এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পঞ্চায়েতের দখল নিতে না পারায় বিজেপি প্রধানের স্বামীকে ‘মহিলা মামলায় ফাঁসানোর’ অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে

পঞ্চায়েতের দখল নিতে না পারায় বিজেপি প্রধানের স্বামীকে ‘মহিলা মামলায় ফাঁসানোর’ অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে

মহিলাদের সম্মানহানি এবং জাত তুলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগে তমলুকের বিজেপি পরিচালিত শ্রীরামপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করতে না পারার জন্য প্রতিহংসার বশবর্তী হয়ে প্রধানের স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে তৃণমূল,এমনটাই অভিযোগ বিজেপির।

তবে এই অভিযোগে বিশেষ পাত্তা দেয়নি তৃণমূল। ধৃতের নাম গুরুপদ বেরা। ধৃতকে এদিন তমলুক জেলা আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে বিচারক। মামলাটি খতিয়ে দেখতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

প্রসঙ্গত,দিন দুয়েক আগে তৃণমূলের নেতা কর্মীরা পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে হঠাৎই হামলা চালায়। গুরুপদ বাবুকে মারধোরের পাশাপাশি বাড়ি আসবাবপত্রও ভাঙচুর করা হয়,খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এমনটাই অভিযোগে জানায় এলাকার বিজেপি নেতা-কর্মীরা। তবে এই দাবী অস্বীকার করে তৃণমূল। পাল্টা দাবীতে জোড়াফুল শিবির জানায়,কাজের দাবীতে এলাকার যেসব মহিলারা প্রধানের বাড়িতে যেতেন তাঁদের উপরই কাজ দেওয়ার নাম করে অত্যাচার করতেন প্রধানের স্বামী।

অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার পাশাপাশি শ্লীলতাহানিও করা হতো মহিলাদের। এখবর জানাজানি হওয়ার পর গুরুপদ বাবুর বিরুদ্ধে থানায় ডায়েরি করে তৃণমূল। থানায় এফআইআর দায়ের করার পরই গুরুপদ বাবুর তল্লাশিতে নেমে পড়ে তমলুক থানার পুলিশ। প্রথমে তাকে বাড়িতে খোঁজা হয়। সেখানে না পেয়ে পাশে আত্মীয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।

এই প্রেক্ষিতে পঞ্চায়েত প্রধান মঞ্জুদেবী প্রতিবাদে সরব হয়ে বলেন,”আমার স্বামীকে মারধর করার পাশাপাশি বাড়ির জিনিসপত্র ভাঙচুর ও খড়ের গাদায় আগুন ধরানো হল। পুলিস আমাদের কেস নিল না। অথচ আমার স্বামীকে শ্লীলতাহানি ও জাত তুলে গালিগালাজ দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হল। আমি তৃণমূলের পতাকা ধরিনি বলেই আমাদের উপর এত অত্যাচার করা হচ্ছে।”

অভিযোগের একই সুর শোনা গেল বিজেপির তমলুক জেলা কমিটির সদস্য তথা শ্রীরামপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা আশিষ মণ্ডলের গলাতেও। বললেন,পঞ্চায়েত এলাকা নিজেদের দখলে রাখার জন্যে স্থানীয়দের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে তৃণমূল। এই পঞ্চায়েত এলাকা বিজেপির দখলে চলে যাওয়াটাই সহ্য করতে পারেনি তৃণমূল৷ তাই প্রথম থেকেই পঞ্চায়েতের বিজেপি সংগঠনে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে শাসকদলের নেতা-কর্মীরা। একাধিকবার প্রধান সহ পঞ্চায়েত সদস্যদের বারবার মারধোর এবং অফিসে ঢুকে বাধা দেওয়া হয়।

এতে কাজ না হওয়ায় প্রলোভন দেখিয়েও বিজেপির নেতা-কর্মীদের তৃণমূলে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করে তাঁরা। কিন্তু এতেও তেমন লাভের লাভ না হওয়ায় শেষে প্রধানের বাড়িতে হামলা,ভাঙচুর করার পাশাপাশি প্রধানের স্বামীকে ফাঁসিয়েও দিল তৃণমূল। রাতভর থানায় বসে থাকলেও বিজেপির তরফের অভিযোগ দায়ের করেনি তমলুক থানার পুলিশ। অথচ মিথ্যা মামলা দিয়ে গুরুপদ বাবুকে গ্রেফতার করা হল।

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

একথা জানানোর পর আশিষ বাবু তৃণমূলকে হুঁসিয়ারী দিয়ে বলেন,”তৃণমূলের চক্রান্তকারীদের মনে রাখা উচিত, সকলের সব দিন সমান যায় না। এর বিচার এক দিন না একদিন হবে।” তবে এ অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন বলে দাবীতে জানালেন,জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা তমলুক ব্লকের তৃণমূল নেতা সোমনাথ বেরা। পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী গুরুপদ বেরা বিরুদ্ধে তাঁদের তোলা অভিযোগ সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত বলেই দাবী করলেন তিনি।

উল্লেখ্য,গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪টি আসনের মধ্যে বিজেপির চারটি, তৃণমূলের পাঁচটি ও নির্দলরা পাঁচটি আসনে জয়লাভ করে। তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠতার নিরিখে একটি আসনে এগিয়ে থাকলেও এই পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করতে পারেনি তাঁরা। বিজেপি ও নির্দল জোট বেঁধে শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে। ১৪ আগস্ট নতুন বোর্ড গঠনের পর ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পঞ্চায়েত ঠিকভাবে চলে।

২৮ সেপ্টেম্বর প্রথম বোর্ড মিটিংয়ের দিন প্রধান সহ পঞ্চায়েতের সদস্যদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এরপর থেকেই শাসকদলের নেতা-কর্মীরা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে প্রধান সহ বিজেপি দলের সদস্যদের ঢুকতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ ওঠে। এই প্রেক্ষিতেই প্রধানের স্বামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এখন এই মামলার জল কোনদিকে গড়ায় তা নিয়েই চাপানউতোর তুঙ্গে রয়েছে শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!