এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পুজোর আগেই রাজ্যবাসীর জন্য বড়োসড়ো উপহার দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী, করলেন বড় ঘোষণা

পুজোর আগেই রাজ্যবাসীর জন্য বড়োসড়ো উপহার দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী, করলেন বড় ঘোষণা


বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি এবং ঘূর্ণিঝড় আমফান এর কারণে সাধারণ গরিব মানুষের দুর্দশা চরমে উঠেছে। একদিকে লকডাউন চলছে করোনা পরিস্থিতি আটকানোর জন্য। কিন্তু লকডাউন এর কারণে রুজি রোজগারে পড়েছে টান। তার সাথেই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সম্প্রতি মাথার উপর থেকে ছাদটাও গেছে। এই পরিস্থিতিতে এবার জনদরদী মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, রাজ্যের 10 লক্ষ গরিব মানুষকে এক লাখ কুড়ি হাজার টাকার বিনিময়ে বাড়ি তৈরী করে দেওয়া হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর তড়িঘড়ি এই রাজ্যের 4 লক্ষ 21 হাজার মানুষের তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে, যাদের ঘর তৈরি হবে নতুন করে। জানা গেছে, এ রাজ্যের 22 টি জেলার প্রত্যেক গরিব মানুষ বাংলার আবাস যোজনার অন্তর্গত হবেন। সূত্রের খবর, আবাস যোজনার নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেকে একটি করে শোয়ার ঘর, বারান্দা, রান্নার জায়গা এবং শৌচাগার পাবেন। পুজোর আগেই এই নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য প্রশাসনিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

গত 21 এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এবং গরিব মানুষকে কাজের সুযোগ দেওয়ার জন্য 100 দিনের কাজ, বাংলার আবাস যোজনায় গরিব মানুষের বাড়ি এবং গ্রামীণ সড়ক যোজনার মাধ্যমে রাস্তা নির্মাণসহ একগুচ্ছ প্রকল্প রূপায়ণ করার নির্দেশ দেন। সেইমতো তালিকা প্রস্তুত করা হয় আবাস যোজনার। যাদের মাথার ওপর কোন পাকা ছাদ নেই, তারাই এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। যাদের নাম তালিকায় থাকবে তাদের ব্যাংক একাউন্টে 3 কিস্তির মাধ্যমে বাড়ি তৈরির এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা পৌঁছে যাবে বলে জানা গেছে।

তবে সূত্রের খবর, জঙ্গলমহল এলাকার মানুষরা প্রত্যেকে পাবেন 1 লক্ষ 30 হাজার টাকা। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন রাজ্যের প্রত্যেকটি প্রশাসনিক বৈঠকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে এই টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে বরাবরের মতো যেন কোনো অভিযোগ না আসে। যদি কোন অভিযোগ কারও বিরুদ্ধে ওঠে তাহলে সেই ব্যক্তিকে চরম শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে সে কথাও জানান তিনি। আপাতত উত্তর 24 পরগনা, দক্ষিণ 24 পরগনা, মুর্শিদাবাদ সহ বিভিন্ন বড় জেলাগুলি থেকেই এই আবাস যোজনায় লোকজন বেশি স্থান পেয়েছেন বলে জানা গেছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে এই আবাস যোজনার কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য 100 দিনের কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার যিনি গত সাত মাস আগে চলে গিয়েছেন পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে, সেই দিব্যেন্দু সরকারকে আবার পঞ্চায়েত দপ্তরের সচিব করে ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে এও জানিয়েছিলেন, 100 দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত যেসব গরীব শ্রমিকরা আছেন তাদেরকে যেন আবাস যোজনায় যুক্ত করা হয় কাজের জন্য।

তাহলে গরীব মানুষদের হাতে কিছু টাকাও আসবে এবং সহজে বাড়িও তৈরি হয়ে যাবে। এবারের ঘূর্ণিঝড়ে যাদের মাথার ওপর থেকে ছাদ চলে গেছে, তারাও এই আবাস যোজনার অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে খবর, গত আর্থিক বছরেও বাংলার আবাস যোজনায় প্রায় 10 লক্ষ 83 হাজার বাড়ি তৈরীর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রাও পঞ্চায়েত দপ্তর পূরণ করতে পারেনি এই কারণে।

আপাতত অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য কেন্দ্র থেকে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে আগামী 30 জুন পর্যন্ত বলে জানা গেছে। তবে রাজ্য সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনো পর্যন্ত 10 লক্ষ 8 হাজার বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাই কেন্দ্রের লক্ষ্য পূরণে হয়তো আর বেশিদিন সময় লাগবে না। অন্যদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে নতুন আর্থিক বছরে আরো দশ লক্ষ বাড়ি তৈরি হবে আবাস যোজনায়। যে বাকি 5 লাখ 79 হাজার লোক ঘর পাননি, তারাও এই যোজনায় যুক্ত হয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে জানা গিয়েছে পূজোর মধ্যেই 10 লক্ষ বাড়ি তৈরীর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। এ প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় দাবি করেছেন, বাংলার আবাস যোজনায় গত কয়েক বছর ধরে দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে আছে পশ্চিমবঙ্গ। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর এভাবে আবাস যোজনা ঘোষণা করার পেছনে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি অন্য কারণ অনুসন্ধান করছেন। তাদের মতে, সামনের বছর অর্থাৎ 2021 এ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে।

সেই নির্বাচনে নিজেদের পালে হাওয়া টানতে এভাবে জনদরদী মুখ দেখাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি আবাস যোজনার কারণে কিছু গরিব মানুষ ঘর পায়, মাথার ওপর ছাদ পায় তাহলে তার থেকে ভালো আর কিছুই হবে না। তবে বিরোধীদের দাবি, গরিব মানুষের নামে টাকা ধার্য করা হলেও সেই টাকা কিছু মুষ্টিমেয় মানুষের হাতে পৌঁছে যায় যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এবার মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলার আবাস যোজনার কাজ কিভাবে এগোয়, সে দিকে লক্ষ্য রাখবে ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!