নজরে বিধানসভা নির্বাচন, লকডাউন শিথিল হতেই বিধায়ক মন্ত্রীকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে তৃণমূল নেত্রী, জোর জল্পনা! উত্তরবঙ্গ কলকাতা রাজ্য June 12, 2020 দলের গোষ্ঠী কোন্দলের কারণেই গত 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় একের পর এক নির্বাচনে পরাজিত হতে হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। তবে লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট আসন হারানোর পর সেখানে অর্পিতা ঘোষকে দায়িত্ব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর দায়িত্ব পাওয়ার পর ধীরে ধীরে সংগঠনের বিস্তার ঘটাতে শুরু করেন অর্পিতা দেবী। কিন্তু তা সত্ত্বেও দলের গোষ্ঠী কোন্দল কোনমতেই আয়ত্তে আনা যাচ্ছিল না। মাঝে চলে আসে করোনা পরিস্থিতি এবং সেই করো নাকে আটকাতে নেওয়া হয় লকডাউনের সিদ্ধান্ত। যার ফলে সমস্ত রকম রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধ ছিল। কিন্তু এবার ধীরে ধীরে সেই লকডাউন শিথিল হতেই ময়দানে নেমে পড়ল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। সূত্রের খবর, আগামী 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বুধবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের দেবীকোট ভবনে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ডিজিটাল মাধ্যমের ওপর সব থেকে বেশি জোর দেওয়ার কথা শোনা যায় তৃণমূল নেতৃত্বের গলায়। এদিন তৃণমূলের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ, জেলা তৃণমূলের নতুন কার্যকরী সভাপতি তথা গঙ্গারামপুরের বিধায়ক গৌতম দাস, মন্ত্রী বাচ্চু হাসদা সহ অন্যান্যরা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - আর সেখানেই আগামী বিধানসভা নির্বাচনের জন্য কিভাবে রণকৌশল তৈরি করতে হবে এবং কিভাবে এখন থেকেই মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ শুরু করে দিতে হবে, তার ব্যাপারে বার্তা দেন অর্পিতাদেবী। দলের সমস্ত শাখা সংগঠনকে একত্রিত হয়ে মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তবে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, এদিন তৃণমূলের এই জেলা কমিটির বৈঠক থেকে উঠে এসেছে, সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্বের কথা। এখন থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে বেশি করে সক্রিয় থাকতে হবে, তা এই বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে খবর। এদিন এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ বলেন, “আমাদের জেলা দীর্ঘদিন ধরে গ্রীন জোনে থাকায় দলীয় কর্মসূচি একেবারে বন্ধ থাকেনি। আমি নিজে সামাজিক গুরুত্ব মেনে শহরের ওয়ার্ড কমিটি এবং ব্লক ভিত্তিক কমিটির মিটিং করেছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা বড় ধরনের কোনো জনসভা করার পক্ষপাতি নই। সামাজিক দূরত্বকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কর্মীদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ গড়ে তুলছি।” অর্থাৎ লকডাউনের পরবর্তী সময়কালে অনলাইনে ভার্চুয়াল সভার মাধ্যমে অমিত শাহ বাংলার বিজেপি নেতা কর্মীদের উজ্জীবিত করার সাথে সাথেই তৃণমূল যে এখন সেই ভার্চুয়াল মাধ্যমকে বেশি গুরুত্ব দিতে চলেছে, তা অর্পিতা ঘোষের কথায় আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও বা বিরোধীদের তরফ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের এই বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। এদিন এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সিপিএমের সম্পাদক নারায়ন বিশ্বাস বলেন, “আমরা ভোটের জন্য রাজনীতি করি না। সাধারণ মানুষের পাশে থাকাই আমাদের উদ্দেশ্য। আমরা সেটাই করে চলেছি। পরের বছর বিধানসভা ভোটের জন্য আমাদেরও আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এই মুহূর্তে আমরা সাধারন মানুষের হয়েই কাজ করব।” অন্যদিকে এই ব্যাপারে অর্পিতা ঘোষকে কটাক্ষ করে বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমরা করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে ছিলাম। এখন আমরা রাস্তায় নেমে প্রকাশ্য সভায় পথে যাচ্ছি না। অমিত শাহের ডিজিটাল সমাবেশের মতই উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোর জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সভার আয়োজন করবে। 2021 সালে বিধানসভা নির্বাচনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে আমরা ছোট ছোট কর্মী সম্মেলন চালিয়ে যাচ্ছি। বিধানসভা নির্বাচনে 6 টি কেন্দ্র থেকে দলীয় প্রার্থীদের জয়ী করতে রণকৌশল তৈরীর কাজ চলছে।” সব মিলিয়ে এবার লকডাউন কিছুটা শিথিল হতে না হতেই শাসক থেকে বিরোধী প্রত্যেকেই নিজেদের মত করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। আর এই প্রস্তুতির অন্যতম মাধ্যম যে এখন সোশ্যাল মিডিয়া, তা কার্যত পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে সকলের বক্তব্যে। আপনার মতামত জানান -