এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পদক্ষেপ না নিলে চরম বিপদ, রাজ্যপালকে প্রবল চাপে ফেললেন শুভেন্দু!

পদক্ষেপ না নিলে চরম বিপদ, রাজ্যপালকে প্রবল চাপে ফেললেন শুভেন্দু!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- সিভি আনন্দ বোস রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার সময় থেকে এই রাজ্যের মানুষের মনে অনেক আশা তৈরি হয়েছিল। সকলেই ভেবেছিলেন যে, এই মানুষটা হয়তো জগদীপ ধনকরের পথেই চলবেন। কিন্তু না, তাদের সকলকে নিরাশ করে দিয়ে সরকারের সঙ্গে প্রতিমুহূর্তে আন্ডারস্ট্যান্ডিং করে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে আরও যন্ত্রণা দিয়েই চলেছেন। যখন সন্দেশখালি এত উত্তপ্ত, তখন সেখানে সরকারকে কড়া নির্দেশ না দিয়ে তিনি চুপচাপ কেরলে গিয়ে বসে আছেন। আর তার এই ভূমিকা নিয়ে মোটেই সন্তুষ্ট নয় রাজ্যের মানুষ। প্রশাসনের কাছ থেকে যখন সদর্থক পদক্ষেপ পাওয়া যায় না, তখন তো সকলের একটাই ভরসা। সেটা হচ্ছে, রাজভবন। বিরোধী দল থেকে শুরু করে রাজ্যের গণতন্ত্র প্রেমী মানুষ, সকলেই সন্দেশখালির এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজভবনের পক্ষ থেকে কড়া স্টেপের আশা করছেন। কিন্তু সেই সময় রাজ্যপাল এত নিষ্ক্রিয় থাকায় সকলের মনেই তৈরি হয়েছে হতাশা এবং প্রশ্ন।

তাই বাধ্য হয়ে রাজ্যপালের শরণাপন্ন হয়ে তিনি না থাকলেও, আধিকারিকদের কড়া জবাব দিয়ে এলেন এই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অনেকে বলতেই পারেন যে, রাজ্যপাল পদটিকেও অসম্মান করছেন শুভেন্দুবাবু। কিন্তু এটা অসম্মানের বিষয় নয়। এটা রাজ্যের মানুষের বাঁচা না বাঁচার বিষয়। রাজ্যের মানুষকে রক্ষা করতে হলে, তৃণমূলের শাসন থেকে এই রাজ্যবাসীকে উদ্ধার করতে হলে, দুষ্কৃতীদের হাত থেকে সকলকে বাঁচাতে হলে শুভেন্দু অধিকারীকে এই পদক্ষেপটা নিতেই হত। তাই তিনি শেষ পর্যন্ত অনেকদিন সময় দিয়েও যখন রাজ্যপাল কিছুই করছেন না, তখন তার রাজভবনে গিয়ে একেবারে ডেডলাইন বেঁধে দিলেন। কিন্তু এরপরেও যদি রাজ্যপাল কিছু না করেন, তাহলে শাসকের বিরুদ্ধে তো বটেই, এমনকি রাজভবনের বিরুদ্ধেও রাজ্যের মানুষের যে জনমত তৈরি হবে, তা খুব একটা সুখকর হবে না বলেই মনে করছেন একাংশ।

প্রসঙ্গত, এদিন বিধানসভা থেকে সমস্ত বিরোধী বিধায়কদের নিয়ে রাজভবনে পৌঁছে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর তারপরেই রাজভবনের সিঁড়িতে বসেই তিনি জানিয়ে দেন, রাজ্যপালকে অবিলম্বে বাংলায় আসতে হবে এবং পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে শুভেন্দু অধিকারী এটাও স্পষ্ট করে দেন যে, রাজ্যপাল যদি ২৪ ঘন্টার মধ্যে সন্দেশখালি পৌঁছে না যান এবং এই রাজ্যের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন, তাহলে তারাই সন্দেশখালি পৌঁছে যাবেন এবং প্রয়োজনে ১৪৪ ধারা ভেঙে সন্দেশখালিতে প্রবেশ করবেন।

