শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুলে বেশিক্ষন ‘আটকে’ রাখতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শৈশব? উঠল নতুন দাবি কলকাতা বিশেষ খবর রাজ্য November 29, 2018July 17, 2021 বর্তমানে রাজ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের ক্ষোভের শেষ নেই বকেয়া ডিএ ও কেন্দ্রীয় হারে বেতন না পাওয়া নিয়ে। ইতিমধ্যেই একের পর এক মামলা ও আন্দোলনের মাধ্যমে ঝড় তুলে দিয়েছেন তাঁরা। বিশেষ করে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা কিছুদিন আগেই দুদিন ব্যাপী পিআরটি স্কেল নিয়ে এক বৃহৎ আন্দোলন ও তারপর স্পোর্টসের চাঁদা নিয়ে রীতিমত অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছেন রাজ্য সরকারকে। আর এইবার শিক্ষকরা সামনে নিয়ে এলেন রাজ্যের আমলাদের এক বড় ‘ভুল’ – যাতে করে দেখা যাচ্ছে ‘ভুল’ হিসাবের খেসারত দিয়ে শিক্ষকদের বরাদ্দ সময়ের অনেকটাই অতিরিক্ত পড়াতে হচ্ছে। কি সেই হিসাব – যা রীতিমত ভাইরাল হয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়? আসুন জেনে নেওয়া যাক তার বিস্তারিত। সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমত ভাইরাল হয়ে যাওয়া সেই পোস্টে বাংলার শিক্ষককুলের বক্তব্য – স্কুলের কার্যকাল হিসেবে বিগত ৬ বছর ধরে নাকি একই ভুল করে যাচ্ছেন পর্ষদের আমলারা! তাঁদের বক্তব্য – ১ বছর = ৩৬৫ দিন এর মধ্যে রবিবার = ৫২ টি এবং অন্যান্য ছুটি মোট = ৬৫ টি অতএব মোট ছুটি ৫২ + ৬৫ = ১১৭ দিন সুতারং, অবশিষ্ট কর্মদিবস = ৩৬৫ – ১১৭ = ২৪৮ দিন এর মধ্যে পরীক্ষার জন্য ১২ দিন বাদ যায় অর্থাৎ, মোট পঠন-পাঠনের জন্য বরাদ্দ = ২৪৮ – ১২ = ২৩৬ দিন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের মতে – এপর্যন্ত সব ঠিকই আছে। কিন্তু, এরপরেই মারাত্বক এক ভুল! কেননা, দেখানো হয়েছে ২৩৬ দিন = ৩৩.৭১ সপ্তাহ। যা নাকি সম্পূর্ণ ভুল হিসাব। কেন? শিক্ষকদের মতে এই সংখ্যাটি আসছে কেননা ২৩৬ কে ৭ দিয়ে ভাগ করে সপ্তাহ সংখ্যা নির্নয় করা হয়েছে! ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে কিন্তু, এক্ষেত্রে মাথায় রাখা হয়নি যে, ২৩৬ দিনের মধ্যে কোনো রবিবার নেই (তা আগেই ছুটির হিসাবে ধরে নেওয়া হয়েছে)! আর তাই, সঠিক হিসাব করতে হলে এক্ষেত্রে সপ্তাহের দিনসংখ্যা হওয়া উচিত ৬ দিন। অতএব ২৩৬ দিনকে সপ্তাহে পরিনত করতে ৭ দিয়ে ভাগ করলে তা সঠিক হবে না! ভাগ করা উচিত ৬ দিয়ে! যদি তাই হয়, তাহলে নিশ্চিতভাবেই এক্ষেত্রে প্রকৃত ২৩৬ দিন = (২৩৬/৬) = ৩৯.৩৩ সপ্তাহ হবে। শিক্ষকদের মতে এই হিসাব অত্যন্ত গুরুত্ত্বপূর্ন কেননা, আরটিই অনুযায়ী শিক্ষণ-শিখন সময়কাল বছরে হতে হবে মোট ১,০০০ ঘন্টা! আর তাই হিসাবে দেখানো হয়েছে, প্রতি সপ্তাহে ৩১ ঘন্টা (টিফিন পিরিয়ড সহ) ক্লাস করলে ৩৩.৭১ সপ্তাহে (৩১ x ৩৩.৭১) = ১,০৪৫ ঘন্টা ক্লাস হবে। শিক্ষকদের মতে, এক্ষেত্রে হিসাবে ভুল না করলে বছরে ১,০৪৫ ঘন্টা ক্লাস করার জন্য প্রতি সপ্তাহে ক্লাস করতে হতো মাত্র (১,০৪৫/৩৯.৩৩) = ২৬.৫৭ ঘন্টা বা ২৬ ঘন্টা ৩৫ মিনিট! অর্থাৎ, হিসাব ‘ভুল’ না হলে প্রতি সপ্তাহে ক্লাস কম করতে হতো, ৩১ ঘন্টা – ২৬ ঘন্টা ৩৫ মিনিট = ৪ ঘন্টা ২৫ মিনিট! আর তাই শিক্ষকরা দাবি করছেন, শনিবারের কথা ছেড়ে দিলে প্রতিদিন ৫৩ মিনিট অাগেই ছাত্রছাত্রীদের ছুটি দেওয়া যেত। ছাত্রছাত্রীরা আরটিই মেনে সপ্তাহে ১,০০০ ঘন্টার বেশি ক্লাস করেও বিকালে মাঠে গিয়ে খেলাধূলার সুযোগ পেতে পারত এক্ষেত্রে। শিক্ষকদের ক্ষোভ, আমলারা এই একই ‘ভুল’ নাকি করে যাচ্ছেন গত ৬ বছর ধরে! আর তাঁদের এই ‘ভুল’ হিসাবের ফলে বেড়ে গেছে দৈনিক স্কুল আওয়ার! এমনকি, সেই ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে দূরাগত শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও! শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে খেলাধূলা! ফলে শিক্ষকদের দাবি – আমলারা বছরের পর বছর একই ভুল করে গেলেও, সরকার তাঁদের জন্য পৃথক পে-স্কেলের কথা ভাবছেন! অথচ শিক্ষকদের ন্যায্য পিআরটি দিচ্ছেন না! আর এই বিষয়টি সামনে আসতেই, শিক্ষক মহলের অভিমত – এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয় প্রধানদের নিকট অনুরোধ থাকবে, আপনারা সার্কুলারটির ভ্রম সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত এই সার্কুলারকে মান্যতা দিয়ে বাস্তবায়িত করবেন না! যাঁরা ইতিমধ্যেই না বুঝে রূপায়িত করে ফেলেছেন, তাঁরাও অাগের মত স্কুল ‘আওয়ারে’ ফিরে যান! তাতে শিক্ষার্থীরা খেলাধূলার মাধ্যমে প্রানবন্ত থাকার সুযোগ পাবে! একই সঙ্গে শিক্ষকদের দাবি – মাথায় রাখবেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুলে বেশিক্ষন আটকে রাখতে গিয়ে শিশুর শৈশব যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়! এই ব্যাপারে রাজ্যের শিক্ষকরা মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি-আকর্ষণ করার চেষ্টাও শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। আপনার মতামত জানান -