মতুয়া ভোটব্যাংকে প্রবলভাবে গেরুয়া প্রভাব বাড়ছে বলেই কি বনগাঁ লোকসভা নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনায় ঘাসফুল শিবির? নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য February 18, 2019 উত্তর 24 পরগনার ঠাকুরনগরের মতুয়া ভোটকে নিয়ে বর্তমানে রাজ্যের শাসক দল বনাম বিরোধী দলের মধ্যে তীব্র দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে। কিছুদিন আগেই সেই মতুয়াতে এসে বড়মা বীণাপাণি দেবীর জন্ম শতবর্ষ উদযাপনে সেখানকার এলাকাবাসীর জন্য একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এরপরই পাল্টা সেই ঠাকুরনগরের সভা করতে আসেন বিজেপির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রীয় সরকার মতুয়াদের পাশে রয়েছে এই রকম বিভিন্ন কথা তুলে ধরে বড়মা বীণাপাণি দেবীর সঙ্গে দেখা করে তার পা ছুঁয়ে প্রনাম করেন প্রধানমন্ত্রী। আর এই সভা এবং পাল্টা সভাকে ঘিরে যখন তীব্র রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়েছে মতুয়ার ঠাকুর পরিবারে, ঠিক তখনই সম্প্রতি ঠাকুর পরিবারেরর অন্যতম সদস্য শান্তনু ঠাকুর দাবি করেন যে, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে আনা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস যাতে সমর্থন জানায় সেজন্য বড়মা বীণাপাণি দেবী নিজের সই করা একটি চিঠি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠিয়েছেন। তবে এই ঘটনার বিরোধিতা করে বড়মা বীণাপাণি দেবী কোন চিঠিতে সই করেননি তার সই জাল করা হয়েছে বলে সেই ঠাকুর পরিবারের সদস্য মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর ও তাঁর ছেলে শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে গাইঘাটা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সেই ঠাকুর পরিবারের আরেক সদস্যা তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মমতা বালা ঠাকুর। ফলে সবুজ বনাম গেরুয়ার দ্বন্দ্বে এখন রীতিমতো ফুটতে শুরু করেছে সেই ঠাকুরনগর। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিকে মুতুয়ার ঠাকুর পরিবারে বিজেপি কিছুটা প্রভাব ফেললে যেন-তেন প্রকারেণ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে যাতে গেরুয়া শিবির সেখানে এক ফোটাও দাগ কাটতে না পারে সেজন্য এবার নিজেদের ভোটব্যাংককে মজবুত রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তৃণমূল কংগ্রেস। আর এজন্য বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রকেই পাখির চোখ করেছে শাসক দল। সূত্রের খবর রবিবার বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের সংগঠনকে চাঙ্গা করতে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে উপস্থিত ছিলেন উত্তর 24 পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, জেলা পর্যবেক্ষক নির্মল ঘোষ, কার্যকরী সভাপতি নারায়ন গোস্বামী, উত্তর 24 পরগনা জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি পার্থ ভৌমিক, বনগাঁ লোকসভার তৃণমূল সাংসদ মমতা বালা ঠাকুর সহ অন্যান্যরা। এই বৈঠকেই বনগাঁ উত্তর বনগাঁ দক্ষিণ এবং স্বরূপনগরের বিধায়কদের নিয়ে বিধানসভা ভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা কমিটি তৈরি করা হল। যেখানে গাইঘাটার তৃণমূল বিধায়ক পুলিশ বিহারী রায়কে উপদেষ্টা, গোবিন্দ দাসকে চেয়ারম্যান এবং উপেন বিশ্বাসকে বাগদার চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আর এখানেই একাংশের প্রশ্ন, তাহলে কি আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে বনগাঁ নিয়ে কিছুটা চাপে থাকার জন্য এবং এই এলাকায় বিজেপির প্রভাব বাড়ার জন্য এখানে আগেভাগেই লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে নির্বাচন কমিটি তৈরি করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস? এদিন এই প্রসঙ্গে উত্তর 24 পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “আমরা বনগাঁকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। এখানে কাউকে এক ইঞ্চিও জমি আমরা ছাড়ব না।” রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বনগাঁ নিয়ে তৃণমূলের এই বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার পেছনে এই এলাকায় বিজেপির প্রভাব বাড়ারই মূল কারণ হিসেবে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। আর তাইতো বিজেপির ভোটব্যাংকে রুখতে এখন থেকেই নিজেদের প্রচার কমিটি তৈরি করার দিকে মন দিচ্ছে তৃণমূল। কিন্তু তা করে ভোটবাক্সে কি গেরুয়া শিবিরের উত্থান আটকাতে পারবে রাজ্যের শাসক দল! এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -