এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > শাসকদলের ব্রিগেডে রাজ্যের সমস্ত যুবক-যুবতীর উপস্থিতির কড়া নির্দেশিকা, ‘স্বৈরাচারী’ আখ্যা বিরোধীদের

শাসকদলের ব্রিগেডে রাজ্যের সমস্ত যুবক-যুবতীর উপস্থিতির কড়া নির্দেশিকা, ‘স্বৈরাচারী’ আখ্যা বিরোধীদের

এবার ১৯’এর ব্রিগেড অভিযান নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পান্ডে। এন্টালি এলাকার এক সভায় যোগ দিতে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে করে ফেললেন এক বেফাঁস মন্তব্য। মন্ত্রীর বক্তব্য,“পাড়ার কোনও যুবক-যুবতিকে যদি দেখেন ব্রিগেডের দিন ঘরে বসে আছে, টুক করে আমাদের জানিয়ে দিন। আমরা বলব, তুমি CPI(M)-এর ক্যাডার।” একথা বলার পরেই নিজেকে সামলে নিয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে বলেন, রাজ্যের সমস্ত যুবক-যুবতীদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমাবেশ সফল করতে ব্রিগেডে অবশ্যই যাওয়া উচিৎ।

সাধন বাবুর বিতর্কিত মন্তব্য করার ২৪ ঘন্টা পেরোতে না পেরোতেই পাল্টা জবাব চলে এল বামফ্রন্টের তরফ থেকে। রাজ্যের মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে কটাক্ষের ভঙ্গিতে বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য জানালেন, সাধন বাবুর কত বয়স হয়েছে জানা নেই। তবে ওঁনার মন্তব্য শুনে মনে হচ্ছে ভীমরতি হয়েছে। তিনি যে কথাটি বলেছেন তাঁর সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগাযোগই নেই। আসলে বর্তমান রাজ্যসরকার যে কতটা স্বৈরচারী,মন্তব্যে তার প্রমাণ দিয়ে দিলেন সাধন পান্ডে।

প্রসঙ্গত,চলতি মাসের ১৯ তারিখ বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রস্তাবিত সর্বভারতীয় ব্রিগেড সমাবেশ। হাতে গোনা আর কয়েকদিনই বাকি। তাই ব্রিগেডের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে এখন সাজো সাজো রব জোড়াফুল শিবিরে। জেলায় জেলায় সভা করে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়ে এসেছেন ব্রিগেডে রেকর্ড পরিমান লোক জমায়েতের।

দলনেত্রীর সেই নির্দেশ মেনেই জেলা এবং ব্লক স্তরে ব্রিগেডের প্রচার কর্মসূচি শুরু করেছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। মিটিং-মিছিলে আওয়াজ তুলেছেন,”১৯ জানুয়ারি ব্রিগেড চল।” একইভাবে ব্রিগেডের প্রচারমূলক কর্মসূচি নিয়ে চূড়ান্ত সক্রিয় রয়েছেন রাজ্যস্তরের মন্ত্রীরাও। গতকাল ব্রিগেডের প্রস্তুতি সভাতেই এন্টালি গিয়েছিলেন সাধন বাবু।

সেখান থেকেই রাজ্যের যুব সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে ১৯’এর ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে যাওয়ার বার্তা দিলেন তিনি। যাওয়াটা কেন জরুরি সেটাও ব্যাখ্যা করলেন নিজস্ব মেজাজেই৷ বললেন,কেন্দ্র সরকার রাজ্যকে যেভাব বঞ্চিত করেছে তার যোগ্য জবাব দিতে ব্রিগেডের সমাবেশে একত্রিত হওয়ার প্রয়োজন আছে। রাজ্যে বিজেপি বিরোধী শক্তি যে কত মজবুত সেটা দেখিয়ে লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির মনোবল ভেঙে দিতে হবে।

আসন্ন লোকসভা ভোটে বাংলা থেকে ৪২ টি আসনই তৃণমূলের দখলে থাকবে,এমনটাই হুঁসিয়ারী দিলেন তিনি। পাশাপাশি তিনি জানালেন,”সবাইকে মানুষের প্রয়োজনে যেতে হবে ব্রিগেডে। ওই দিন ব্রিগেডে গিয়ে ভাববেন না আপনাকে মঞ্চের কাছে ডেকে নেব। যে যেখানে গিয়ে দাঁড়াতে পারবে, সে সেখানে দাঁড়াবে। শুনবে, চলে আসবে। আপনি গেছেন ব্রিগেডে এটি হল বড় কথা।”

