এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > ঐতিহাসিক রামমন্দির রায় কি এবার আডবাণী-মুরলী-উমাদের সসম্মানে বাবরি মসজিদ মামলায় রেহাই দেবে?

ঐতিহাসিক রামমন্দির রায় কি এবার আডবাণী-মুরলী-উমাদের সসম্মানে বাবরি মসজিদ মামলায় রেহাই দেবে?


গত শনিবার অযোধ্যা মামলার রায় বেরিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রায় অযোধ্যায় রাম মন্দিরের পক্ষেই গেছে। 1992 সালে 6 ডিসেম্বর করসেবকদের হাতে ধ্বংস হয়েছিল 1528 সালে নির্মিত বাবরি মসজিদ। সেই ইতিহাসের উপর নতুন ইতিহাস লিখল সুপ্রিম কোর্ট। বিতর্কিত 2.77 একর জমি মন্দির তৈরীর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ ট্রাস্টকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে এদিন। অন্যদিকে, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড অযোধ্যাতে 5 একর জমি পাবেন যেখানে তাঁরা মসজিদ নির্মাণ করতে পারবেন।

অন্যদিকে, গত শনিবার অযোধ্যা মামলার রায়দান করতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রঞ্জন গগৈ জানিয়েছেন, ‘1992 সালে মসজিদ ভাঙ্গা আইনবিরুদ্ধ কাজ ছিল।’ আর এই আইন বিরুদ্ধ কাজের জন্যই সিবিআই আদালতে এখনো পর্যন্ত একটি মামলা চলছে লাল কৃষ্ণ আদবানি, মনোহর যোশী এবং উমা ভারতীদের বিপক্ষে।

ভারতীয় জনতা পার্টি তৈরি হয় 1980 সালে। আর তার চার বছর পর অর্থাৎ 1984 সালে রাম মন্দির আন্দোলন শুরু হয়। 1989 সালে রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিতর্কিত জমির কাছেই রাম মন্দিরের শিলান্যাস করেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। পরের বছর অর্থাৎ 1990 সালে লালকৃষ্ণ আদবানি অযোধ্যায় রাম মন্দির করার দাবিতে দেশজুড়ে রথযাত্রায় বেড়োন।

এই রথযাত্রা চলাকালীন দেশজুড়ে নানান হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে। আর তাতে প্রায় পাঁচশোর বেশি মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করা হয়। উত্তরপ্রদেশের সমস্তিপুরে লালকৃষ্ণ আদবানির আসার পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু করসেবকরা অযোধ্যায় পৌঁছান। 30 অক্টোবর তাঁরা জোর করে বাবরি মসজিদে প্রবেশ করতে গেলে তাঁদের ওপর গুলি চালানো হয় এবং তাতে কুড়িজন করসেবক মারা যান। এরপরে দিল্লিতে রাজনৈতিক পালাবদল ঘটে। দিল্লির কুর্শিতে আসেন নরসিংহ রাও। অন্যদিকে, উত্তরপ্রদেশে শাসকের আসনে বসেন কল্যাণ সিং।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এরপর 1992 সালের 6 ডিসেম্বর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বেলা দশটা নাগাদ বাবরি মসজিদের সামনে দু’লক্ষ করসেবক হাজির হন। জোর করে তাঁরা বাবি মসজিদে ঢোকেন এবং বাবরি মসজিদ ভেঙে দেন। কল্যান সিং এর দিকে অভিযোগের আঙুল ওঠে এই ঘটনায়। অভিযোগ, সেদিন তিনি পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি‌। এমনকি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও করসেবকদের নিয়ন্ত্রণে কোন ব্যবস্থা নেননি।

পরবর্তীকালে লিবেরহান কমিশন তদন্ত করে তার রিপোর্ট 17 বছর পর মনমোহন সিং সরকারের কাছে জমা দেন। এই রিপোর্টে আদবানি, জোসি, কল্যাণ সিং সিং, উমা ভারতী সহ প্রভৃতি নেতাদের বিরুদ্ধে লখনৌ এর সিবিআই আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলা এখনো চলছে।

সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন জানুয়ারির মধ্যে আদালতে রায়দান শেষ করে এপ্রিলের মধ্যে এই মামলার রায় ঘোষণা করতে হবে। শুধুমাত্র রায়দানের জন্যই লখনৌ সিবিআই আদালতের বিচারক সুরেন্দ্র কুমার যাদবের অবসর আটকে দেওয়া হয়েছে। তবে এদিনের পর থেকে রাম মন্দির মামলার কোনো প্রভাব বাবরি মসজিদ মামলায় পড়ে কিনা সেদিকে নজর আছে সবার।

আপাতত অযোধ্যা মামলায় জয় হলেও পরিস্থিতি বিচার করে উচ্ছ্বাস চেপে আপাত সংযত বিজেপি। শুধু তাই নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো এ ব্যাপারে সতর্ক মনোভাব গ্রহণ করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশানুযায়ী এই মুহূর্তে রাম জন্মভূমি জন্য একটি ট্রাস্ট নিয়োগ করতে হবে, যাঁরা অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ করবেন। অন্যদিকে, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের হাতে মসজিদ বানানোর জন‍্য একটি পাঁচ একর জমি তুলে দিতে হবে। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, অযোধ্যা মামলার রায় যেভাবে এগোল তাতে অবশ্যই পরবর্তীতে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় যে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা জড়িয়ে পড়েছেন, তাঁদের পক্ষেই রায় যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আপাতত সমস্ত ঘটনার দিকে নজর রাখছে দেশের রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!