এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > মানবাধিকার কমিশন পৌছতেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, ব্যাপক চাপে শাসকদল!

মানবাধিকার কমিশন পৌছতেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, ব্যাপক চাপে শাসকদল!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে যথেষ্ট চাপে রয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তিন সদস্য রাজ্যে পা রাখেন। যেখানে উত্তর 24 পরগনা থেকে শুরু করে কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করতে দেখা যায় তাদের। আক্রান্তদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ খবর নিতে দেখা যায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের। যার জেরে এমনিতেই স্বস্তিজনক জায়গায় নেই ঘাসফুল শিবির। কেননা ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই তাদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মীরা ঘরছাড়া বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম থেকে গোটা বিষয়ে উস্মা প্রকাশ করে মানবাধিকার কমিশন রাজ্যে এলে তাদের যাতে রাজ্য সরকার সাহায্য করে, তার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর সেই মত করেই রাজ্যে পা রেখেছে মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা। তবে মানবাধিকার কমিশন যখন কোচবিহার জেলার বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে আক্রান্তদের কথা শুনছেন, ঠিক তখনই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এল। যেখানে কোচবিহার তুফানগঞ্জ 2 নম্বর ব্লকের ফলিমারী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, এদিন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ধনেশ্বর বর্মনের সঙ্গে স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি নিরাঞ্জন সরকারের গোষ্ঠীর ব্যাপক সংঘর্ষ তৈরি হয়। যে ঘটনার ফলে চারজন ব্যক্তি আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলে খবর। স্বাভাবিক ভাবেই মানবাধিকার কমিশন যখন কোচবিহারে রয়েছে, তখন তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সংঘর্ষের ঘটনা সামনে আসার পরেই বিরোধীরা যে বাড়তি হাতিয়ার পেয়ে গেল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

পাশাপাশি এই গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেসের চাপ যে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেল, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। একাংশ বলছেন, তৃণমূল কেন নিজেদের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা অটুট রাখতে পারছে না? কেন এভাবে তৃতীয়বার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দল ক্ষমতায় আসার পরেও প্রকাশ্যে চলে আসছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব?

কেন এইরকম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব হল? এদিন এই প্রসঙ্গে ব্লক তৃনমূলের সভাপতি ধনেশ্বর বর্মন বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতি এবং ভানুকুমারি 2 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতি ঠিকমত কাজ করছেন না ব্লক নেতৃত্ব এবং জেলা নেতৃত্ব কোনো কথা শুনছে না। বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে তারা যুক্ত হয়ে রয়েছেন। এই অবস্থায় সাংগঠনিক কাজ চালানোর জন্য ওই সমস্ত এলাকায় নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটা সহ্য করতে না পেরে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

যদিও বা ব্লক সভাপতির এই অভিযোগ মানতে নারাজ অঞ্চল সভাপতি নিরঞ্জন সরকার। এই ব্যাপারে পাল্টা যুক্তি দিতে দেখা গেছে তাকে। এদিন তিনি বলেন, “বুধবার একটা বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে আমাকে ডাকা হয়নি। বৈঠক শেষে ওদের নিজেদের মধ্যেই গন্ডগোল হয়েছে। এর সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই‌। ফলিমারী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নদীর বালি, পাথর নিয়ে যে কালোবাজারি চলে আসছে, সেই কাজে ধনেশ্বরকে সমর্থন না করার জন্যই এই অভিযোগ করা হচ্ছে।”

অর্থাৎ এক পক্ষ আর এক পক্ষের বিরুদ্ধে যুক্তি দিয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে প্রকাশ্যে এনে জেলা নেতৃত্বকে চাপের মুখে ফেলে দিলেন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কেন এখনও পর্যন্ত গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দেওয়া যাচ্ছে না? তবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সম্পূর্ণ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিন এই ব্যাপারে কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক রাহুল রায় বলেন, “গোষ্ঠী কোন্দলের কোনো বিষয় নেই। তবে কি হয়েছে, সেই ব্যাপারে ব্লক সভাপতির কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা যখন হিংসার ঘটনা নিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কোচবিহারে, তখন তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রশ্ন তুলে দিল। এক্ষেত্রে মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা এই বিষয় তুলে ধরে রাজ্যের জ্বলন্ত হিংসার ব্যাপারে রিপোর্ট পেশ করতে পারে। যার ফলে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে আসায় যেমন অস্বস্তিতে পড়ে গেল শাসক দল, ঠিক তেমনই যদি এই ব্যাপারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তাহলে ব্যাপক চাপের মুখে পড়ে যাবে ঘাসফুল শিবির। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!