স্যোশাল মিডিয়ার দৌলতে লোকসভা নির্বাচনের প্রচার পর্ব শুরু করেছে বাঁকুড়ার বামশিবির। এদিন সকাল থেকেই বামেদের নিজস্ব জেলা কমিটির ‘অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ’ -এ পাশাপাশি ট্যুইটার,ইউটিউব-কেও হাতিয়ার করে প্রচারপর্ব সারতে শুরু করে দিল তারা। সিপিএম বাঁকুড়া জেলা কমিটির ‘অফিসিয়াল’ পেজে জ্যোতিবসুর জন্মদিনে তাঁর ছবির সঙ্গে লেখা পোস্ট করে নীচে ট্যাগ করে দেওয়া হল #JyotiBasuLongLive ও #জ্যোতিবসুলালসেলাম। এভাবেই বামেদের বর্ষীয়ান হেভিওয়েট নেতার ভাবমূর্তিকে ব্যবহার করে প্রচার পর্ব শুরু করলেন তাঁরা। এ প্রসঙ্গে, জেলা সিপিএমের এক নেতা জানান যে গত ২১ জুন প্রথম বামফ্রন্ট সরকারের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে এবং ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারের সাফল্য প্রচারে ফেসবুকে থেকে নজিরবিহীন সাড়া মিলেছে। এটা দেখেই এবার জ্যোতি বসুর জন্মদিনেও সেই মনোযোগ পাওয়ার জন্য ধারাবাহিকতাটি বজায় রাখা হলো। এর সঙ্গে জুড়ে বাম নেতাটি আরও বলেন যে, সোশ্যাল মিডিয়া সাধারণ মানুষের কাছে দলের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার সবথেকে সেরা মাধ্যম। বাম তরফ দাবীতে জানিয়েছে, দক্ষিণপন্থী দলগুলি তো পেশাদারী লোক নিয়োগ করে নিয়ম মেনো নিজেদের প্রচার সারছে তাহলে তাঁরাই বা এ পথ অবলম্বন করবেন না কেন! এবার জেলা জেলায় বিজেপি ও তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া টিমের সঙ্গে টেক্কা দিতেই জেলায় জেলায় কর্মীদের নিয়ে তৈরী বামেরাও তৈরি করেছে সোশ্যাল মিডিয়া টিম। আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে ——————————————————————————————- এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে। সিপিএমের এই নতুন উদ্যোগের জের তাদের সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধি হবে বলে আশা রাখছেন বাঁকুড়ার বাম কর্মী এবং সমর্থকরা। গতবারের লোকসভা ভোটেই বাঁকুড়ার দুটো লোকসভা কেন্দ্রই বিরোধীদের আওতায় চলে গেছিলো। বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের দীর্ঘদিনের সাংসদ, লোকসভার প্রাক্তন রেলওয়ে স্ট্যাণ্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান, হেভিওয়েট সিপিএম নেতা, তুখোড় রাজনীতিবিদ বাসুদেব আচারিয়া পরাজিত হন। তাকে হারিয়েছিলেন তৃণমূল তরফ থেকে দাঁড়ানো রাজনীতি ক্ষেত্রের নতুন প্লেয়ার তথা রুপোলী পর্দার জনপ্রিয় মুখ মুনমুন সেন। বিষ্ণুপুরের ছবিটাও একইরকম। এখানেও তৃণমূল প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ বাম প্রার্থীকে হারিয়ে লোকসভায় যাওয়ার টিকিট পেয়ে যান। এরকম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জেলা সিপিএম- এর কাছে লোকসভার হারানো দুটো কেন্দ্র ফিরে পাওয়া ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে আর কড়া চ্যালেঞ্জেরও। জেলায় বিজেপি এবং তৃণমূলের যেভাবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে সেখানে সিপিএম-এর নতুন করে জায়গা করে নেওয়া একরকম সাপে বর পাওয়ার মতো। তবুও এবার হাল ছাড়তে নারাজ জেলা সিপিএম শিবির। জ্যাোতিবসুর ভাবমূর্তি পাশা পাল্টে দেবে বলেই আশা রাখছেন বাম তরফের জেলা নেতৃত্বরা। তবে জ্যোতি বসুর জন্মদিনে ফেসবুকে প্রচার নিয়ে জেলা সিপিএম-এর তরফ থেকে তেমন কোনো উল্লেেখযোগ্য মন্তব্য পাওয়া যায়নি। শুধু এটি একটি ‘ধারাবাহিক প্রক্রিয়া’ এবং ‘স্যোশাল মিডিয়া বর্তমানের সবথেকে জনপ্রিয় প্রচার মাধ্যম’, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মতো নির্বাচনী প্রচারে তাঁরাও ব্যবহার করছে,এমনটাই জানালেন। তবে এটা বুঝতে আর বাকি থাকলো না,২০১৯ এর লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই স্যোশাল মিডিয়াকে প্রচার মাধ্যম করেছেন তাঁরা। এবং এই প্রক্রিয়ায় জ্যোতিবসুর মতো বিশিষ্ট বামনেতার জনপ্রিয়তাকে কাজ লাগিয়েই ফিল্ডে ফেরার প্ল্যান তাঁদের। আপনার মতামত জানান -