এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্রের পরিবেশ নেই, হিংসার রাজনীতি চলছে, জোট গড়ে লাভ নেই: নরেন্দ্র মোদি

পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্রের পরিবেশ নেই, হিংসার রাজনীতি চলছে, জোট গড়ে লাভ নেই: নরেন্দ্র মোদি

রাজ্যের প্রায় বিভিন্ন সভাতেই কেন্দ্রের বর্তমান শাসক দল বিজেপির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তীব্র কটাক্ষ শানাতে দেখা যায় তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু এতদিন সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে উদ্দেশ্য করে কোনো রকম কটাক্ষ করেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে বছরের শুরুর দিনেই সেই বাংলার আইন-শৃঙ্খলা ইস্যুতে মুখ খুলে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে বিদ্ধ করলেন কেন্দ্রের প্রধানমন্ত্রী।

সূত্রের খবর গতকাল দেশের সাম্প্রদায়িক সাম্প্রতিক ইস্যুগুলি নিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে এতটাই অগণতান্ত্রিক পরিস্থিতি যে সেখানে সাধারণ রাজনৈতিক কর্মসূচি নিতে গেলেও আদালতের শরণাপন্ন হতে হয়। নির্বাচনের বিরোধীদের ওপর পশ্চিমবঙ্গের সন্ত্রাস চালানো হয়। ভারতের গণতান্ত্রিক ইতিহাসের সঙ্গে এসব মানায় না।”

আর প্রধানমন্ত্রীর এহেন মন্তব্য ঘিরেই এখন শুরু হয়েছে তীব্র জল্পনা। কেননা এবারের লোকসভা নির্বাচনের আগে এই বাংলাকে টার্গেট করা বিজেপির অমিত শাহ থেকে শুরু করে অন্যান্য নেতারা রাজ্যে এসে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেও প্রধানমন্ত্রীকে সেইভাবে মুখ খুলতে দেখা যায়নি। কিন্তু বছরের শুরুর দিনেই নাম না করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আইন-শৃঙ্খলা ইস্যু নিয়ে যেভাবে কটাক্ষ করলেন নরেন্দ্র মোদী তাতে আগামী লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্য যে তাঁরও পাখির চোখ তা নিঃসন্দেহে বলাই যায়।

অন্যদিকে এদিনের এই সাক্ষাৎকারে 2019 এ বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে গড়া বিরোধীদের মহাজোট নিয়েও কটাক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন তিনি বলেন, “জোট করে কোনো লাভ হবে না। আগামী ভোটের লড়াই হবে জোট বনাম জনতার।” এদিকে সদ্য সমাপ্ত দেশের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে বিজেপির পরাজয় ও তিন রাজ্যে কংগ্রেসের জয়েই পরই সেই কংগ্রেসের দখলে থাকা ছত্রিশগড়, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে কৃষিঋণ মুকুব করে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। যানিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে সেই কংগ্রেসও।

কেননা ক্ষমতায় আসার কয়েক দিনের মধ্যে তাদের দল সেই তিন রাজ্যের কৃষকদের কৃষিঋণ মুকুব করে দিলেও কেন কেন্দ্র তা সারা দেশে করতে পাচ্ছে না সেই প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষও করেছে হাত শিবির। এদিন সেই ইস্যুতে মুখ খুলে প্রধানমন্ত্রী বুঝিয়ে দেন যে, তিনি তার অবস্থান থেকে একচুলও নড়বেন না। কৃষি ঋণ মুকুব করে যে শুধু চমকই দেওয়া যায় এদিন সেই কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী।

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন নরেন্দ্র মোদী বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি কৃষকদের আত্মনির্ভরতার মাধ্যমে একটি আধুনিক ব্যবস্থা চালু করতে। রাজ্য সরকারগুলি যদি চায় কৃষিঋণ মুকুব করতেই পারে। এতে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বাধা দেব না।” এদিকে এদিনের এই সাক্ষাৎকারে শুধু বাংলার তৃণমূল সরকারকেই নয়, কংগ্রেসের গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধেও সরব হতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাফাল কেলেঙ্কারি নিয়ে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধীর তীব্র আন্দোলনে অনেকটাই চাপে পড়েছে বিজেপি। এমনকি এনিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে সংসদে সরবও হয়েছে কংগ্রেস। এদিন সেই প্রসঙ্গে মুখ খুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সব অভিযোগের জবাব সুপ্রিম কোর্ট, ফ্রান্স সরকার ও ভারত সরকার দিয়েছে। কিন্তু আমার একটাই প্রশ্ন, ডিফেন্স. ডিলে এত দালালি কেন এতকাল ধরে ছিল?

আমি চাই মেক ইন ইন্ডিয়ান মাধ্যমে দেশকে প্রতিরক্ষাগত ভাবে স্বনির্ভর করতে। সুতরাং এতে আমাকে কেন্দ্র করে যতই গালিগালাজ করা হোক না কেন, আমি সততার পথেই থাকবো। মিথ্যা বদনামে ভয় পেয়ে আমি দেশের সেনাবাহিনীর সুরক্ষার সঙ্গে কোনো আপস করব না।”

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী মুখ খোলায় পাল্টা পথে নেমেছে রাজ্যের শাসক দলও। এ প্রসঙ্গে বিজেপিকে কটাক্ষ করে তৃনমূল মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাফাল কাণ্ডে বিজেপির দুর্নীতি স্পষ্ট হয়েছে। মোদি সরকারের আর্থিক দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা মানুষের সামনে প্রকাশ পেয়েছে। আসলে উনি মহাজোট নিয়ে ভয় পেয়েছেন, তাই এখন মুখ খুলতে শুরু করেছেন।”

রাজনৈতিক মহলের মতে, দেশের অন্যান্য ইস্যুর মতো এবারের লোকসভা নির্বাচনে বাংলাই যে পাখির চোখ হতে চলেছে বিজেপির, তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বছরের শুরুর দিনেই বাংলার আইন-শৃঙ্খলা ইস্যুতে অসন্তোষ প্রকাশ নিয়েই পরিষ্কার হয়ে গেল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!