এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > কোন পথে ইসলামপুর? ঘাসফুল ফুটবে! নাকি দলীয় গোষ্ঠীকোন্দল ফুটিয়ে দেবে পদ্মফুল?

কোন পথে ইসলামপুর? ঘাসফুল ফুটবে! নাকি দলীয় গোষ্ঠীকোন্দল ফুটিয়ে দেবে পদ্মফুল?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  উত্তরবঙ্গের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলাগুলির মধ্যে অন্যতম হল উত্তর দিনাজপুর জেলা। আর এই জেলায় নাম করা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা হল ইসলামপুর। বিগত দিনে এই এলাকা থেকে তৃণমূলের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন আব্দুল করিম চৌধুরী। কিন্তু পরবর্তীতে দলের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়। বিগত বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে জয়লাভ করেন কানাইয়ালাল আগরওয়াল।

পরবর্তীতে তিনি যোগদান করেন তৃণমূল কংগ্রেসে। যার জেরে গোসা হয়ে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ না দিলেও, এনডিএ শিবিরে যোগদান করেন আব্দুল করিম চৌধুরী। কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে দূরত্বের সেই সম্পর্কেও মধুচন্দ্রিমার ঘোর বেশিদিন টেকেনি। পরবর্তীতে আবার দেখা যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সেই কানাইয়ালাল আগরওয়ালকে লোকসভা নির্বাচনের টিকিট দেওয়া হয়।

আর ইসলামপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে লড়াই করেন সেই আব্দুল করিম চৌধুরী এবং তিনি জয়লাভও করেন। অন্যদিকে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও, ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরীর কাছে পরাজিত হতে হয় তৃনমূল কংগ্রেসের কানাইলাল আগরওয়ালকে।

পরবর্তীতে 2019 সাল থেকে শুরু করে 2021 সাল, উত্তর দিনাজপুর জেলার ফলগু নদী দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল। কানাইয়ালাল আগরওয়ালা পরাজিত হওয়ার পরে তাকেই উত্তর দিনাজপুর জেলার সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্যত এর আগের জেলা সভাপতি অমল আচার্যকে চলে যেতে হয় উপদেষ্টামন্ডলীতে। এবার 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিটি আসনকেই অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখতে শুরু করেছেন।

কারণ ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে যখন সরাসরি সংঘাত হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের, সেই সময় 294 আসনবিশিষ্ট পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগার পেতে গেলে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি আসনই যে গুরুত্বপূর্ণ, তা রীতিমত টের পেয়ে গেছে তৃণমূল কংগ্রেস। অত্যন্ত নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে যেহেতু সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত ইসলামপুর, তাই চোখ বুজে নিজেদের খাতায় এই আসনকে রেখে গণনা করছেন তৃণমূল কংগ্রেস এবং তার রাজনৈতিক পরামর্শদাতারা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু এখানেই রয়েছে গোড়ায় গন্ডগোল। একদিকে যেমন ইসলামপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে আব্দুল করিম চৌধুরীকে, অন্যদিকে তেমনই উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন কানাইলাল আগরওয়াল।  মজার বিষয় হল, উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর বিধানসভা কেন্দ্রের সংখ্যালঘু মানুষ বেশি থাকার কারণে আব্দুল করিম চৌধুরীর জয় একপ্রকার নিশ্চিতই বলা যেত।

অপরদিকে মোহিত সেনগুপ্ত থেকে শুরু করে কংগ্রেস বাম জোট থেকে শুরু করে বিজেপির আগমন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের ক্রমাগত শক্তিক্ষয়ের কারণে রায়গঞ্জ আসনে কিন্তু বর্তমানে অনেক বেশি এগিয়ে রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। রাজনীতিতে যুযুধান দুই পক্ষ ভারতীয় জনতা পার্টি এবং তৃণমূল কংগ্রেস হওয়া সত্ত্বেও, তৃণমূল কিন্তু কোনোমতেই নিজেদের গোষ্ঠী কোন্দলকে উপেক্ষা করতে পারে না।

দক্ষিণপন্থী দলের মধ্যে যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে, তা অস্বীকার করেন না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রকোপে যদি উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ আসন হারাতে হয় কানাইয়ালাল আগরওয়ালকে, সেক্ষেত্রে তিনি কি নিজের অন্যতম সতীর্থ আব্দুল করিম চৌধুরীকে খুব একটা বেশি সুবিধা করে দেবেন? এই নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

একাংশ বলছেন, আব্দুল করিম চৌধুরী দুঁদে রাজনীতিবিদ হলেও, কানাইয়ালাল আগরওয়ালেরও একটা বিশাল প্রভাব রয়েছে এই কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রে কংগ্রেসের বিভিন্ন মুখ এবং সংখ্যালঘু ভোটারদের একাংশ, এমনকি সংখ্যাগুরু ভোটারদের একাংশ তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম নেতা কানাইয়ালাল আগরওয়ালের অনুগামী হিসেবে পরিচিত। কারণ জেলা সভাপতি হিসেবে দলের রাশ রয়েছে তার হাতে।

অন্যদিকে এবারের ভোট যেহেতু ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের লড়াই, সেক্ষেত্রে সংখ্যালঘু ভোটাররা কিছুটা হলেও আস্থা রাখতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের ওপর। কিন্তু দলীয় অন্তর্কোন্দলের কারণে যদি কানাইয়ালাল আগরওয়ালা দলের অধিকাংশ কর্মী-সমর্থকদের প্রভাবিত করেন, সেক্ষেত্রে রীতিমত অস্বস্তিতে পড়তে পারে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

এমনটাও হতে পারে, দুই পক্ষের গোষ্ঠী কোন্দলে ভারতীয় জনতা পার্টি অথবা সংযুক্ত মোর্চা শেষ হাসি হাসতে পারে ইসলামপুর বিধানসভা কেন্দ্রে। এখন দেখার বিষয়, দলের স্বার্থে কানাইয়ালাল আগরওয়ালা পুরনো বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে আব্দুল করিম চৌধুরীকে জেতাতে সাহায্য করেন, নাকি এক্ষেত্রেও দোলের থেকে উর্ধ্বে দাঁড়িয়ে থাকে গোষ্ঠী কোন্দল? নির্দিষ্টভাবে নজর থাকবে ওয়াকিবহাল মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!