এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > মুখ পুড়েছে মমতার, শেষমেষ লোক দেখানো পদক্ষেপ! তীব্র কটাক্ষ বিজেপির!

মুখ পুড়েছে মমতার, শেষমেষ লোক দেখানো পদক্ষেপ! তীব্র কটাক্ষ বিজেপির!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কি এবার বুঝতে পারছেন যে, মানুষ তার বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে। আর লক্ষীর ভান্ডারে টাকা দিয়ে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষকে তৃণমূল মুখী করা যাচ্ছে না। তাই কি শেষ পর্যন্ত অনেক কষ্ট করে, বুকে অনেক কষ্ট চাপা রেখে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দিতে হল? দলের সঙ্গে উত্তম সর্দারের সম্পর্ক থাকলে বিপদে পড়ব, এইরকম একটা ভাবনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়ত অনুভব করতে পেরেছেন। তাই শেষ পর্যন্ত তিনি তার দলের অন্যতম নেতা তথা মন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে দিয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাটা করিয়ে দিলেন। যদিও বা এসব লোক দেখানো ছাড়া আর কিছুই নয়। তলায় তলায় এই উত্তম সর্দার, শিবু হাজরারাই তৃণমূলের সম্পদ হয়েছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে বলেই দাবি করছেন একাংশ।

কিন্তু এই লোক দেখানো কাজটাই যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল একটু আগে করতেন, যদি প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করতেন, দলকে একটু শক্তিশালী করে বুঝিয়ে দিতেন যে, তার দল গণতন্ত্রকে শ্রদ্ধা করে। তার দল মানুষকে ভালোবাসে, মহিলাদের সম্মান করে। তাহলে এতদূর পর্যন্ত জল গড়াতো না। কিন্তু এখন সবকিছুই হাতের বাইরে। তাই শেষ পর্যন্ত আবার একটা নাটক তৃণমূল নেত্রী এবং তার ভাইপো মিলে করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু এসব করে আসল সত্য এবং মানুষ এতদিন ধরে যে যন্ত্রনা উপলব্ধি করেছেন, তা মুছে ফেলা যাবে না বলেই মনে করছেন একাংশ।

প্রসঙ্গত, গোটা বাংলায় তৃণমূল যেভাবে অত্যাচার চালাচ্ছে, তার বিরুদ্ধে প্রথম যদি কেউ পথ দেখায়, তাহলে তার সন্দেশখালি। সন্দেশখালির মহিলারা কি পরিমান যন্ত্রণা এতদিন সহ্য করেছেন, তা তারা মুখ ফুটে বলতে শুরু করেছেন। শুধু তাই নয়, এই যে শেখ শাহজাহান, উত্তম সর্দার এবং শিবু হাজরার গ্রেপ্তারির দাবিতেও সোচ্চার হয়েছেন তারা। তারা কোনো কিছুকেই ভয় পাচ্ছেন না। তাদের কাছে আজকে নিজের সম্মানটাই প্রধান বিষয়। তাই এতদিন ধরে গ্রামের মহিলাদের সঙ্গে যে অত্যাচার চালিয়েছেন তৃণমূল নেতারা তাদের যাতে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়, সেই দাবি উঠতে শুরু করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই গোটা ঘটনাকে হাতিয়ার করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামছে বিরোধীরা। গোটা রাজ্য জুড়ে এখন একটাই ইস্যু, সেটা হচ্ছে সন্দেশখালি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা বাড়িয়ে এসব ঘটনাকে কোনোমতেই ধামাচাপা দিতে পারছে না। তাই শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের এই নাটকের ধর্না মঞ্চ থেকে পার্থ ভৌমিককে ঘোষণা করতে হলো যে, আগামী ছয় বছরের জন্য তৃণমূল উত্তম সর্দারকে সাসপেন্ড করলো।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে, তৃণমূলের এই সাসপেন্ড খায় না মাথায় দেয়! তৃণমূল যে আদৌ কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটা তো একটা ছোট বাচ্চাও জানে। আজকে হয়ত লোক দেখানোর জন্য, বিপদ আসন্ন, সেই কারণে উত্তম সর্দারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কিন্তু কখন আবার সে তৃণমূলের আপনজন হয়ে যাবে, কখন আবার তাকে কোলে তুলে নেবেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব, তা কেউ জানে না। আর বাইরে ঘোষণা করা হয়েছে যে, তাকে সাসপেন্ড করা হলো। কিন্তু ভেতরে ভেতরে তার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে মানুষকে যন্ত্রণা দেওয়ার কাজ যে এই এলাকা তৃণমূল নেতারা করে যাবেন এবং সেই আশীর্বাদের হাত দিয়ে তারা তৃণমূলের ওপর ষতলা থেকে পাবেন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিরোধীরা।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ের সোচ্চার হতে শুরু করেছে বিজেপি তাদের দাবি এসব সাসপেন্ড করে লাভের লাভ কিচ্ছু হবে না। যদি ক্ষমতা থাকে, তাহলে তৃণমূল শেখ শাহজাহানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করুক। কারণ তার উস্কানিতেই এই সন্দেশখালি উপদ্রুত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যদি ক্ষমতা থাকে, তাহলে এই রাজ্যের পুলিশ গ্রেফতার করে দেখাক অভিযুক্তদের। যতক্ষণ না মূল পান্ডা গ্রেফতার হবে, ততক্ষণ এসব নাটুকে কান্ড কলাপ করে লাভের লাভ কিছু হবে না। মানুষ তৃণমূলের প্রতি এখন বীতশ্রদ্ধ বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, এই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা প্রতিবাদের সুরকে এমন পর্যায়ে তুলেছেন যে, মানুষ তাকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন। আর সেই সন্দেশখালির মহিলারা প্রকাশ্যে সংবাদ মাধ্যমের সামনে এতদিন ধরে যে অত্যাচার এই এলাকায় তৃণমূল নেতারা করেছেন, যেভাবে মহিলাদের সম্ভ্রমকে তারা মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছেন। স্বাভাবিক ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কিছুটা হলেও লজ্জা পাচ্ছেন। তিনি হয়ত ভেতরে ভেতরে ভাবছেন যে, তার দল এত নীচে নেমে গেল কি করে! কিন্তু প্রকাশ্যে তো এই কথা বলা তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।

তাই এখন ঘুরিয়ে একটা লোক দেখানো নাটক করে মানুষের মনে যাতে ভালো ছাপ ফেলা যায়, যাতে নতুন করে জায়গা করে নেওয়া যায়, তার চেষ্টা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার ভাইপো মিলে করলেন। কিন্তু যে যন্ত্রনা এতদিন সন্দেশখালির মানুষরা উপলব্ধি করেছে, যেভাবে তারা প্রকাশ্যে তৃণমূলের দৌরাত্মের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তা শুনে কিন্তু গোটা বাংলা জুড়েই প্রতিবাদ আছড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আর এত বড় প্রতিবাদের ঢেউ সামাল দিতে এই সামান্য সাসপেন্ডে কোনো লাভ হবে না। বরঞ্চ এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল নেত্রীর মুখ যে পুড়ছে, তা স্পষ্ট। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!