এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > শহীদ দিবসের সভায় ‘সুপারহিট’ মোদী,সেলফি তোলার ধাক্কায় পিছনে ফেললেন হেভিওয়েটদের

শহীদ দিবসের সভায় ‘সুপারহিট’ মোদী,সেলফি তোলার ধাক্কায় পিছনে ফেললেন হেভিওয়েটদের

‘২০১৯,আমি ফিনিশ’ গলায় এমন বার্তাওয়ালা বোর্ড লাগিয়ে মোদীজিকে দেখা গেলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ২১-এর ধর্মতলা চত্বরের জনসভায়। মঞ্চে তখন তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতৃত্বদের ‘মোদী হটাও’ রব। গমগম করছে জনসভা। কড়া মন্তব্যে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে আক্রমণ শানাচ্ছেন তখন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই গুটিগুটি পায়ে  নেহরু কোর্ট গায়ে সাদা পায়জামা এবং লাল পাঞ্জাবি পরে জনসভায় হাজির ‘মোদি’।

এদিকে বৃষ্টি হচ্ছে মুষলধারে। তার মধ্যেই ‘মোদি’কে ঘিরে সেলফি উৎসবে মেতে উঠলেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। একজনকে ঘিরে জটলা ভীড় দেখে এগিয়ে আসে পুলিশকর্মীরাও। মোবাইলে ক্যামেরাবন্দিও হয়েছে তাঁর ছবি। আবার যে শিশুরা মা বাবার সঙ্গে এসেছে,তাঁরাও জনে জনে এসে হাত মিলিয়ে যাচ্ছেন দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। ‘মোদি’র সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে দেখা যাচ্ছে শিশুর বাবা-মা দেরও। মোদিকে নিয়েই হুল্লোর তুঙ্গে তখন তৃণমূলীয় জনসভায়।

তবে এ মোদী আমাদের প্রধানমন্ত্রী নন। ইনি হলেন শান্তিপুরের বাসিন্দা অমর প্রামাণিক,পেশায় তাঁতশিল্পী। মোদীজির ছদ্মবেশ ধারণ করে সভায় এসেছেন তিনি। মাথায় ছিল সেই টুপি যা মোদীজি সাধারণত কোনো মাড়োয়ারি সংগঠন বা সংস্থার বিয়ে বাড়ি গেলে মাথায় পড়ে। শিয়ালদা স্টেশানে নামার পর অনেকেই মুখ হাঁ হয়ে যায় তাকে দেখে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অনেকেই গুলিয়ে ফেলেন তাকে। স্টেশান থেকে নেমেই  করজোড়ে নমস্কার করতে করতে ধর্মতলা চত্বরে যান তিনি। তাঁর অবস্থান ছিল মিছিলের সামনেই।

এ প্রসঙ্গে পাওয়া গেছে তাঁর অমূল্য মতামত। তিনি জানান মোদীসরকারের একেরপর এক হটকারী সিদ্ধান্ত আমজনতার ক্ষতি করছে। ‘অথৈ জল’-এ ফেলছে তাঁতি সম্প্রদায়কে। আর্থিক মন্দার শিকার তাঁরা। তাঁর সঙ্গে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় এসেছিলেন আরো তাঁতশিল্পীরা। বক্তব্য তাঁদের একটাই,কেন্দ্র থেকে মোদীজিকে হটাতে হবে নইলে ভবিষ্যতে ‘আচ্ছে দিন’-এর বদলে আসতে চলেছে আরো খারাপ দিন। তাই তাঁর মতো তাঁতশিল্পীদের দাবী,’২০১৯,মোদিজি ফিনিশ।’

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

——————————————————————————————-

 এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

সভায় উপস্থিত শান্তিপুরের তাঁতশিল্পীরা বললেন, প্রায় ৬৫ হাজার মতো ছোট ব্যবসায়ী রয়েছে ফুলিয়া-শান্তিপুরে। পুজোর আগেই তাঁদের ব্যবসার রমরমা। দেশের ভিতরে নয় শুধু,দেশের বাইরেও তাঁদের মাল রপ্তানি হয়। কোলকাতা,আসানসোল  থেকে শিলিগুড়ি -রাজ্যের প্রায় সমস্ত বড়বাজার থেকে তাঁদের কাছে বরাত আসে। কিন্তু এবার যাঁরা জিএসটি রেজিট্রেশান করিয়েছে তাঁরা অন্যবারের তুলনায় ৩০-৪০% কম বরাত পেয়েছেন। আর যাঁরা মোটেই রেজিট্রেশান করাননি তাঁদের হাতে এসেছে কাঁচকলা।

বৃষ্টিস্নাত অবস্থাতেই কেন্দ্রীয় সরকারের প্রযুক্ত জিএসটি-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, জিএসটি যখন লাগু হয়নি তখন পলিয়েস্টারের সুতোর দাম ছিল ৩৫০ টাকা,এখন তা বেড়ে হয়েছে ৪১৪ টাকা। এর পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে দাম বেড়েছে জরি,রঙ,সাধারণ সুতো সহ একাধিক কাঁচামালের। যে শাড়ির দাম ছিল ১০০০ টাকা,সেটাই বিকোচ্ছে এখন ১২০০-১৪০০ টাকায়। মূল্যবৃদ্ধির জেরে ক্রেতারা ছুঁয়েও দেখছে না এসব জিনিস। আর না কিনলেই চরম ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাঁতশিল্পীদের। এ প্রসঙ্গে মন্তব্য পাওয়া গেলো জনসভায় উপস্থিত শান্তিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান অজয় দে-র। তিনি জানান,নরেন্দ্র মোদীর সিদ্ধান্ত যে বাংলা তাঁতশিল্পীদের কীভাবে ভরাডুবি করেছে তা একবার তাঁর নিজের চোখে দেখে যাওয়া উচিৎ। শুধু সর্বনাশ ছাড়া আর কিছুই করেননি তিনি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!