নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ ঘিরে এইমুহুর্তে জোর জল্পনা রাজনৈতিক মহলে কলকাতা রাজ্য March 8, 2020 এই মুহূর্তে পুরসভা নির্বাচনকে ঘিরে সরগরম পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে প্রস্তুতি শুরু করেছে ইতিমধ্যে। জনসংযোগ বাড়াতেও তাঁরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে পুরো নাগরিকদের তুষ্ট করতে শেষ মুহূর্তের উন্নয়নমূলক কাজ চলছে প্রতিটি ওয়ার্ডে। তবে শাসক দলের সাথে সাথে অন্যান্য দলগুলোও এই মুহূর্তে ঘর গোছানোর কাজ শুরু করেছে জেলায় জেলায়। কিন্তু এবার সামনে উঠে এসেছে অন্য বিতর্ক। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পুরসভা নির্বাচনের প্রার্থী হতে গেলে দিতে হবে খরচের হিসেব। আর এই জল্পনাকে ঘিরেই শুরু হয়েছে তুমুল চাঞ্চল্য রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে প্রশাসনের অন্দরমহল পর্যন্ত।এবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে পুরভোটের প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রথম এবং প্রধান শর্ত রাখা হয়েছে, প্রার্থীদের খরচের হিসাব দিতে হবে। বর্তমানে এই নিয়ে রীতিমতো সরগরম পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহল। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে দক্ষিণ 24 পরগনা এবং হাওড়া জেলা প্রশাসনকে প্রার্থীদের হিসাব দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। সূত্রের খবর, নিয়ম হচ্ছে পুরবোর্ড গঠনের ছয় মাসের মধ্যে প্রার্থীদের হিসেব জানাতে হবে। নির্বাচন কমিশনের কাছে যদি প্রার্থীরা সেই হিসাব জানাতে না পারেন তাহলে তাঁদের পুর প্রধানের পদ খারিজ হয়ে যাবে। উপরন্তু আগামী তিন বছর তাঁরা আর পুর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। শুধু তাই নয়, আইনমাফিক তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন। পূর্বের ইতিহাস দেখলে জানা যায়, গত 2015 সালে কলকাতা পুরসভার নির্বাচনে যাঁরা অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে 65 শতাংশ এর কিছু সংখ্যক বেশি প্রার্থী নির্বাচনী খরচের হিসাব দিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনকে। তারও আগে 2013 সালের হাওড়া পুরসভার প্রার্থী সংখ্যা ছিল প্রায় 400। সেখানেও অর্ধেক প্রার্থী নির্বাচন কমিশনের কাছে খরচের খতিয়ান জানিয়েছিলেন মাত্র। পরবর্তীতে বালি পুরসভাকে হাওড়া পুরসভার সঙ্গে যোগ করে দেওয়া হয়। এদিন নতুন করে প্রার্থীদের পুরনির্বাচনের খরচের হিসেব জানানোর জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে নামের তালিকা পাঠায় কমিশন। এই ঘটনা সামনে আসার সাথে সাথেই রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তবে এদিন নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ দিয়েছেন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - যদিও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মন্তব্য করছেন, এই পদক্ষেপ আরো আগে গ্রহণ করা উচিত ছিল কমিশনের। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, যেকোন নির্বাচনে প্রার্থীদের বেশকিছু আর্থিক নিয়ম মেনে চলতে হয়। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গ সহ বড় রাজ্যে প্রার্থীরা নিয়ম অনুযায়ী খরচ করতে পারেন 70 লক্ষ টাকা। কিন্তু ছোট রাজ্যে সেই টাকার পরিমাণ কমে দাঁড়াবে 54 লক্ষ টাকায়। একই নিয়মে বড় রাজ্যে বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থীদের খরচের পরিমাণ বাঁধা থাকে 28 লক্ষ টাকায় এবং ছোট রাজ্যগুলিতে কুড়ি লক্ষ টাকায়। জানা গেছে, সাধারণত প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনের আর্থিক নিয়মের বাইরে যেতে চাননা। তবে সূত্রের খবর 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী সানি দেওলের খরচের হিসেব কমিশনের নিয়মের বহির্ভূত হয়ে যায়। যা নিয়ে প্রবল বিতর্ক ছড়ায় সেইসময়। তবে পৌরসভা নির্বাচনে খরচের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম আছে নির্বাচন কমিশনের। সে ক্ষেত্রে নিয়ম হলো- যেসব ওয়ার্ডে ভোটার আছেন ছ’হাজার, সেখানে প্রতিটি ভোটার পিছু 5 টাকা খরচ করতে পারবেন প্রার্থীরা। এবং যেসব ওয়ার্ডে 10 হাজার থেকে 50 হাজার বা তার বেশি ভোটার বসবাস করেন, সেখানে ভোটার পিছু খরচ করা যাবে 6 টাকা। তবে পুরসভা এবং পুরনিগমের ভোটারের সংখ্যায় যথেষ্ট তারতম্য থাকে। সে ক্ষেত্রে ভোটার পিছু খরচের পরিমাণ কিছু হেরফের হলে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ হবে কিনা সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি জেলা প্রশাসনের কর্তারা। তবে এই মুহূর্তে রাজ্যে পুরসভার নির্বাচনের দামামা বেজে উঠতেই জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শিবিরে। অন্যদিকে রাজনৈতিক মহলের দাবি, নির্বাচন কমিশন পুরসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে খরচের হিসেব বেঁধে দিয়েছেন তা মাথায় রেখেই রাজ্যের যুযুধান রাজনৈতিক শিবির গুলি নির্বাচনী ময়দানে নামতে প্রস্তুত হচ্ছে। এই মুহূর্তে প্রতিটি শিবিরে লড়াইয়ের রূপরেখা প্রস্তুত হচ্ছে বলে দাবি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। আপাতদৃষ্টিতে পুরসভা নির্বাচন সাদামাটা শুনতে লাগলেও এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বিধানসভা নির্বাচন যদি হয় ফাইনাল ম্যাচ, তাহলে এই মুহূর্তে পুরসভার নির্বাচন হচ্ছে সেমিফাইনাল। তাই সেমিফাইনালেই আত্মবিশ্বাস জোগাড়ের জোর প্রস্তুতি এইমুহুর্তে। আপনার মতামত জানান -