এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > মুখ্যমন্ত্রীর গালে ‘সপাটে থাপ্পড়’-এর ‘আনন্দ’ নিতে গিয়ে এবার বড়সড় শাস্তির মুখে একদা ঘনিষ্ঠ?

মুখ্যমন্ত্রীর গালে ‘সপাটে থাপ্পড়’-এর ‘আনন্দ’ নিতে গিয়ে এবার বড়সড় শাস্তির মুখে একদা ঘনিষ্ঠ?

রাজ্য-রাজনীতিতে পট দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে! বিশেষ করে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে ধাক্কা দিয়ে বিজেপি ১৮ টি আসন ছিনিয়ে নিতেই, রাজ্যের চেনা রঙে – অনেক নতুন রঙের সমাহার শুরু হয়েছে! কে কোন দলে আছেন, আর কে কোন দলকে সমর্থন করছেন – তা নিয়েই শুরু হয়েছে বড় ধন্ধ! আর সেই ধন্ধের ছোঁয়া এবার সরকারি কর্মচারীদের শিবিরেও!

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন শাসকদলের সরকারি কর্মচারী সংগঠনের অন্যতম ‘প্রাক্তন’ শীর্ষ নেতা সঞ্জীব পাল, তাঁর কর্মস্থানও ছিল সিএমও। কিন্তু, লোকসভা নির্বাচনের কিছুদিন আগে থেকেই উল্টো সুরে গাইতে শুরু করেন তিনি। প্রকাশ্যেই জানিয়ে দেন, দলনেত্রীর উপর আস্থা রাখলেও, কর্মচারীরা ‘বঞ্চিত’ হলে তিনি আবার রাস্তায় নেমে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যাবেন।

সঞ্জীব পালের সেই বিতর্কিত ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট।

আর এরপরেই, তাৎপর্যপূর্ণভাবে তাঁকে সিএমও থেকে বদলি করে দেওয়া হয় সুদূর হলদিয়ায় পরিবহন দপ্তরে। কিন্তু, তারপরেই জল্পনা ছড়ায়, সঞ্জীব পাল নাকি এবার বিজেপি প্রভাবিত সংগঠনে যোগ দিতে পারেন। এমনকি, তিনি এই নিয়ে বিজেপির অন্যতম শীর্ষনেতা সায়ন্তন বসু ও বিজেপি প্রভাবিত সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন সরকারি কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশীষ শীলের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন বলে জল্পনা ছড়ায়।

যদিও এই নিয়ে, দেবাশীষবাবু মুখ খুলতে রাজি হন নি – অন্যদিকে, এই ব্যাপারে সঞ্জীববাবুর সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায় নি! কিন্তু, এই ঘটনার কিছুদিনের মধ্যেই, রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এক বৈঠক ডেকে ঘোষণা করেন, সঞ্জীব পালকে শাসকদলের সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হল। এর পাশাপাশি তাঁকে হলদিয়া থেকে আলিপুরদুয়ার আরটিওতে বদলিও করে দেওয়া হয়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এই ঘটনার পরেই সামনে আসে ডিএ মামলার রায়। তাঁর আলিপুরদুয়ার বদলি ও ডিএ মামলার রায়, এই দুই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সঞ্জীব পাল ফেসবুকের নিজের ওয়ালে একটি দীর্ঘ পোস্ট লেখেন। সেখানে ডিএ মামলায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জয় নিয়ে উৎফুল হতে গিয়ে তিনি লেখেন – “রাজ্যের কর্ণধারকে তিনি (সর্বশক্তিমান ঈশ্বর) এমনভাবে নাকে ঝামা ঘষে গালে সপাটে থাপ্পড় মারবেন ভাবতেও পারিনি”! আর এই নিয়েই রীতিমত হইচই শুরু হয়ে যায় রাজ্যের সরকারি কর্মচারী মহলে!

একজন, রাজ্য সরকারি কর্মচারী হয়ে কেউ স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর ‘গালে থাপ্পড়’-এর মত কথা বলতে পারেন! এমনকি এই নিয়ে, আরেক সরকারি কর্মচারী তথা স্টিয়ারিং কমিটির অন্যতম শীর্ষনেতা সঙ্কেত চক্রবর্তী পরিবহন দপ্তরের সচিবকে বিস্তারিত জানিয়ে একটি চিঠিও লেখেন। সেখানে তিনি স্পষ্ট অভিযোগ করেন একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে সঞ্জীব পাল ‘সার্ভিস রুল’ ভেঙেছেন এবং অনুরোধ করেছেন এই নিয়ে যেন সঞ্জীববাবুর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

পরিবহন সচিবকে লেখা সঙ্কেত চক্রবর্তীর সেই আবেদন পত্র।

একই সঙ্গে, সঙ্কেতবাবু অনুমতি চেয়েছেন, রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের বিরুদ্ধে এই ধরনের ‘আপত্তিজনক’ পোস্ট করায় তিনি সঞ্জীব পালের বিরুদ্ধে লোকায়ুক্তে যেতে চান বা এফআইআর করতে চান – তাঁকে যেন তার ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এই প্রসঙ্গে সঙ্কেতবাবু জানান, ব্যক্তিগতভাবে আমার নিজস্ব রাজনৈতিক মত থাকলেও, সরকারি কর্মচারীদের কোনো রঙ হয় না। তাঁরা সকলেই রাজ্য প্রশাসনের কর্মী, সেই প্রশাসনের প্রধানকে কেউ ‘আপত্তিকর’ ভাষায় আক্রমন করলে – তা মেনে নেওয়া যায় না।

সঙ্কেতবাবু আরও জানান, ভারতের একজন সুনাগরিক হিসাবে আমার কর্তব্য ভারতীয় সংবিধানের যথাযথ মর্যাদা করা। সুতরাং সেই কাজ করতে গিয়ে আমার মনে হয়েছে, সঞ্জীববাবু যা করেছেন, তা অনৈতিক এবং তা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর করা উচিত। আমি একজন ভারতীয় নাগরিক হিসাবে আমার সেই কর্তব্যই পালন করেছি। এই প্রসঙ্গে এখনও পর্যন্ত সঞ্জীব পালের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় নি। তবে, বিশেষজ্ঞদের মতে, সমগ্র ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ‘একদা মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ’ সঞ্জীব পালের উপর এবার বড়সড় ‘শাস্তির খাঁড়া’ নেমে আসতেই পারে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!