এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > “অমানবিকতার” বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে রাজ্য সরকারের অস্বস্তি তীব্র করল রাজ্য ছাড়া নার্সরা!

“অমানবিকতার” বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে রাজ্য সরকারের অস্বস্তি তীব্র করল রাজ্য ছাড়া নার্সরা!


করোনা পরিস্থিতিতে এমনিতেই সংকটজনক অবস্থা চলছে রাজ্যে। স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে মানুষকে সুস্থ করার ক্ষেত্রে অনস্বীকার্য অবদান রয়েছে স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে ডাক্তার এবং নার্সদের। কিন্তু হঠাৎ করেই রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে নার্সরা চলে যেতে শুরু করেন। যার ফলে নানা মহলে তীব্র চাঞ্চল্য শুরু হয়। একদিকে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে যদি এইভাবে নার্সরা রাজ্য ছাড়তে শুরু করেন, তাহলে কিভাবে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা সামলানো যাবে! তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে রাজ্য সরকার।

প্রথম থেকেই কেন মনিপুরী নার্সরা তাদের পেশা ছেড়ে নিজের রাজ্যে ফিরে গেলেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। অবশেষে এই ব্যাপারে প্রেস বিজ্ঞপ্তি করে সেই নার্সদের সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হল আসল কারণ। যেখানে অমানবিকতার বিস্ফোরক অভিযোগ তোলা হয়েছে সেই সংগঠনের পক্ষ থেকে।

সূত্রের খবর, মঙ্গলবার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কলকাতা বা এই রাজ্যে চিকিৎসা পরিষেবায় নিজেদের সবটুকু দিয়ে কাজ করেন সেই মনিপুরী নার্সরা। প্রায় 1200 জন মনিপুরী নার্স দিবারাত্রি মানুষের সেবায় নিয়োজিত। কাজের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা গোটা বিশ্বে স্বীকৃত। কিন্তু না চাইলেও বেশ কিছু পরিস্থিতির শিকার হয়ে 1200 জন নার্সের মধ্যে 300 জন শহর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। বিষয়টি এমন ভাবে দেখানো হয়েছে যে, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে চিকিৎসা পরিষেবাকে প্রাধান্য না দিয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন নার্সরা। এমন বক্তব্যে তাদের কালিমালিপ্ত করা হয়েছে।

তাদের আত্মত্যাগকে ছোট করে দেখানো হয়েছে। অথচ তাদের রাজ্য ছাড়ার কারণ সম্পূর্ণ ভিন্ন। আর এরপরই সেই সংগঠনের পক্ষ থেকে এই নার্সদের রাজ্য ছাড়া নিয়ে আসল কারণ প্রকাশ করা হয়। যেখানে জানানো হয়, করোনার সংকটকালীন পরিস্থিতিতে নিজেদের কাজের প্রতি 100% দায়বদ্ধতা ছিলেন তারা। কিন্তু পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি তাদের বাংলা ছাড়তে বাধ্য করেছে। তাদের দৈহিক গঠনের জন্য প্রতিনিয়ত তাদেরকে অপমান করা হয়। যা করোনা পরিস্থিতিতে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সংগঠনের অভিযোগ, যখন হাসপাতাল থেকে তারা বাড়ি ফিরতেন, তখন প্রতিবেশীদের কাছ থেকে তাদের চরম লাঞ্চনা সহ্য করতে হত‌। তাদেরকে দেখলেই সামাজিক অস্পৃশ্যতা তৈরি করত তাদের প্রতিবেশীরা। আর এর ফলেই সেই মনিপুরী নার্সরা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। শুধু তাই নয়, তারা যদি কোন মুদিখানা দোকানদারের কাছে গিয়ে জিনিসপত্র কিনতে যেতেন, তা হলেও তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হত বলে অভিযোগ বেশ কিছু ক্ষেত্রে সেই নার্সরা। কোনো জায়গায় থাকার মত বাড়িভাড়াও পাচ্ছিলেন না। তাই এমন পরিস্থিতিতে বাংলা ছেড়ে এখন মণিপুরে ফিরতে শুরু করেছেন তারা।

একাংশ বলছেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মনিপুরের নার্সদের এইভাবে বাংলা ছাড়া উচিত হয়নি। তবে ঠিক এখনই কেন তারা বাংলা ছাড়লেন, তা নিয়ে আসল কারন তুলে ধরে তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্ফোরক অভিযোগ করায় রাজ্য সরকার অস্বস্তিতে পড়ল বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।

অনেকে বলছেন, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম থেকে বলা হয়েছিল যে, করোন পরিস্থিতির মধ্যে সামাজিক দূরত্ব তৈরি হলেও, মানসিক দূরত্ব যেন তৈরি না হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে না ঘন্টার পর ঘন্টা কাজ করে বাড়ি ফেরার পর যেভাবে তাদের প্রতিবেশী থেকে শুরু করে দোকানদারদের কাছে লাঞ্ছনার শিকার হতে হত, তা কেন রাজ্য সরকার উপলব্ধি করতে পারেনি! যদি আগেভাগে তারা এই বিষয়টি উপলব্ধি করত, তাহলে তো এইভাবে নার্সরা রাজ্য ছাড়তেন না! অভিমানে এইভাবে নার্সরা রাজ্য ছাড়ায় এখন রাজ্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চরম সংকটের মুখে পড়েছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত পর্যবেক্ষকরা।

এই প্রসঙ্গে সংগঠনের সভাপতি ক্ষেত্রীমায়ুম শ্যামকেসো সিং বলেন, “মনিপুরী নার্সদের রাজ্য ছাড়া নিয়ে যে সমস্ত বক্তব্য উঠেছে, তা শুধু তাদের কালিমালিপ্ত করে তাই নয়। তারা যে দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করেছেন, সেটাকেও ছোট করে দেখানো হয়।” সব মিলিয়ে এখন মনিপুরী নার্সদের রাজ্য ছাড়া নিয়ে নানা মহলে সমালোচনা শুরু হলেও, তার আসল কারণ ব্যাখ্যা করে সংগঠনের পক্ষ থেকে যে অভিযোগ করা হল, তাতে ক্রমশ চাপ বাড়ছে রাজ্য সরকারের ওপর। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!