সাধন বাবুর বক্তব্য, ১৯’ জানুয়ারি ব্রিগেডে কেবল র‌্যালি হবে না। বিজেপি বিরোধী জনস্রোত বইবে। এই স্রোত তিনি দেখেছিলেন ইন্দিরা-মুজিবরের সভায়। তার থেকে বড়সড় স্রোত বইবে ১৯’এর ব্রিগেড সমাবেশে। এমনটাই দাবী করলেন তিনি। পাশাপাশি আরো জানালেন,পাড়ার বয়স্ক মানুষেদের পক্ষে হয়তো ব্রিগেডে উপস্থিত হওয়া সম্ভব হবে না কিন্তু পাড়ার কোনো যুবক,যুবতী যদি ব্রিগেডে না গিয়ে বাড়ি বসে থাকে,তাহলে তাদেরকে কিছু বলবার দরকার নেই,শুধু তৃণমূলকে জানিয়ে দিলেনই হবে।

তৃণমূল বলে দেবে,ব্রিগেডে যোগদান না করা মানুষগুলো আসলে CPIM-এর ক্যাডার। সেইজন্যেই তাঁরা ব্রিগেডে যায়নি। এরপর তিনি হুঁসিয়ারী দিয়েই একরকম বললেন,”তারা INTTUC করে কি না সেটা নয়। প্রতিটি ছেলেমেয়েকে যেতে হবে, যারা বাংলার উন্নতি চায়।”

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সাধন পান্ডের এধরণের বিতর্কিত মন্তব্যের পর সমালোচনার ঝড় উঠে যায় বিরোধীমহলে। মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকেনি বামেরাও। কাল বিলম্ব না করে সিপিআইএম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যও পাল্টা দিয়ে দেন মন্ত্রীকে। বলেন,সাধন পান্ডে যে ধরণের মন্তব্য করেছেন তা কোনো রাজনৈতিক নেতার বক্তব্য হতেই পারে না। চরম দলীয় দূর্বলতা এবং স্বৈরাচারীত্বের মিশেল তাঁর এই বক্তব্য। সাধন পান্ডের কত বয়স হয়েছে বাম বিধায়কের জানা নেই। তবে তাঁর এ ধরনের মন্তব্যে বোঝা যাচ্ছে মন্ত্রীকে ভীমরতিতে ধরেছে। আসলে সম্প্রতি বামেদের ৪৮ ঘন্টার হরতালে মানুষের সমর্থন দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছে তৃণমূল। ওঁদের মনোবল ভেঙে গিয়েছে। তাই এভাবে জোর করে ব্রিগেডে লোক জড়ো করার কথা বলছেন রাজ্যের মন্ত্রী।

এরপর তিনি শাসকদলের বিরুদ্ধে কটাক্ষের ভঙ্গিতে বললেন,”এই মুহূর্তে সবচেয়ে বিপদে থাকা দল হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। সুতরাং সবচেয়ে মরিয়া হয়ে খড়কুটো ধরে বেঁচে থাকার চেষ্টা তৃণমূল কংগ্রেস করবেই। মন্ত্রী যা বলেছেন তা এই দুর্বলতা এবং স্বৈরাচারীত্ব, স্বেচ্ছাচারিতার একটি চরম প্রকাশ।”

উল্লেখ্য,ক্ষয়িষ্ণু সংগঠন হলেও এ রাজ্যে বামেরা যে নিভে যায়নি এখনো তার প্রমাণ দিতেই তৃণমূলকে চাঁচাছোলায় ভাষায় পাল্টা দিয়ে দিলেন বাম বিধায়ক। তৃণমূল ইট মারলে,বামেরা যে এখনো পাটকেল দিতে জানে এটাও বুঝিয়ে দিলেন তন্ময় ভট্টাচার্য। আসলে লোকসভা ভোটের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে বাংলার মাটিতে নিজেদের রাজনৈতিক প্রভাব বজায় রাখতে এভাবে সক্রিয় হয়ে উঠছে বামফ্রন্ট,এমনটাই অভিমত অভিজ্ঞমহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!