অনেকে বলছেন, রাজ্যের শাসকের যে যন্ত্রনা, তা সত্যিই আর সহ্য করা যাচ্ছে না। কেউ এতটা নীচে নামে! যেখানে মহিলাদের হাহাকার শুনতে পাওয়া যাচ্ছে! শুনতে পাওয়া যাচ্ছে যে, তৃণমূল নেতারা নাকি তাদের পছন্দমত মহিলাদের নিয়ে আমোদ প্রমোদ করতে ব্যস্ত থাকতেন! এই তো রাজ্যের পরিস্থিতি মহিলা মুখ্যমন্ত্রী আমলে। সত্যি, কথাটা বলতে লজ্জা লাগে আমাদের। কিন্তু সেই সময় এই রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের যে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল, তিনি তা করা তো দূরের কথা, উল্টে সরকারকে বারবার করে প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছেন। যার ফলে প্রশ্রয় পেয়ে আরও বেশি করে এই সরকার আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ট দেখাচ্ছে। তাই নবান্ন তো বটেই, এবার রাজভবনের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করা প্রয়োজন। মানুষের কাছে পৌঁছতে হলে রাস্তায় নামতে হবে, সেটা অনুভব করেই শুভেন্দু অধিকারী কিন্তু ঠিক জায়গায় প্রতিবাদের সুরটা বেঁধে দিয়েছেন।

বিজেপির দাবি, এই রাজ্যে সরকার বলে কিছু নেই। তাই এবার পদক্ষেপ নিতেই হবে রাজভবনকে। কেন চুপচাপ রাজ্যপাল বসে আছেন, সেটাই তো বোঝা যাচ্ছে না। রাজ্যের মানুষ তার ওপর অনেক আশা করে। কিন্তু তিনি যদি এখনও চুপচাপ বসে থাকেন, তাহলে তার সম্পর্কে মানুষের মনে যে ভাবনা রয়েছে, সেটা ধাক্কা খাবে। তাই অবিলম্বে রাজ্যপালকে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে বিরোধীরা সমবেত প্রতিবাদের মধ্যে দিয়ে এই রাজ্যকে কি করে টাইট দিতে হয়, তা দেখিয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাবছেন, আইনের শাসন প্রতিমুহূর্তে চ্যালেঞ্জ করে তিনি শাসকের আইন প্রতিষ্ঠা করবেন। জগদীপ ধনকর এই রাজ্য সরকারকে ঠিকমত টাইট দিয়েছিলেন। কিন্তু সিভি আনন্দ বোস তাদেরকে প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছেন। রাজভবনের ভূমিকা হতাশা সৃষ্টি করছে সকলের মধ্যেই। কিন্তু এবার রাজ্যের মানুষের স্বার্থে এই সরকারের মুখোশ খুলে দেওয়ার জন্য রাজভবনকেও টাইট দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপরেও যদি রাজ্যপালের ঘুম না ভাঙ্গে, তাহলে বিরোধী দল যা করার তাই করবে।

তখন আবার এই রাজ্যপাল যেন বড় বড় কথা বলতে না আসেন। তখন আবার যেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলতে না আসেন যে, বিরোধীরা অশান্তির সৃষ্টি করছে। নিজেরা অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে, মহিলাদের মান সম্মানকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়ে বড় বড় কথা বলতে আসবেন না। তাই সময় থাকতে থাকতেই পদক্ষেপ নিন মহা মহিম রাজ্যপাল। তা না হলে রাজ্যের মানুষ যে ভরসা তার ওপর রেখেছে, সেটা আর থাকবে না। সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পর সন্দেশখালি গিয়ে বা এই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে তিনি কিন্তু কোনো কিছুই করতে পারবেন না। কারণ মানুষ রাজভবনের ভূমিকায় প্রচন্ড অসন্তুষ্ট। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!