রথযাত্রায় রাজ্যের ‘না’, আজ পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত হতে চলেছে রাজ্য বিজেপির হেডকোয়ার্টারে কলকাতা রাজ্য December 16, 2018 আশঙ্কাকে সত্যি করে বিজেপি’র প্রস্তাবিত রথযাত্রার অনুমতি দিল না রাজ্যসরকার। টান টান উত্তেজনা এবং সারাদিনের অপেক্ষার পর গতকাল রাত পৌনে ৯ টার সময় রাজ্যবিজেপির অফিসে ইমেল এবং দূত মারফত কর্মসূচির অনুমতি বাতিলের চিঠি পাঠায় নবান্ন। সেই চিঠিতে সাফ বলা হয়েছে, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে বিজেপির রথযাত্রা বাতিল করা হল। তাছাড়া আসন্ন উৎসবের মরশুম এবং একাধিক মেলায় নিরাপত্তার প্রয়োজনে বহু পুলিশের প্রয়োজনকে মাথায় রেখেই বিজেপির কর্মসূচিতে এতো পুলিশ দেওয়া সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। রাজ্যসরকারের এই সিদ্ধান্তে ব্যাপক অসন্তুষ্ট মুরলীধর লেনের কর্তারা। রাজনৈতিক স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েই স্বতপ্রণোদিতভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন, এমনটাই অভিযোগে জানালেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আসলে বিজেপিকে লোকসভা ভোটের আগে কোনঠাসা করাই তৃণমূলের একমাত্র লক্ষ্য। রাজ্যসরকারের এধরণের আচরণ ফের প্রমাণ করে দিল রাজ্যে গণতন্ত্রের কোনো নামগন্ধ নেই। এমনটাই প্রতিক্রিয়ায় জানালেন তিনি। তবে রাজ্যসরকারের এই অপমানজনক সিদ্ধান্তের পর চুপ করে বসে থাকতে নারাজ বিজেপির। এর পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে ভাবনা চিন্তা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর,নবান্নের চিঠির একটি কপি পাঠানো হয়েছে জাতীয় বিজেপি সভাপতির অমিত শাহের দপ্তরে। কেন্দ্রের সম্মতি মিললেই ‘গনতন্ত্র বাঁচাও’ যাত্রার অনুমতি সুনিশ্চিত করতে এবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ঘুরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে রাজ্য বিজেপি। তবে রথযাত্রা সংক্রান্ত মামলা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে বলেই জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, নবান্ন কর্তৃক পাঠানো চিঠিতে আরো বলা হয়েছে,রথযাত্রা কর্মসূচিতে গোটা রাজ্য জুড়ে অন্তত ৩৪ দিন ধরে মোট ১৫৮ টি মাঝারি এবং বড় সভা করবে বিজেপি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সমস্ত জেলার জেলাশাসক,পুলিশ সুপার এবং গোয়েন্দা বিভাগের কাছে রিপোর্ট তলব করে নবান্ন। সেই রিপোর্টেই সাফ উল্লেখ করা হয়েছে,বিজেপির এই রাজনৈতিক কর্মসূচীকে সামনে রেখে বিভেদের রাজনীতি করতে এই কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারে আরএসএস, বজরং দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। সে কারণেই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতির এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই যাত্রায় বড়সড় কনভয়ের বহরে জাতীয় সড়ক সহ অন্যান্য রাস্তায় এক মাস ধরে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। বিজেপির রথযাত্রা বাতিল করার সূত্র ধরে এই গনতন্ত্র বাঁচাও অভিযানকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শতাধিক সভা করার যে পরিকল্পনা করেছিল গেরুয়াশিবির সেটা আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। বিজেপি প্রস্তাবিত এই সভাগুলোও সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রয়োজনে নাকি সাম্প্রদায়িক বিভেদ ছড়াতে,তা স্পষ্ট নয় নবান্নের কাছে। তাই সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে তবেই এই অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে প্রশাসন। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই আলাদ করে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি চাইতে হবে,এমনটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে নবান্ন। এই চিঠি বিজেপির রাজ্য দপ্তরের পৌছানোর পরই দফায় দফায় নিজেদের মতো আলোচনায় বসেছেন পদ্মশিবির কর্তারা। ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে দলের আইনি শাখার সঙ্গেও প্রাথমিক আলোচনা হয় এদিন। এবার কেন্দ্র থেকে সবুজ সংকেত মিললেই ইস্যুটি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে বিজেপি। গোটা বিষয়টি নিয়ে তীব্র চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্যরাজনৈতিক মহলে। রথযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূল বনাম বিজেপির লড়াই বেশ কিছু দিন অব্যাহত থাকবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। আপনার মতামত জানান -