এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া > নীতি আদর্শ ছেড়ে তৃণমূলের পথে হাঁটলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হবে! বিস্ফোরক দিলীপ!

নীতি আদর্শ ছেড়ে তৃণমূলের পথে হাঁটলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হবে! বিস্ফোরক দিলীপ!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – 2021 এর বিধানসভা নির্বাচন তাদের পাখির চোখ। গত লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে বিজেপির 18 টি আসন পাওয়ার পেছনে যেমন তাদের জনপ্রিয়তা ছিল, ঠিক তেমনই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং বিদ্রোহী নেতাদের ভোটব্যাঙ্ক গিয়েছিল পদ্ম শিবিরে। যার ফলে বিজেপি অভূতপূর্ব ফল করেছিল।

তবে তৃণমূলের পথে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব কাটা হলেও, তা দেখে শিক্ষা নেয়নি ভারতীয় জনতা পার্টি। লোকসভা নির্বাচনে ভালো ফলাফল করার পরেই বিভিন্ন জায়গায় বিজেপিতে তীব্র দ্বন্দ্ব দেখা দিতে শুরু করে। সাম্প্রতিককালে আদি বিজেপি কর্মী বনাম নব্য বিজেপি কর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষ তৈরি হয়। এমনকি বিজেপি রাজ্য কমিটি গঠন নিয়েও পুরনো নেতাকর্মীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। নানা মহলে জল্পনা তৈরি হয় যে, এবার বিজেপিতে পদ না পেয়ে অনেকেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেবেন।

আর রাজ্য রাজনীতিতে যখন এই জল্পনা তৈরি হয়েছে, ঠিক তখনই এবার তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা থাকলে কোনোভাবেই তাকে রেয়াত কড়া হবে না বলে কড়া বার্তা দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সূত্রের খবর, শুক্রবার পুরুলিয়ার একটি হোটেলে সেই জেলার 48 টি মন্ডল সভাপতি, মোর্চা সভাপতি এবং জেলা কমিটির পদাধিকারীদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন দিলীপবাবু।

আর সেখানেই বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনভাবেই যে তৃণমূলকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া যাবে না, তা পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। কার্যত কড়া ভাষায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দিলীপ ঘোষ বলেন, “কাজে ফাঁকি দেওয়া চলবে না। আপনার দ্বারা না হয়ে থাকলে জায়গা ছেড়ে দিন। অনেক লোক আছে। কোনোভাবেই দুর্নীতিবাজদের ঠাঁই নেই। তাদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের নীতি আদর্শ ছেড়ে তৃণমূলের পথে হাঁটলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হবে। তোলাবাজির কারণে ফাঁকিবাজদের আড়াল করলে কার্যকর্তাকেও পদ হারাতে হতে পারে।”

আর বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যখন ভয়াবহ দুর্যোগের আর্থিক ক্ষতিপূরণ নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলছে বিজেপি, ঠিক তখনই তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপির বেশকিছু পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই গোটা ঘটনায় চাপে পড়েছিল গেরুয়া শিবির। তাই এবার সেই দুর্নীতিবাজদের যে দলে কোনো জায়গা হবে না, তা বৈঠকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিলেন দিলীপ ঘোষ।

পাশাপাশি তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা করে কেউ যদি চলতে চায়, তাহলে তাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি‌। অর্থাৎ দলের ভেতরে এখন কোনো রকম বিশৃংখলা যে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব বরদাস্ত করবে না, তা কার্যত পরিষ্কার হয়ে গেল দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। একাংশ বলছেন, তৃণমূলের ওপর প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া কাজ করার কারণে মানুষ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন।

কিন্তু বিজেপিতে বেশ কিছু ঘটনা ঘটায় অনেকেই গেরুয়া শিবিরের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হতে শুরু করেছিলেন। তবে এদিন পুরুলিয়া জেলা কমিটির বৈঠক থেকে দুর্নীতি, স্বজনপোষণ যে কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না, তা বলে ফের আরও একবার মানুষের মনে বিজেপির প্রতি বিশ্বাস আনার চেষ্টা করলেন দিলীপ ঘোষ বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের।

এদিন এই প্রসঙ্গে পুরুলিয়া জেলা বিজেপির সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, “রাজ্য সভাপতি আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যের মানুষ আমাদের উপর আস্থা রাখছেন। তাদের আস্থা, ভরসার উপযুক্ত মর্যাদা দিতে হবে।”

অর্থাৎ সামনে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে মানুষের মনে বিজেপি সম্পর্কে যাতে কোনো কু-প্রভাব না পড়ে, তার জন্যই দিলীপ ঘোষ পুরুলিয়া জেলায় এসে নেতা-কর্মীদের এই সমস্ত বার্তা দিয়ে গেলেন। কিন্তু বিজেপির রাজ্য সভাপতি কড়া বার্তা দিয়ে যাওয়ার পরেও, বিজেপি নেতৃত্ব কতটা সুচারুভাবে সংগঠনকে শক্তিশালী করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই দিতে পারে, সেদিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!